বর্ধমানে মিছিল বিজেপি কর্মীদের। —নিজস্ব চিত্র।
বিজেপি-র মোটরবাইক মিছিল ঘিরে গোলমাল বাধল জেলার নানা প্রান্তে। অনুমতি না নিয়ে এই মিছিল করার অভিযোগে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের আটকায় পুলিশ। সে নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসা, ধস্তাধস্তি হয় বিজেপি কর্মীদের। বর্ধমান শহর লাগোয়া জাতীয় সড়কে মিছিলে ছিলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রাজ্যের নানা প্রান্তেই তাঁদের কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। মন্তেশ্বরে তাঁদের মিছিলে তৃণমূল হামলা চালিয়েছে বলে বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ। যদিও তৃণমূল তা মানতে চায়নি।
রবিবার সকালে সওয়া ১১টা নাগাদ দুর্গাপুর থেকে একটি গাড়িতে দিলীপবাবু বর্ধমানে পৌঁছন। দলীয় দফতরের কাছে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পরে রথতলার কঙ্কালেশ্বরী মন্দিরের উদ্দেশে মোটরবাইক মিছিল বেরোয়। মিছিলের শেষে গাড়িতে ছিলেন দিলীপবাবু। জাতীয় সড়কের উপরে তেজগঞ্জে ডিএসপি (সদর) সৌভিক পাত্রের নেতৃত্বে পুলিশ মোতায়েন ছিল। মোটরবাইকের চালক ও আরোহীদের মধ্যে অনেকের মাথায় হেলমেট ছিল না। মিছিলটি পুলিশ আটকে দেয়। এর পরেই পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কি ও ধস্তাধস্তি বেধে যায়। পুলিশকর্তারা বিজেপির নেতৃত্বকে জানান, এই মিছিলের জন্য কোনও আবেদন করা হয়নি। এ ভাবে জাতীয় সড়কের উপরে মিছিল করতে দেওয়া যাবে না।
এর পরেই দিলীপবাবু গাড়ি ঘুরিয়ে কলকাতার দিকে রওনা দেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘রাজ্যে গণতন্ত্র নেই।’’ বিজেপি কর্মীরাও ফিরে যান। দুপুরে মিরছোবায় জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিজেপি। পুলিশ সেখান থেকে ২১ জনকে গ্রেফতার করে। তাঁদের মুক্তি দেওয়ার দাবিতে বর্ধমান থানায় বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ দেখান বিজেপি নেতা-কর্মীরা। শেষে অবরোধকারীদের ছেড়ে দেওয়া হয়। বিজেপি-র সাংগঠনিক সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দী তাঁদের মালা পরিয়ে পুলিশ লাইন থেকে ঘোরদৌড়চটির জেলা দফতরে নিয়ে যান।
মন্তেশ্বরে তাদের মোটরবাইক মিছিলে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপি-র। দলের এলাকার নেতা রাজেশ রায় অভিযোগ করেন, এ দিন তাঁদের ৬০ জনের একটি মোটরবাইক মিছিল বেরোয়। মালডাঙার কাছে তৃণমূলের লোকজন তাঁদের আটকে বেধড়ক মারধর করে। তাতে এলাকায় দলের যুবমোর্চার সভাপতি বিল্বেশ্বর চট্টোপাধ্যায়-সহ কয়েকজন আহত হন। মন্তেশ্বরের বিজেপি কর্মীদের দাবি, শনিবার রাত থেকে মালডাঙা, কুসুমগ্রাম, মন্তেশ্বর, মাঝেরগ্রাম-সহ নানা জায়গায় শাসকদলের লোকজন হুমকি দেওয়া শুরু করেছিল। এ দিন কালনার বৈদ্যপুর থেকেও একটি মোটরবাইক মিছিল করে বিজেপি।
কাটোয়ায় দুপুর ১২টা নাগাদ আরএমসি মার্কেট থেকে এসটিকেকে রোড ধরে সিনেমা হল মোড় পর্যন্ত গোটা পঞ্চাশ মোটরবাইকের মিছিল বেরোয়। বিজেপি-র পতাকা লাগানো সেই মোটরবাইকগুলি সিনেমা হলের মোড়ে পুলিশ আটকায়। ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সৈকত ঘোষ। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলায় শহরে বাইক মিছিল ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানায় পুলিশ। বিজেপি কর্মীরা সেখানেই একটি সভা করেন। ছিলেন দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা কাটোয়ার নেতা অনিল দত্ত।
মন্তেশ্বরে বিজেপি-র মিছিলে হামলার অভিযোগ মানতে চায়নি তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের বক্তব্য, ‘‘বেআইনি ভাবে মিছিল করায় নানা জায়গায় পুলিশ আটকেছে। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’