বেআইনি নির্মাণ নিয়ে চাপান-উতোর, কালনায় ভরদুপুরে গুলি

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৮ ০৩:১৪
Share:

জখম নির্মাণকর্মী। —নিজস্ব চিত্র

বেআইনি নির্মাণকে কেন্দ্র করে দিনদুপুরে গুলি চলল কালনায়। আহত হলেন এক নির্মাণ শ্রমিক। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।

Advertisement

পুরাতত্ত্ব বিভাগের অধীনে থাকা প্রাচীন স্থাপত্যের কাছে নির্মাণ বেআইনি। অভিযোগ, তা না মেনে শহরের এক তৃণমূল নেতা গোপাল তিওয়ারি কালনার ১০৮ শিবমন্দির এবং রন্তেশ্বর মন্দিরের কাছে একটি নির্মাণ শুরু করেছিলেন। দিন সাতেক সেখানে কাজ হয়েছে। শহরের একটি পাক্ষিক পত্রিকার সম্পাদক মনোরঞ্জন সাহার দাবি, তিনি বিষয়টির প্রতিবাদ করলে দিন তিনেক আগে তাঁর সঙ্গে বচসা হয় তৃণমূল নেতার। মনোরঞ্জনবাবু পুলিশে অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার দুপুরে শিবমন্দির চত্বরে ফের তাঁকে হুমকি দেন গোপালবাবু।

এর খানিক পরেই সাত-আট জনের একটি দল মোটরবাইকে ওই এলাকায় পৌঁছয়। অভিযোগ, নির্মাণ নিয়ে দু’পক্ষের বচসা হয়। তার পরেই দু’রাউন্ড গুলি চলার শব্দ শোনা যায় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান। নির্মাণ শ্রমিক আজিজ মণ্ডলের ডান হাতের কব্জিতে একটি গুলি লাগে। তাঁকে কালনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আজিজ বলেন, ‘‘দুপুরে কাজ চলছিল। সেই সময়েই বচসা শুরু হয়। আচমকা একটি গুলি এসে আমার হাতে লাগে।’’

Advertisement

ঘটনাস্থলে তদন্তে পুলিশ। মঙ্গলবার কালনায়। নিজস্ব চিত্র

দিনদুপুরে শহরের জনবহুল এলাকায় গুলি চলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুলিশকর্তারা। এক জনকে আটকও করা হয়। শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা গোপালবাবু বলেন, ‘‘দুপুরে নির্মাণের কাজ চলছিল। আমি সেখানেই ছিলাম। আচমকা কয়েকজন এসে বাধা দেয়। ওরা দাবি করে, এখনই কাজ বন্ধ করতে হবে। কারণ জানতে চাইতেই এক যুবক গুলি চালায়।’’ মন্দির চত্বরে নির্মাণ বেআইনি হওয়া সত্ত্বেও কেন কাজ করানো হচ্ছে, সে প্রশ্নে তাঁর জবাব, ‘‘কাঠাখানেক জায়গার দলিল রয়েছে আমার। ওখানে নির্মাণকাজে প্রশাসন কোনও বাধা দেয়নি। তাই কাজ চালিয়ে যাই।’’

শহরের ব্যবসায়ী সুব্রত পালের ঘনিষ্ঠ এক জন এ দিন গুলি চালায় বলে অভিযোগ করেছেন গোপালবাবু। সুব্রতবাবুর বক্তব্য, ‘‘ঐতিহাসিক নিদর্শনের পাশে বেআইনি নির্মাণ চলছিল। প্রতিবাদ করায় এক সাংবাদিককে হেনস্থা করা হয়। কেন এমন করা হচ্ছে জানতে এক জনকে পাঠিয়েছিলাম।’’ তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘যারা নির্মাণকাজ চালাচ্ছিল তারাই আমার পাঠানো লোককে হেনস্থা করে ও গুলি চালায়। পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’

কালনার পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘নির্মাণটি বেআইনি। পুরসভা কোনও নকশা অনুমোদন করেনি। কিন্তু ওখানে যে নির্মাণ চলছে, সে ব্যাপারে কেউ কোনও অভিযোগ করেনি।’’ তিনি জানান, পুরসভা এ দিন বিষয়টি জানার পরেই নির্মাণ ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন পুরসভা-প্রশাসন আগে বিষয়টি জানতে পারল না, সে প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন