বিসি রোডে চেনা যানজট। ফাইল চিত্র।
ঠিক এক বছর আগে রাস্তা ঘাটে ধোঁয়া ওড়ানো গাড়ির বদলে দেখা মিলেছিল সাইকেলের। জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপার থেকে অন্য সরকারি কর্মীরাও গাড়ি ছেড়ে সাইকেলে কিংবা পায়ে হেঁটে অফিসে গিয়েছিলেন। সাধারণ মানুষও সাড়া দিয়েছিলেন। কিন্তু বছর ঘুরতেই ‘কার ফ্রি ডে’ কেটে গেল ধোঁয়া-ধুলো-যানজটে।
পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার শহরের ভিতর দিয়ে যাওয়া জিটি রোডে অন্য দিনের তুলনায় যানজট বেশি হয়েছে। কাটোয়া রোডের উপর রেলের যে নতুন ওভারব্রিজ তৈরি হচ্ছে, জিটি রোডের উপর তারই সংযোগকারী রাস্তা তৈরির কাজ এ দিন থেকে শুরু হয়েছে। ফলে, কাটোয়া রোডের পাশাপাশি স্টেশন, জিটি রোডে বহু গাড়ি এসে থমকে গিয়েছে। গাড়ির লাইন গিয়েছে দু’কিলোমিটার দূর পর্যন্ত। কাটোয়ার সন্তোষ দাস কিংবা বহরমপুরের শেখ শাহজাহানদের কথায়, ‘‘দেওয়ানদিঘি থেকে কাটোয়া রোড হয়ে বর্ধমান শহর ঢুকতেই দু’ঘন্টা কেটে গেল।’’
অথচ গত ১৫ ডিসেম্বর এই দিনে জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন ‘কার ফ্রি ডে’ সফল হওয়ার পরে ঘোষণা করেছিলেন, ব্লকস্তরেও এক দিন গাড়িবিহীন ভাবে পালন করা হবে। একদিন অন্তত দূষণমুক্ত থাকতে পারবেন আমজনতা। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আসানসোল শিল্পাঞ্চলে কয়েক দিন ‘কার ফ্রি’ হলেও স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে আর মাথা গলায়নি। গত এক বছরে কোনও সরকারি আধিকারিক কিংবা জনপ্রতিনিধিদের গাড়িতে ছাড়া দেখা মেলেনি। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সে বার সামিল হয়েছিল আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের পুলিশও। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলাশাসক এসডিও-এসডিপিওদের একসঙ্গে বসে কোন কোন রাস্তায় গাড়ি-বিহীন দিন করা যায় তার তালিকা চেয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, শহর ও গ্রামের ছোট রাস্তাগুলিকে মাসে একদিন গাড়ি-বিহীন রাস্তা বলে ঘোষণা করা হবে বলেও জেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু কোনওটাই গড়ায়নি।
বর্ধমানের জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘‘ঝড়ের বেগে আমরা শুরু করেছিলাম। ঝড় থেমে যাওয়ার পর আর এগোতে পারিনি। এত ভাল উদ্যোগ নতুন করে শুরু করতে হবে।’’ কার ফ্রি-ডের উদ্যোক্তা জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “আমরা সচেতন করেছিলাম। সেই সচেতনতা নিচুস্তরে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিলাম। মহকুমা ও ব্লকস্তর এ ধরণের উদ্যোগ করলে আমরা সবসময় পাশে আছি।” পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল জানিয়েছেন, ফের যাতে ‘কার-ফ্রি ডে’ পালন করা যায় তার জন্য উদ্যোগী হবেন।