বুধবার দিনভর বিক্ষোভ শেষে রাতে মিলেছিল চাকরির আশ্বাস। বর্ধমান উত্তরের মহকুমাশাসক মুফতি শামিম শওকত বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে রাতে দেখা করে জানান, ৬১ জনের সমস্যা মিটে গিয়েছে। বাকিদের নিয়েও ভাবনা-চিন্তা চলছে। তখনকার মতো শান্ত হলেও আন্দোলনের রাস্তা থেকে তাঁরা যে সরেননি বৃহস্পতিবার সকালেই তা স্পষ্ট হয়ে গেল।
রাতভর অবস্থানের পরে এ দিন সকাল থেকেই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ কার্যালয়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। সকালে পুলিশের নিরাপত্তাবেষ্টনী ডিঙিয়ে অফিসে ঢুকতে হয় কর্মীদের। তবে আসেননি প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি অচিন্ত্য চক্রবর্তী। তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসা এবং নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ চলে। এর মধ্যে বেলা ১১টা নাগাদ ঘটনাস্থলে মিছিল করে পৌঁছন এসএফআইয়ের কিছু সমর্থক। সংগঠনের জেলা সম্পাদক দীপঙ্কর দে-র দাবি, ‘‘নিয়োগকে দুর্নীতি মুক্ত করে স্বচ্ছ তালিকা প্রকাশ করতে হবে।’’ কিন্তু, আন্দোলনকারী নিয়োগ প্রার্থীরা সরাসরি জানিয়ে দেন তাঁদের আন্দোলন অরাজনৈতিক। কোনও সংগঠনের সাহায্যের প্রয়োজন নেই।
অশান্তির আশঙ্কায় বিক্ষোভ চত্বরে ছিল পুলিশি নিরাপত্তা। ছিল ব্যারিকেডও। দুপুরের দিকে পৌঁছন মহকুমাশাসক মুফতি শামিম শওকত। তাঁর কাছে মীমাংসার আর্জি রাখেন চাকরিপ্রার্থীরা। সমস্যা মেটানোর আশ্বাস পেয়েও রণেভঙ্গ দেননি আন্দোলনকারীরা। সন্ধ্যার পরেও চলতে থাকে বিক্ষোভ। রাতের দিকে তিনি বলেন, ‘‘আজ, শুক্রবার সংসদের চেয়ারম্যান আসবেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত হবে।’’
প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে কাউন্সেলিংয়ের পরে প্যারাটিচারের নথি দেখাতে না পারায় ২২০ জন চাকরিপ্রার্থী বুধবার দুপুর থেকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের দাবি ওঠে, ‘সমস্ত নথি দিয়েছি। ইন্টারভিউয়ে পাশ করেছি। এসএমএস ও ই-মেলে কাউন্সেলিংয়ে ডাকা হয়েছে। স্কুল নির্বাচনও হয়ে গিয়েছে। এখন আবার নথি চাওয়া হচ্ছে কেন।’ আবার আর এক দলের দাবি, ফর্মে প্যারাটিচার হিসেবে টিক চিহ্ন দেননি তাঁরা। কিন্তু সংসদের তালিকায় রয়েছে তাঁরা প্যারাটিচার। এখন নথি কোথা থাকে দেবেন, তা নিয়ে চিন্তায় তাঁরা।
জেলাশাসকের দফতর থেকে কবরখানা যাওয়ার রাস্তার উপরে ওই সব চাকরিপ্রার্থীরা বসে থাকায় সন্ধ্যা পর্যন্ত সংসদ দফতরের কর্মীরা বাইরে বেরোতে পারেননি। চাকরি প্রার্থীরা সংসদে থাকা পুলিশ কর্মীদের বাইরে যাওয়ার পথ দিলেও শিক্ষা সংসদের কর্মীদের ভিতরেই আটকে রাখেন।