গ্রাম থেকে মাত্র কয়েক মিটার দূরে কাটা হচ্ছে কয়লা। তার জেরে এলাকায় জল সমস্যা তৈরি হয়েছে। এমনকী জল কিনে খেতে হচ্ছে। ইসিএলের শোনপুর বাজারি প্রকল্প সম্প্রসারণের পরে এমনই সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ। পাণ্ডবেশ্বরের ছ’টি গ্রামের বাসিন্দাদের আশঙ্কা, দ্রুত পুনর্বাসন অথবা জলের ব্যবস্থা না করা হলে অচিরেই ভিটে-মাটি ছাড়তে হবে তাঁদের।
ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১৫ বছর আগে রাজমহলের পরে দ্বিতীয় খোলামুখ খনিটি চালু হয় পাণ্ডবেশ্বরের শোনপুর বাজারিতে। প্রকল্প শুরুর আগে ইসিএল কর্তৃপক্ষ জানান, পাণ্ডবেশ্বরের ১২টি গ্রামের নীচে মজুত রয়েছে কয়েক কোটি টন কয়লা। ইতিমধ্যেই ছ’টি গ্রামে পুনর্বাসন দিয়ে কয়লা কাটা হচ্ছে। সমস্যা শুরু হয়েছে নবগ্রাম, মধুডাঙা, ভাতমোড়া, শোনপুর, বাজারি, জোয়ালভাঙা গ্রামগুলিতে। গ্রামগুলির নীচে আগামী দু’ থেকে দশ বছরের মধ্যে কয়লা কাটা হবে বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছেন ইসিএল কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই অবশ্য গ্রামগুলির অদূরে কয়লা কাটা হচ্ছে।
যেমন, এলাকার অন্যতম বড় গ্রাম নবগ্রামের থেকে মাত্র পাঁচশো মিটার দূরে কয়লা কাটা হচ্ছে। প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান কাঞ্চন মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘খনিতে বিস্ফোরণের ফলে পুকুর, কুয়োর জলস্তর অনেক নীচে নেমে যাচ্ছে।’’
নবগ্রামের বাসিন্দারা জানান, জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের দেওয়া কল থেকে সপ্তাহে মাত্র এক দিন জল পড়ে। ইসিএল প্রতি দিন জলের ট্যাঙ্কার পাঠায়। তা দিয়ে দৈনন্দিন কাজ মিটলেও ৫০ টাকায় ২০ লিটার পানীয় জল কিনতে হচ্ছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। কেউ বা আবার এক কিলোমিটার দূরে জল আনতে যান। তাঁদের আশঙ্কা, ‘‘পুনর্বাসন অথবা জলের ব্যবস্থা না হলে বাড়ি ছেড়ে পালাতে হবে।’’ গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, এক মাস আগে ইসিএল কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানানো হলেও লাভ হয়নি।
ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, ‘‘পদ্ধতি মেনে দফায় দফায় জমি অধিগ্রহণ করা হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পুনর্বাসন দেওয়া হবে। জলের প্রয়োজন থাকলে আরও বেশি ট্যাঙ্কার পাঠানো হবে গ্রামগুলিতে।’’