অঙ্কের ক্লাসটা ভারী পছন্দের কাটোয়ার এক ছাত্রের। হঠাৎ মিলল অভিনব এক সুযোগ। পড়শি স্কুলে গিয়ে ক্লাস করার। আর তাতেই কেল্লা ফতে। ওই ছাত্রের দাবি, সেখান থেকে অঙ্ক সমাধানের বেশ কিছু অভিনব পদ্ধতি শেখা হয়ে গিয়েছে! সঙ্গে চলল পড়শি স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে মত বিনিময়। সম্প্রতি জেলার মোট ৬২টি স্কুলে পড়ুয়াদের মধ্যে বোঝাপড়া বাড়াতে এ ধরনের প্রকল্প শুরু করেছে সর্বশিক্ষা মিশন।
সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত কর্তারা জানান, মার্চ মাস থেকে পূর্ব বর্ধমান জেলার ৩১টি ব্লকের প্রতিটি থেকে দু’টি করে স্কুল বেছে নিয়ে মোট ৬২টি স্কুলে শুরু হয়ছে ‘ট্যুইনিং স্কুল’ প্রকল্প। প্রতিটি স্কুলের সপ্তম ও অষ্ঠম শ্রেণির ৩০ জন করে পড়ুয়া এবং দু’জন করে শিক্ষক যোগ দিচ্ছেন প্রকল্পে।
প্রকল্পটি কী ভাবে কাজ করছে? প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহখানেক ধরে একটি স্কুলের ছাত্ররা অন্য স্কুলে গিয়ে ক্লাস করবে। গল্পের ছলে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনাও চলবে পড়ুয়াদের মধ্যে। পড়ুয়ারা নিজেরাই খুঁজে বের করবে, বন্ধুর মধ্যে কী বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষামূলক ভ্রমণ, নাটকের মধ্য দিয়ে ইংরেজিতে কথা বলায় দক্ষতা বাড়ানো-সহ নানা বিষয়ে লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে এই প্রকল্পে। তা ছাড়া ডিজিটাল ক্লাসরুম তৈরিতেও জোর দেওয়া হয়েছে।
গত সোমবার এই প্রকল্পই শুরু হয়েছে কটোয়া ২ ব্লকের ঘোড়ানাশ ও আক্রা হাইস্কুলে। বৃহস্পতিবার দু’টি স্কুলের ৬০ জন পড়ুয়াকে ১০৮ শিবমন্দির ও বর্ধমানের তারামণ্ডল ঘুরিয়ে আনেন চার শিক্ষক। কিশোর মালাকার, সমীর সাহাদের মতো শিক্ষকেরা বলেন, ‘‘শুক্রবার মায়াপুর যাওয়া হবে। এই ধরনের ভ্রমণে আঞ্চলিক সংস্কৃতির নানা দিক সম্পর্কে জানতে পারছে পড়ুয়ারা।’’ প্রকল্পে যোগ দিয়ে খুশি লোকনাথ দাস, সোহিনী ঘোষ, রুবি পালদের মতো পড়ুয়ারা। তারা বলে, ‘‘ ‘পড়া পড়া খেলা’য় ক্লাসটাও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে।’’ স্কুল পরিদর্শকেরা জানান, পড়াশোনার প্রতি পড়ুয়াদের যে কোনও ভীতি কাটাতেই এই উদ্যোগ। সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক শারদ্যুতী চৌধুরী বলেন, ‘‘সপ্তাহ শেষে দু’টি স্কুল মিলিত উপস্থাপনা দেবে। মে মাসে একটি চূড়ান্ত অনুষ্ঠান হবে।’’