TMC

সভায় মহিলাদের ‘বিনোদনে’ নাচ-গান, বিতর্ক

বিজেপি নেতাদের দাবি, ভয় দেখিয়েও ভিড় হচ্ছে না। তাই চটুল গান গেয়ে লোক টানার চেষ্টা করছে তৃণমূল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মঙ্গলকোট শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:৪৮
Share:

মঙ্গলকোটে অনুব্রতর সভার পাশেই চলছে গান। নিজস্ব চিত্র।

এ বার থেকে প্রতি জনসভাতেই দলের মহিলা কর্মীদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা রাখবেন, দাবি করলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। শুক্রবার মঙ্গলকোটের মাথরুনে জনসভা করেন তিনি। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘এ বার থেকে প্রতি জনসভার পাশেই মঞ্চ বেঁধে গান-বাজনা হবে। ‘এই মাটিতেই খেলা হবে’ গান গাইবেন শিল্পীরা। মহিলা কর্মীদের এনজয়মেন্টের জন্যই এই ব্যবস্থা করা হবে।’’ যদিও এই মন্তব্য ‘পুরুষতান্ত্রিক চিন্তাভাবনার প্রতিফলন’ বলে মনে করছেন সিপিএমের মহিলা সংগঠন নেত্রীরা। বিজেপি নেতাদেরও দাবি, ভয় দেখিয়েও ভিড় হচ্ছে না। তাই চটুল গান গেয়ে লোক টানার চেষ্টা করছে তৃণমূল।

Advertisement

এ দিন বিকেল ৩টেয় কাটোয়া-নতুনহাট রোডে মাথরুন নবীনচন্দ্র বিদ্যায়তনের মাঠে ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী জনসভার আয়োজন করেন। ছিলেন বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল। মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সভার মূল মঞ্চের পাশে বড়সড় গানের মঞ্চও করা হয়েছিল। সেখানে পুরুষ ও মহিলা শিল্পীরা গানবাজনা করেন। কর্মীদের অনেককে নাচতেও দেখা যায়। বিকেল সওয়া ৪টে নাগাদ আসেন দলের কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট, আউশগ্রামের পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডল। বক্তব্যের শুরুতে বিজেপিকে কটাক্ষ করেন তিনি। বাংলার প্রকৃত উন্নয়নের ধারা বজার রাখার জন্য ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করার ডাক দেন। এর পরেই বক্তব্য থামিয়ে এক শিল্পীর নাম ধরে তিনি বলেন, “এই মাটিতেই খেলা হবে গানটা একবার গেয়ে দিস।’’ সঙ্গে সঙ্গেই অর্কেস্ট্রা বাজিয়ে গান ধরেন হাজির থাকা শিল্পীরা। মহিলা কর্মীদের একটা বড় অংশ নাচতেও শুরু করে দেন।

অনুব্রতবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘মহিলারা সারা দিন বাড়িতে কাজ-কর্ম নিয়ে থাকেন। শুধু আমরা মিটিং করব, তাঁরা শুনবেন, এটা তো নয়। একটা এনজয়মেন্ট চাই। তার জন্য পাশে একটা মঞ্চ করে গান-বাজনা হবে। আমি তো ওদের ঘরের মানুষ, পরিবারের লোক। কোনও নেতা নই। মহিলারা বাড়ি থেকে বার হতে পারেন না। সব সভাতেই তাঁদের জন্য এই ব্যবস্থা থাকবে।’’

Advertisement

মহিলা সমিতির জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জয়শ্রী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দলনেত্রী যেখানে মহিলা, সেখানে রাজনৈতিক সভায় আসা মহিলাদের বিনোদনের টোপ দেওয়া মানে তাঁদের রাজনৈতিক বোধ নিয়ে প্রশ্ন করা। গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোয় পুরুষ ও মহিলা দু’জনেই যেখানে ভোট দিয়ে সরকার গড়েন, সেখানে এ ধরনের মন্তব্য নারীদের পক্ষে সম্মানজনক নয়।’’ পূর্ব বর্ধমান জেলা বিজেপি সহ সভাপতি (মঙ্গলকোট) রানাপ্রতাপ গোস্বামী বলেন, “ভয় দেখিয়েও আর তৃণমূলের সভায় ভিড় হচ্ছে না। ওঁদের মিথ্যা ভাষণ কর্মীরা শুনতে চাইছে না। তাই লোক টানতে ভাড়া করা শিল্পী এনে চুটুল গান করাতে হচ্ছে।’’

এ দিন রাজ্যসভার সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীর দল ছাড়ার প্রসঙ্গে অনুব্রত বলেন, ‘‘এতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না। যা বলার, রাজ্য নেতৃত্ব বলবেন।’’ বিজেপির রথযাত্রা নিয়ে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘সামনে ১৫টা বাইক আর বড়-বড় বাঁশ থাকে। রথের কোনও গুরুত্ব নেই।’’ এ দিন দুশো বিজেপি কর্মী তাঁদের দলে যোগ দেন বলেও তৃণমূলের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন