‘সিম’-এর সূত্রে জালে দুই প্রতারক

শেষমেশ ওই ‘সিম’-এর সূত্রেই আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দাদের জালে ধরা পড়ল দু’জন। সোমবার গভীর রাতে বলরাম মণ্ডল ও হনুমান কাপরি নামে ওই দু’জনকে ঝাড়খণ্ডের দেওঘরের কারো গ্রাম থেকে পাকড়াও করা হয়।

Advertisement

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৭ ০৬:৩০
Share:

একই ‘সিম’ থেকে একই নামে একাধিক ব্যক্তির কাছে ফোন এসেছিল। তার পরে নানা তথ্য হাতিয়ে নিয়ে অনলাইন-প্রতারণার অভিযোগ। শেষমেশ ওই ‘সিম’-এর সূত্রেই আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দাদের জালে ধরা পড়ল দু’জন। সোমবার গভীর রাতে বলরাম মণ্ডল ও হনুমান কাপরি নামে ওই দু’জনকে ঝাড়খণ্ডের দেওঘরের কারো গ্রাম থেকে পাকড়াও করা হয়।

Advertisement

পুলিশ জানায়, গত ২৮ অগস্ট দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের কর্মী, ডিএসপি টাউনশিপের বি-জোনের বিদ্যাসাগর অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা অঞ্জন ভট্টাচার্যের মোবাইলে একটি ফোন আসে। ফোনে ‘দীপক শর্মা’ নামে এক জন নিজেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের একটি শাখার ম্যানেজার পরিচয় দেন। ব্যাঙ্কের ওই শাখাতেই অঞ্জনবাবুর সেভিংস অ্যাকাউন্ট রয়েছে। অঞ্জনবাবু দুর্গাপুর থানায় জানান, ফোনে বলা হয়, জিএসটি-র পরে ডেবিট কার্ড ‘লক’ হয়ে গিয়েছে। কার্ডটি ফের চালু করতে ১৬ সংখ্যার কার্ড নম্বর, ‘সিভিভি কোড’ নম্বর চান দীপক। অঞ্জনবাবুকে আরও বলা হয়, মোবাইলে ‘ওটিপি’ আসবে, তা-ও যেন বলা হয়। সেই মতো পরপর সংখ্যাগুলি দীপককে জানান অঞ্জনবাবু। খানিক বাদেই অঞ্জনবাবুর অ্যাকাউন্ট থেকে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা হাপিস হয়ে যায়।

তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ওই একই ‘সিম’ নম্বর ব্যবহার করে ‘দীপক’ আরও বেশ কয়েকটি প্রতারণা করেছে। শুরু হয়, নম্বরটিতে আড়ি পাতা। সিম ও মোবাইলের ‘আইএমইআই’ নম্বরের সূত্র ধরে সোমবার গভীর রাতে ঝাড়খণ্ড পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে দেওঘরে অভিযান চালায় গোয়েন্দাদের পাঁচ জনের একটি দল। ধরা পড়েন বলরাম (ওরফে দীপক শর্মা) ও হনুমান কাপরি। ধৃতদের কাছে বেশ কিছু জাল সিম, এটিএম কার্ড মিলেছে বলে পুলিশ জানায়। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা জানায়, অনলাইন কেনাকাটা ও জাল এটিএম কার্ড ব্যবহার করে নগদ টাকাও তুলেছেন তাঁরা। মঙ্গলবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।

Advertisement

এ দিন কমিশনারেটের এক পুলিশ কর্তা জানান, সাধারণত এমন প্রতারণায় একাধিকবার একই ‘সিম’ ব্যবহার করা হয় না। কিন্তু বলরাম তা না করায় তদন্তে সুবিধা হয়। তাঁর সম্পর্কে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও জানা সম্ভব হয়।

ব্যাঙ্কের নাম ভাঙিয়ে ফোন করে গত কয়েক বছরে বেশ কিছু অনলাইন প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে দুর্গাপুরে। ‘লক’ হওয়া ডেবিট কার্ড চালু, কার্ডের পুনর্নবীকরণ, অ্যাকাউন্টের সত্যতা যাচাই-সহ নানা অজুহাতে তথ্য হাতিয়ে ‘অ্যাকাউন্ট সাফ’ করার ঘটনা ঘটেছে। তবে এ বিষয়ে বারবার সতর্কীকরণের ফলে গ্রাহকদের মধ্যে খানিকটা হলেও সচেতনতা তৈরি হয় বলে পুলিশের দাবি। তাই ছক পাল্টে এখন দুষ্কৃতীরা অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার নম্বর যোগ করা, জিএসটি-সহ নানা বিষয়ের নাম করে
তথ্য হাতাচ্ছে।

কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘ধৃতদের জেরা করে প্রতারক দলের বাকিদের খোঁজ করা হচ্ছে। আরও কত জনের সঙ্গে তারা প্রতারণা করেছে, তা-ও দেখা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement