জঞ্জাল ফেলা নিয়ে তরজায় ভুগছে মেমারি

শহরবাসীর অভিযোগ, প্রায় সপ্তাহ দুয়েক ধরে সাফাই কর্মীরা রাস্তা থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করছেন না। মেমারির এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘রাস্তায় চলা দায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৭ ০০:৪৮
Share:

নোংরা উপচে রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র

ত্রিফলা আলোয় সাজানো শহর। কিন্তু সেই শহরের বড় রাস্তা হোক বা গলি, সর্বত্র আবর্জনা ডাঁই করা। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, শহরের ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’টি নিয়ে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা ও পঞ্চায়েতের চাপানউতোরের জেরে দিন কয়েক ধরে এমনই হাল মেমারির।

Advertisement

শহরবাসীর অভিযোগ, প্রায় সপ্তাহ দুয়েক ধরে সাফাই কর্মীরা রাস্তা থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করছেন না। মেমারির এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘রাস্তায় চলা দায়। দুর্গন্ধে অসুস্থ হওয়ার জোগাড়।’’ বৃষ্টিতে সমস্যা আরও বাড়়ছে। অথচ আবর্ঝনা সাফাইয়ে পুরসভা উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ।

এই পরিস্থিতি কেন? মেমারি পুরসভা সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২২ বছর আগে মেমারি ‘নোটিফায়েড’ এলাকা থাকাকালীন জিটি রোডের ধারে বাগিলা পঞ্চায়েতের ফাঁকা এলাকায় আবর্জনা ফেলতে শুরু করে প্রশাসন। মেমারি পুরসভা তৈরির পরে বাম আমলে ওই জায়গাটি হয়ে ওঠে ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’। একই রীতি বজায় থাকে তৃণমূল আমলেও।

Advertisement

কিন্তু ওই ডাম্পিং গ্রাউন্ড বন্ধের দাবিতে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান বন্দনা সিংহ বিভিন্ন মহলে বেশ কয়েকবার চিঠি দেন। মেমারি ১ পঞ্চায়েত সমিতিও বিষয়টি নিয়ে পুরসভাকে উদ্যোগী হতে অনুরোধ করে। ইতিমধ্যে বাগিলা পঞ্চায়েত ‘নির্মল’ বলে ঘোষিত হয়। পঞ্চায়েতও ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ডে’র চারিদিকে ‘আবর্জনা ফেলা নিষিদ্ধ’ জানিয়ে ফ্লেক্স টাঙিয়ে দেয়। কিন্তু তার পরেও পুরসভা গ্রাউন্ডেই আবর্জনা ও শৌচাগারের বর্জ্য ফেলত।

কিছু দিন আগে পঞ্চায়েত ও পুর-প্রতিনিধিদের নিয়ে এলাকা পরিদর্শন করেন মহকুমা প্রশাসনের কর্তারা। একটি বৈঠকে ঠিক হয়, প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্য সরিয়ে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে মাটি ফেলে তা ঠিক করতে হবে। আর শৌচাগারের বর্জ্য ছ’ফুট গর্ত করে পুঁতে ফেলতে হবে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেই কাজ শুরু হওয়ার আগেই ফের পুরসভার আবর্জনার গাড়ি হাজির হয়েছিল। কিন্তু, পরিবেশ দূষণ হবে, এই যুক্তিতে সেই গাড়ি বাসিন্দাদের একাংশ আটকে দিয়েছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে জিটি রোড লাগোয়া এলাকার মহিলারা সবসময় ডাম্পিং গ্রাউন্ড কার্যত ‘পাহারা’ দিচ্ছেন। শহরবাসীর একাংশের দাবি, পুরসভা ও পঞ্চায়েতের দ্বন্দ্বের কারণেই এমন সমস্যা তৈরি হয়েছে।

বাগিলা গ্রামের বাসিন্দা, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ নিত্যানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বায়ো-ফেন্সিং দিয়ে জায়গাটা ঘিরে দিতে হবে। প্রকাশ্যে আবর্জনা ফেললে তা উড়ে বাসিন্দাদের ঘরে ঢুকবে, এটা মানব না।” আবর্জনা সাফাই বিভাগের দায়িত্বে থাকা মেমারির কাউন্সিলর সন্তোষ বোয়ালের অবশ্য দাবি, “দু-এক দিনের মধ্যেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।” শহরবাসীর অবশ্য কটাক্ষ, যতদিন না ‘আলোচনা’ ফলপ্রসূ হচ্ছে, তত দিন এই জঞ্জাল-যন্ত্রণা চলবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement