কোথাও একা, কোথাও দুই শিক্ষকে চলছে স্কুল, ক্ষোভ

কোথাও ছাত্রের তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা কম, কোনও বিদ্যালয় আবার চলছে বিনা শিক্ষকেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:১২
Share:

কোথাও ছাত্রের তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা কম, কোনও বিদ্যালয় আবার চলছে বিনা শিক্ষকেই। তার উপর দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকদের দিয়ে স্কুল চালানো হলেও স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ না হোয়ায় পঠনপাঠন বিঘ্নিত হচ্ছে বলে শিক্ষকদের একাংশের দাবি। বৃহস্পতিবার এই সম সমস্যা নিয়ে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় কাউন্সিলের দ্বারস্থ হন কাটোয়া পশ্চিম চক্রের ৭৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০৩ জন শিক্ষক।

Advertisement

ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশনের নির্দেশিকা অনুসারে, এক থেকে ৬০ পড়ুয়া বিশিষ্ট প্রাথমিক স্কুলে ২ জন শিক্ষক, ৬১ থেকে ৯০ পড়ুয়া হলে ৩ জন শিক্ষক, ৯১ থেকে ১২০ জন পড়ুয়া পিছু ৪ শিক্ষক, ১২১ থেকে ১৫০ পড়ুয়ার জন্য ৫ শিক্ষক থাকার কথা। তারও বেশি ছাত্রছাত্রী সংখ্যা হলে সাত জন শিক্ষকের থাকার কথা। অথচ আড়াই বছর ধরে অধিকাংশ স্কুলই চলছে ‘স্টপ গ্যাপে’। শিক্ষকদের দাবি, অধিকাংশ সময়েই যে বিদ্যালয়ে শিক্ষকের সংখ্যা বেশি সেখান থেকে এক বা একাধিক শিক্ষককে কম শিক্ষকবিশিষ্ট স্কুলে পাঠানো হয়। আইন মোতাবেক ওই শিক্ষক যে স্কুলে অস্থায়ী ভাবে যাচ্ছেন, সেখানে ছ’মাসের মধ্যে তাঁর স্থায়ী হিসাবে নিয়োগ হওয়ার কথা। অথচ আড়াই বছর পার করেও কাটোয়া পশ্চিম চক্রের ২১ জন শিক্ষক অস্থায়ী রয়ে গিয়েছেন বলেও শিক্ষকদের দাবি। ফলে মিড-ডে মিলের রশিদ হোক বা রোজকার হাজিরার খাতায় সই, নতুন স্কুলে কাজ করেও কাজের কোনও প্রমাণ থাকছে না। শিক্ষকদের দাবি, খাতায়কলমে তাঁরা পুরনো স্কুলের শিক্ষক হিসেবেই থাকছেন।

চুরপুনি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক বর্তমানে গোয়াই স্কুলে শিক্ষকতা করা কৌশিক দে, ডাঙাপাড়া প্রাথমিকের শিক্ষক হলেও বর্তমানে গৌরাঙ্গপাড়া প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করা প্রসেনজিৎ মণ্ডলদের দাবি, ‘‘ফি দিন পুরোনো স্কুলের হাজিরা খাতাই সই করে আসতে হয়। নতুন স্কুলে পড়ানোর কোনও নথিই নেই।’’ তাঁদের আশঙ্কা, নথি না থাকায় কোনও সমস্যাতেও পড়তে পারেন তাঁরা। শিক্ষক অনিতা দেবনাথ, আলতাবানো বিবি, হীরক বিশ্বাসদেরও দাবি, ‘‘আমাদের মধ্যে কয়েকজন বিদ্যালয়ের একমাত্র শিক্ষক। একার পক্ষে স্কুল চালানো মুশকিল।’’ তাঁদের দাবি, তাঁরা কোনও কারণে ছুটি নিলে স্কুলও বন্ধ হয়ে যায়। যেমন, জানকীলাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জয়দেব মণ্ডল অসুস্থতার জন্য মাসখানেক ছুটি নেন। সেই সময় স্কুলের পঠনপাঠন প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বলেও তাঁর দাবি। এছাড়াও এই চক্রের ৪৯টি স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদও ফাঁকা।

Advertisement

কাটোয়া পশ্চিম চক্রের স্কুল পরিদর্শক জানবাজ শেখের দাবি, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এনে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন