ব্যারাজের সংস্কার করবে রাজ্যই: মমতা

দুর্গাপুরের ব্যারাজ থেকে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান এবং বাঁকুড়া জেলার বিস্তীর্ণ অংশে সেচের জল সরবরাহ হয়। দুর্গাপুর শহরের সমস্ত কল-কারখানা ও পানীয় জলের প্রধান উৎস এই ব্যারাজ।

Advertisement

সুব্রত সীট

বড়জোড়া শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৯ ০১:০৮
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র

বারবার কেন্দ্রের কাছে দরবার করেও লাভ না হওয়ায় রাজ্য নিজেই দুর্গাপুরে দামোদরের ব্যারাজ সংস্কারের কাজ হাতে নিয়েছে— জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বাঁকুড়ার বড়জোড়ায় নির্বাচনী জনসভায় মমতা বলেন, ‘‘কেন্দ্র কিছুই করেনি। রাজ্য সরকার ১৩০ কোটি টাকা খরচ করে ব্যারাজ সংস্কারের কাজ শুরু করেছে।’’

Advertisement

দামোদরের বন্যা থেকে অবিভক্ত বর্ধমান, বাঁকুড়া ও হুগলি জেলার নিম্ন দামোদর এলাকাকে বাঁচাতে আমেরিকার ‘টেনেসি ভ্যালি অথরিটি’র (টিভিএ) অনুকরণে ১৯৪৮-এর ৭ জুলাই দেশের প্রথম রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিসেবে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) গড়ে ওঠে। বন্যা প্রতিরোধ ছাড়াও সেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শিল্পস্থাপন ছিল ডিভিসি-র লক্ষ্য। মাইথন, তিলাইয়া, তেনুঘাট, পাঞ্চেত ও কোনারে বাঁধ তৈরি হয়। একমাত্র ব্যারাজটি দুর্গাপুরে গড়ে ওঠে ১৯৫৫ সালে।

দুর্গাপুরের ব্যারাজ থেকে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান এবং বাঁকুড়া জেলার বিস্তীর্ণ অংশে সেচের জল সরবরাহ হয়। দুর্গাপুর শহরের সমস্ত কল-কারখানা ও পানীয় জলের প্রধান উৎস এই ব্যারাজ। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যারাজ তৈরির পরে কোনও দিন পলি তোলার কাজ হয়নি। শুরুতে ব্যারাজের জলধারণ ক্ষমতা ছিল প্রায় সাড়ে ৬ মিলিয়ন কিউবিক মিটার। কেন্দ্রীয় জল কমিশনের সমীক্ষা অনুযায়ী, এখন তা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।

Advertisement

ব্যারাজের পলি তোলা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে টানাপড়েন দীর্ঘদিনের। এ দিন বড়জোড়ার সভায় মমতার অভিযোগ, ‘‘ডিভিসি আজ পর্যন্ত এক বার ড্রেজিং করেনি। লিখতে-লিখতে হাত ব্যথা হয়ে গিয়েছে। কথা বলে-বলে গলা ব্যথা হয়ে গিয়েছে যে, মোদীবাবু, দয়া করে ডিভিসি সংস্কার করে দিন। সংস্কার হলে অনেক বেশি জল ধরে রাখা যাবে। সেচের কাজে লাগবে। ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলে ডিভিসি জল ছেড়ে দিলে তা আর আমাদের রাজ্যে ঢুকে ক্ষতি করতে পারবে না। কিচ্ছু করল না!’’ প্রতি বছর বন্যায় ডিভিসি-র ছাড়া জলে দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া, হুগলি, হাওড়া জেলার বহু মানুষ বন্যার কবলে পড়েন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি জানান, ব্যারাজ সংস্কারের কাজ আপাতত রাজ্য সরকার নিজেই শুরু করেছে। তিনি বলেন, ‘‘১৩০ কোটি টাকা খরচ করে সংস্কারের কাজ হচ্ছে। কিছুটা তো হবে।’’ এ দিন রানিবাঁধের হলুদকানালিতেও একই অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী।

শুধু ব্যারাজ সংস্কারই নয়, মুখ্যমন্ত্রী জানান, নিম্ন দামোদর বেসিন প্রকল্পে ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই প্রকল্পে সেচখালগুলির সংস্কার হবে। মমতার কথায়, ‘‘কাজ শেষ হয়ে গেলে বিস্তীর্ণ এলাকার সেচের কাজের অনেক উন্নয়ন হবে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ হবে। বিশেষ করে, বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম, হুগলি, হাওড়ার মানুষ উপকৃত হবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন