TMC

একুশে জুলাই ঘিরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, বাইক মিছিল নিয়ে দলেরই এক নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলেন তৃণমূল নেতা

দলীয় সূত্রে খবর, গত রবিবার আউশগ্রাম- ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শেখ আব্দুল লালন একুশে জুলাইয়ের প্রচারের জন্য নিজের ব্লকে বাইক মিছিলের আয়োজন করেছিলেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২৫ ২৩:১২
Share:

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কমছে না পূর্ব বর্ধমানে। —প্রতীকী চিত্র।

সর্বোচ্চ নেতৃত্ব হুঁশিয়ারি দিলেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কমছে না পূর্ব বর্ধমানে। একুশে জুলাইয়ের সভার প্রচারে নিজের এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় ঢুকে বাইক মিছিল করার জন্য দলেরই নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলেন এক তৃণমূল নেতা। অভিযোগ, ভিন্‌ এলাকায় ঢুকে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে।

Advertisement

দলীয় সূত্রে খবর, গত রবিবার আউশগ্রাম- ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শেখ আব্দুল লালন একুশে জুলাইয়ের প্রচারের জন্য নিজের ব্লকে বাইক মিছিলের আয়োজন করেছিলেন। তবে সেই মিছিল ১ নম্বর ব্লকের কোনও কোনও এলাকাতেও ঢুকে পড়েছিল। আর এতেই বেজায় চটে যান আউশগ্রাম-১ নম্বর ব্লকের বেরেণ্ডা অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি হাকিম শেখ (ওরফে ফকির) ও তাঁর অনুগামীরা। লালনের বিরুদ্ধে অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগ তুলে সরাসরি তিনি জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। কোন্দলের এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, আউশগ্রামের দেবশালা অঞ্চলের ভাতকুণ্ডায় পথসভা করে বাইক মিছিলে এলাকা পরিক্রমা করা হয়। দেবশালা অঞ্চল হয়ে কোটা এলাকায় যায় মিছিল। তারপর সেখান থেকে গলসির মানকর এলাকা হয়ে ভাল্কি, এড়াল প্রভৃতি অঞ্চল ঘুরে ভেদিয়াতে ঢোকে ওই মিছিল। কর্মসূচি শেষ হয় গেরাই গ্রামে।

Advertisement

বিতর্কের সূত্রপাত এখানেই। জানা গিয়েছে, আউশগ্রাম- ২ ব্লকের এড়াল অঞ্চল থেকে ভেদিয়া অঞ্চল যেতে হলে শর্টকাট রাস্তা হিসাবে বেছে নেওয়া হয় আউশগ্রামের বাজার এলাকা হয়ে কালীদহতে ওঠার রাস্তাকে। এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করার কিছুটা অংশ পড়ে আউশগ্রাম-১ ব্লকের আউশগ্রাম ও বেরেণ্ডা অঞ্চলে।

লালনের বিরুদ্ধে ফকিরের অভিযোগ, ‘‘বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে বেরেণ্ডা অঞ্চলে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন আউশগ্রাম-২ ব্লকের সভাপতি। তারই উদাহরণ রবিবারের বাইক মিছিল।’’ তিনি বলেন, ‘‘সিপিএম ও বিজেপির কয়েক জন মদ্যপ-হার্মাদদের সঙ্গে নিয়ে বেরেণ্ডা অঞ্চলের মধ্যে দিয়ে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছিল।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, লালনকে মদত দিচ্ছেন আউশগ্রাম থানার আইসি।

দলীয় সূত্রে খবর, আউশগ্রামে শাসকদলের দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে বিগত কয়েকমাস ধরেই তীব্র মতবিরোধ চলে আসছে। আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দারের সঙ্গে এককালে আউশগ্রাম-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতির ভাল সম্পর্ক ছিল। পরবর্তী কালে দু’জনের মধ্যে দূরত্ব বাড়ে। তখন থেকেই আউশগ্রাম- ২ ব্লকের দলীয় কর্মসূচিতে লালন ও বিধায়ককে একসঙ্গে দেখা যায়নি। রবিবারেরর প্রচার মিছিলেও বিধায়ককে দেখা যায়নি। তবে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বেশিরভাগ সময়েই বিধায়ককে দেখা যায় আউশগ্রাম-১ নম্বর ব্লকের দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে। গুসকরা এলাকার শহর কার্যালয়েই অধিকাংশ সময় থাকেন বিধায়ক। আউশগ্রাম-১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি অরূপ সরকার বিধায়ক-ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত।

এই প্রসঙ্গে আউশগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি অরূপ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই লালন বলেন, ‘‘এ নিয়ে আমার কিছু জানা নেই। ২১ জুলাই সভার সমর্থনে আমাদের দলের প্রচার মিছিলে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। সাধারণ মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আছেন।’’ বিধায়কের বক্তব্য, ‘‘বিধানসভায় বাদল অধিবেশনের জন্য আমি কয়েকদিন ধরে কলকাতায় আছি। সুতরাং কী হয়েছে আমার জানা নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement