কর্তাকে পেয়ে ভিটা উচ্চবিদ্যালয়ের কন্যাশ্রী ক্লাবের এক সদস্য জানায়, নবম শ্রেণির এক বান্ধবীর বিয়ে ঠিক হয়েছে। কিন্তু সে পড়তে চায়। কন্যাশ্রী ক্লাবের ওই সদস্যদের নিয়ে বর্ধমান ১ ব্লকের বিডিও দেবদুলাল বিশ্বাস ওই নাবালিকার বাড়িতে গেলে পরিবার বিয়ের কথা অস্বীকার করে। বিডিওর কথায়, “কন্যাশ্রী ক্লাবের এক জন নিমন্ত্রণের কার্ড বের প্রমাণ করে দেয় ওই পড়ুয়ার বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল।”
মঙ্গলকোটের পালিগ্রামের দুই কন্যাশ্রীও এক দিনে চারটি বিয়ে রোখে। নিজের এলাকা ছাড়া, কয়েক কিলোমিটার দূরের মাঝিখাঁড়া গ্রামেও বিয়ে আটকায় তারা। মঙ্গলকোটের যুগ্ম বিডিও নির্মল বিশ্বাস বলেন, “ওই মেয়ে দুটি অভিভাবকদের বোঝায়। আমাদের কার্যত কিছুই করতে হয়নি।”
এমনই কন্যাশ্রী ক্লাবদের সংবর্ধনা দেবে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। ২৫ জুলাই প্রশাসনের তরফে প্রতিটি কন্যাশ্রী ক্লাবের দলনেত্রীর হাতে ‘ব্যাচ’ তুলে দেওয়া হবে। ওই ‘ব্যাচ’ পরে তারা স্কুলে যাবে। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, “১৮ বছরের আগে বিয়ে নয়—এই বার্তা পৌঁছে দিতে চাইছি। নাবালিকা বিয়ে আটকাতে জেলা প্রশাসন কন্যাশ্রীদের মোবাইল নম্বর দেবে। ওই নম্বরে তারা ফোন করে বা এসএমএস করে খবর দিতে পারবে।” সর্বশিক্ষা প্রকল্পের জেলা আধিকারিক শারদ্বতী চৌধুরী বলেন, “বিডিওদের কাছে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়েছে। আমরা কন্যাশ্রী ক্লাবগুলিকে উৎসাহিত করতে চাইছি। যাতে অন্য কন্যাশ্রীরাও প্রশাসনকে সাহায্য করে।”
কর্তারা জানান, কখনও গলসি, কখনও কালনায় একের পর এক স্কুলে নাবালিকাদের বিয়ে আটকে দিচ্ছে এই মেয়েরা। বেশির ভাগ সময়ে তাদের কাছ থেকে খবর পাচ্ছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা। তাঁরাই পুলিশ বা বিডিওকে খবর দিচ্ছেন। আবার অনেক সময় কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যরা সোজা প্রশাসনের দরজায় পৌঁছে যাচ্ছে। কৃষ্ণপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সৌমেন কোনার, রসুলপুর বৈদ্যডাঙা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুতপা সিংহ রায় বলেন, “কন্যাশ্রী ক্লাব হয়ে মেয়েদের সাহস বেড়েছে। সমাজের বেড়া টপকে বান্ধবীদের পাশে দাঁড়াচ্ছে তারা।’’