প্রতীকী ছবি।
এলাকাবাসীর সচেতনতার অভাবেই বাড়িতে ঢুকতে বাধা পেয়েছেন কাটোয়ার মণ্ডলহাটের যুবক, মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তাদের অনেকে। রাজস্থান থেকে ফেরার পরে নিজের বাড়ি তো বটেই, স্থানীয় স্কুলে ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্রেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি বছর তেইশের বিশ্বজিৎ মণ্ডলকে, উঠেছে এমনই অভিযোগ। প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু— এই পাঁচ রাজ্য ছাড়া, অন্য জায়গা থেকে আসা শ্রমিকেরা বাড়িতেই নিভৃতবাসে থাকবেন, রয়েছে এমন সরকারি নির্দেশ। কিন্তু বাসিন্দাদের অনেকে তা না জানার ফলেই বিপত্তি বাধছে বলে মনে করছেন আধিকারিকদের অনেকে।
মৃত যুবকের বাবা তপন মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘ছেলেটা করোনা আতঙ্কের শিকার হয়ে মারা গেল!’’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে মঙ্গলবার এলাকার কয়েকজন দাবি করেন, ‘‘বিশ্বজিৎ প্রায় দু’মাস রাজস্থানে আটকে ছিলেন। অনেক আশা নিয়ে গ্রামে ফিরলেও কিছু লোকের অমানবিক আচরণের সামনে পড়তে হয়। গ্রামের বকুলতলায় ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্রে ঢুকতে গেলেও নানা কটূ কথা শুনতে হয়।’’ তাঁদের অভিযোগ, ‘‘করোনা নিয়ে প্রশাসন সর্ব স্তরে সচেতনতা গড়ে তুলতে পারেনি। তা না হলে এই রকম পরিস্থিতিতে পড়তে হত না গ্রামের ছেলেকে।’’
ঘটনার পরে সচেতনতা প্রচারে আরও জোর দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। মণ্ডলহাট থেকে নির্বাচিত খাজুরডিহি পঞ্চায়েতের সদস্য তৃণমূলের বিকাশ চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘করোনা নিয়ে আতঙ্কে ভুগছেন মানুষজন। আমরা সচেতনতা গড়ে তুলতে এলাকায় প্রচারপত্র বিলি করব। দেওয়ালে-দেওয়ালে পোস্টার দেওয়া হবে।’’ কাটোয়া ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস বাগ বলেন, ‘‘ঘটনাটি দুঃখজনক। নির্দিষ্ট পাঁচটি রাজ্য ছাড়া, যে কোনও রাজ্য থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যপরীক্ষার পরে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ রাখার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি মানুষজনকে বোঝাতে আমাদের কর্মীরা বাড়ি-বাড়ি যাচ্ছেন। ওই গ্রামে গিয়েও সচেতন করে এসেছিলেন তাঁরা।’’ তাঁর আশ্বাস, ফের যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে।