রাস্তায় পুলিশ সুপার। নিজস্ব চিত্র
শীতের ভোরে কুয়াশার মধ্যেই ছুটছে সাইকেল। চলন্ত সাইকেল থেকেই চালকলের ধোঁয়া বা লেন ভাঙা গাড়ি, নানা ছবি মোবাইলের ক্যামেরায় তুলে নিচ্ছেন বছর ছত্রিশের চালক। মাঝ পথে খেতের পাশে বা চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে লোকজনকে পথ নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনও করছেন তিনি।
পূর্ব বর্ধমান জেলায় এমন ছবি ইদানীং মাঝে-মাঝেই দেখা যাচ্ছে। ওই সাইকেল আরোহী আর কেউ নন, জেলার পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল। সাতসকালে আচমকা এক জন নিরাপত্তারক্ষীকে নিয়ে সাইকেলে সটান তিনি হাজির হয়ে যাচ্ছেন কোনও থানায়। কবে তিনি যাবেন, তা জানা থাকছে না সংশ্লিষ্ট থানার। তাই জেলার ওসি বা আইসি-রা তটস্থ থাকছেন। রবিবার বর্ধমানের নবাবহাট থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে পুলিশ সুপার পৌঁছে গেলেন গুসকরার কাছে ওরগ্রামে।
জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ভাতার, শক্তিগড়, গলসি, রায়না-সহ কয়েকটি থানায় হাজির হয়েছেন পুলিশ সুপার। গলসিতে জাতীয় সড়কে লেন ভেঙে ঢুকে পড়া ট্রাকের ছবি তোলেন মোবাইলে। তার পরে থানায় গিয়ে সংশ্লিষ্ট সব ট্রাকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। চালকলের কালো ধোঁয়ার ছবিও তুলেছেন। সেই সমেত পরিবেশ দফতরে চিঠি পাঠাবেন বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, “গাড়িতে যাওয়ার সময়ে মানুষের সমস্যার কথা জানা যায় না। সাইকেলে থানায়-থানায় যাওয়ার পথে অনেকের সঙ্গে কথা হচ্ছে। তাঁদের পথ নিরাপত্তা ও দূষণ নিয়ে বোঝানোও যাচ্ছে।” তিনি জানান, জেলার প্রতিটি স্তরের পুলিশকর্মী ও আধিকারিকদের এলাকায় সাইকেলে বেরিয়ে জনসংযোগ বাড়াতে বলা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন থানায় এলাকার দূরত্ব অনুযায়ী ৫-১০টি করে সাইকেলও দিয়েছে জেলা পুলিশ।
জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি তথা ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল বলেন, “পুলিশ সুপারের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। পুলিশের নিচুতলা পর্যন্ত তাতে সামিল হলে এলাকায় অনেক ছোটখাটো সমস্যা মিটে যাবে। মানুষও সচেতন হবেন।” বিজেপি-র সাংগঠনিক সভাপতি (বর্ধমান) সন্দীপ নন্দী বলেন, “এই উদ্যোগে এলাকায় অপরাধ কমলে তো ভালই হবে।”