খাসজমি ‘বিক্রি’, ক্ষোভ

খাসজমি ‘প্লট’ করে বিক্রি করে দিচ্ছেন শাসকদলের নেতারা। এই অভিযোগে মঙ্গলবার সকালে দুর্গাপুরের তৃণমূল পরিচালিত জেমুয়া পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দাদের একাংশ। পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ স্বাধীন ঘোষ পঞ্চায়েতে এলে তাঁর গাড়িও ভাঙচুর করার অভিযোগ ওঠে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:০৪
Share:

ভাঙচুর গাড়িতেও। নিজস্ব চিত্র

খাসজমি ‘প্লট’ করে বিক্রি করে দিচ্ছেন শাসকদলের নেতারা। এই অভিযোগে মঙ্গলবার সকালে দুর্গাপুরের তৃণমূল পরিচালিত জেমুয়া পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দাদের একাংশ। পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ স্বাধীন ঘোষ পঞ্চায়েতে এলে তাঁর গাড়িও ভাঙচুর করার অভিযোগ ওঠে। এমনকি, কয়েক জন গাড়ি উল্টেও দিতে যান বলে অভিযোগ। যদিও বাকিরা বাধা দেওয়ায় তা করা হয়নি।

Advertisement

বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। পুলিশের সামনেই গাড়ি ভাঙা হয় বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের ক্ষোভ থেকে স্বাধীনবাবুকে বাঁচিয়ে পঞ্চায়েতের ভিতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাইরে তখন তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।

কিন্তু কী নিয়ে গোলমাল?

Advertisement

পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে সেখানে একটি বড় জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়েছিল। বাসিন্দারা নানা প্রয়োজনে সেটি ব্যবহার করতেন। সম্প্রতি এক ব্যক্তি জমিতে বেড়া দেওয়ার তোড়জো়ড় করেন বলে অভিযোগ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, তৃণমূল নেতা স্বাধীনবাবু ও তাঁর কয়েক জন অনুগামী মিলে জমিটি ওই ব্যক্তিকে প্লট করে বিক্রি করে দিয়েছেন। তাঁদের আরও অভিযোগ, এ ভাবে এলাকার বহু খাসজমি নানা সময়ে মোটা টাকার বিনিময়ে ‘প্রোমোটার’দের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

জেমুয়ার বাসিন্দা ফিরোজ রুইদাস বলেন, ‘‘আমাদের দাদুর আমল থেকে জমিটি পড়ে আছে। অথচ সম্প্রতি এক ব্যক্তিকে তৃণমূল নেতা স্বাধীন ঘোষ, আমীর হোসেন ও কুতুব উদ্দিন ওই জমি ব্যবহারের অনুমতির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এই অন্যায়ের প্রতিকার চাই আমরা।’’ শ্যামল নায়েক নামে অন্য এক বাসিন্দার দাবি, ‘‘মোটা টাকার বিনিময়ে এলাকার খাসজমি দলের নেতারা বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফুলঝোড় থেকে জেমুয়া রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। সারাইয়ের কোনও উদ্যোগ নেই। অথচ নেতারা পকেট ভরছেন খাসজমি বিক্রি করে দিয়ে।’’

খাসজমি ‘প্লট’ করে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ অবশ্য স্বাধীনবাবু অস্বীকার করেছেন। তবে তাঁর দাবি, ১৯৮৫ সাল নাগাদ ওই ব্যক্তি প্রায় ছ’বিঘা জমির পাট্টা পেয়েছিলেন। কিন্তু বাম আমলে গ্রামবাসীর বাধায় জমির দখল নিতে পারেননি। সম্প্রতি তিনি পঞ্চায়েতের কাছে সাহায্য চেয়ে আবেদন জানান। স্বাধীনবাবু বলেন, ‘‘প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে পঞ্চায়েত অনুমতি দেয়। এর পরে ওই ব্যক্তি জমি ঘেরার জন্য গেলে বাসিন্দারা আপত্তি জানান। তা নিয়েই গোলমাল।’’ যদিও শেষমেশ পুলিশের মধ্যস্থতায় গ্রামবাসীর কাছে ক্ষমা চান স্বাধীনবাবু। তার পরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘দলীয় ভাবে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনও রকম দুর্নীতি মেনে নেওয়া হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন