মহিলার মৃত্যু জ্বরে, মশার উপদ্রবে প্রশ্ন

পশ্চিম বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস হালদার বলেন, ‘‘মহিলার মৃত্যুর বিষয়টি জেনেছি। ডেঙ্গি কি না, এখনই বলা যাবে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেলের মধ্যে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁকসা শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৯ ০০:২০
Share:

প্রতীকী ছবি।

জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে দুর্গাপুরের বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন কাঁকসার পানাগড় গ্রামের বধূ মামনি নাগ (৩২)। রবিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি, হাসপাতালের রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে তাঁর রক্তে ডেঙ্গি আইজিএম পরীক্ষায় ‘রিঅ্যাক্টিভ’ ফল এসেছিল।

Advertisement

পশ্চিম বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস হালদার বলেন, ‘‘মহিলার মৃত্যুর বিষয়টি জেনেছি। ডেঙ্গি কি না, এখনই বলা যাবে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেলের মধ্যে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।’’

পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন পনেরো আগে মামনি জ্বরে আক্রান্ত হন। দু’দিন পরে বুকে ব্যথা শুরু হয় তাঁর। পর দিন তাঁকে স্থানীয় এক চিকিৎসককে দেখানো হয়। কিন্তু অবস্থার উন্নতি হয়নি। খাওয়াদাওয়া কমে যায়। ১ অগস্ট বিকাল ৫টা নাগাদ অণ্ডালের খাঁদরা থেকে মামনির বাপের বাড়ির লোকজন এসে তাঁকে সেখানে নিয়ে যান। সে দিন রাত ১০টা নাগাদ তাঁর তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। খাঁদরার একটি নার্সিংহোমে এক চিকিৎসককে দেখানো হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গভীর রাতে ভর্তি করা হয় বিধাননগরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে।

Advertisement

মামনির ভাসুর নবীনবাবু বলেন, ‘‘হাসপাতালে চিকিৎসকেরা জানান, ফুসফুসে জল জমে বড় সংক্রমণ হয়েছে। এর পরেই মামনিকে আইসিইউ-তে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’’ তিনি জানান, সে রাতেই তাঁর রক্ত পরীক্ষার জন্য নমুনা নেওয়া হয়। ২ অগস্ট সন্ধ্যায় রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ডেঙ্গি আইজিএম পরীক্ষায় ‘রিঅ্যাক্টিভ’ ফল মিলেছে। সেই সঙ্গে রক্তে শর্করার পরিমাণও মাত্রাতিরিক্ত বলে জানান চিকিৎসকেরা। তবে ডেঙ্গি আইজিজি এবং এনএস১ পরীক্ষায় ‘নন রিঅ্যাক্টিভ’ ফল আসে। নবীনবাবু বলেন, ‘‘এর পর থেকে আর কোনও উন্নতি হয়নি মামনির। ক্রমশ অবস্থার অবনতি হয়েছে।’’ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে মামনির মৃত্যু হয়।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মামনির স্বামী প্রবীণ নাগের মুদির দোকান রয়েছে। বাড়িতে রয়েছে তাঁদের সাত বছরের মেয়ে পায়েল। মামনির মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পরিবার ও প্রতিবেশীরা। এলাকায় মশার উপদ্রব নিয়েও সরব হয়েছেন তাঁদের অনেকে। তাঁদের অভিযোগ, পুকুর মজে গিয়েছে। চার দিকে আগাছার জঙ্গল হয়ে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা প্রকাশ দাস বলেন, ‘‘ব্যবস্থা না নিলে বিপদ বাড়বে।’’ ত্রিলোকচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সাহিনা বেগমের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘ঘটনাটি দুঃখজনক। তবে এলাকায় আগেই সাফাইয়ের কাজ শুরু করা হয়েছে। নর্দমা পরিষ্কার করা হচ্ছে। ব্লক স্বাস্থ্য দফতরকে সঙ্গে নিয়ে মশা মারার ওষুধ স্প্রে করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন