হাতির তাণ্ডবে ক্ষয়ক্ষতি দেখাচ্ছেন এক বাসিন্দা। নিজস্ব চিত্র।
দু’দিনে এতটুকু নড়ল না আউশগ্রামে ঢোকা হাতিটি।
সোমবার থেকে আউশগ্রামে ঘাঁটি গেড়েছে একটি হাতি। বন দফতর বহু চেষ্টা করেও তাকে ফেরাতে পারেনি। মঙ্গলবার রাতেও হাতিটি আউশগ্রামের জঙ্গলের মধ্যেই আশ্রয় নেয়। এ দিন বাঁকুড়া থেকে তিনটি কুনকি হাতি এনে হাতি খেদানোর চেষ্টা হয়। ফল না মেলায় কুনকি হাতিগুলিকে আউশগ্রামের ফরেস্ট অফিসের চত্বরে রেখে দেওয়া হয়েছে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা জঙ্গল হুলাপার্টির সদস্যরা ঘিরে রেখেছেন। এ দিন সকালে আউশগ্রামের গোপীনাথপুর, আলেফনগর, বহমানপুর জঙ্গলের মধ্যে হাতিটি থাকার খবর পাওয়া যায়। সোমবার রাতে হাতিটি শোকাডাঙার অর্জুনবাগান এলাকায় আদিবাসীদের কয়েক’টা বাড়ি, চালাঘর, মরাই, সাইকেল ভাঙচুর করে।
হাতির তাণ্ডবে বাড়ি ভেঙেছে শোকাডাঙার সুন্দরী মুর্মুর। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘ঘরে শুয়েছিলাম। পাড়াতে ঠাকুর বিসর্জন নিয়ে রাতের বেলায় অন্যরা ব্যস্ত ছিল। সে সময় হঠাৎ হাতি হানা দেয়। ভেঙে দেয় দেওয়াল। ঘরের ভিতর থেকে দেখলাম বাইরে হাতিটি দাঁড়িয়ে। কয়েক হাত মাত্র ব্যবধান।’’ সুন্দরী মুর্মুর মতো মহাদেব সোরেন, শম্ভুনাথ হেমব্রম বা লক্ষ্মী সোরেনদের বাড়ি ভাঙচুর করে হাতিটি। সে খবর চাউর হতে হাতি-আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে আউশগ্রামের জঙ্গলমহল এলাকায়। জেলা বনাধিকারিক এলাকায় থেকে অভিযানে নেতৃত্ব দেন।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর থেকে দলছুট হওয়ার পরে হাতিটি বিভ্রান্ত হয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। দফতরের এক কর্তা জানান, আজ, বুধবার কুনকি হাতির সাহায্যে হাতিটিকে ফেরানো না গেলে ঘুম পাড়ানো গুলি চালিয়ে বাগে আনা হতে পারে। একই অবস্থা হয়েছিল দুর্গাপুরেও। কুনকি হাতি, ঘুম পাড়ানিগুলির ব্যবস্থা, ঐরাবত গাড়ি— আয়োজন ছিল সব কিছুরই। কিন্তু তিন দিন টানা চেষ্টার পরেও হাতিকে দুর্গাপুর থেকে বের করতে পারেনি বন দফতর। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দুর্গাপুর শহরে ঢোকে হাতিটি। গোপালমাঠ হয়ে পৌঁছে যায় দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টে (ডিএসপি)।