চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
পি এফ-সহ নানা বকেয়ার দাবিতে হিমঘরের কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখালেন কর্মীরা। পরে অবশ্য মালিকপক্ষ একাংশ বকেয়া মেটানোর আশ্বাস দিলে কর্মীরা কাজে যোগ দেন।
শুক্রবার সকালে বর্ধমানের বেচারহাটে ওই হিমঘরের মূল দরজায় তালা দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে ইউনিয়নের কর্মীরা। আন্দোলনকারীদের নেতা তথা ইউনিয়নের সম্পাদক নির্মল ঘোষের অভিযোগ, “গত পাঁচ বছর ধরে আমাদের পিএফের কোনও হিসেব নেই। কোনও রসিদও দেওয়া হয়নি। কর্মীরা ৭২০০ থেকে ৮১০০ টাকা বেতন পান। তার শতকরা ১২ ভাগ টাকা পিএফের নাম করে মাসে মাসে কেটে নেওয়া হলেও তা পিএফ দফতরে জমা পড়ছে না। মালিকের যে অংশ জমা দেওয়ার কথা তাও জমা পড়েনা বলেই আমাদের সন্দেহ।” বিক্ষোভের জেরে হিমঘর থেকে আলু বের করার কাজও থমকে যায় এ দিন।
শ্রমিকদের আরও দাবি, ভাতা বাবদ তিন মাস অন্তর প্রায় আট হাজার টাকা পাওয়ার কথা তাঁদের। কিন্তু দু’বার টাকা না মেলায় ইতিমধ্যেই ১৬০০০ টাকা বাকি রয়েছে। ওই বকেয়া টাকার দাবিতে স্থায়ী ২১জন কর্মীও কর্মবিরতিতে যোগ দেন। রাজ্য কোল্ড স্টোরেজ ওয়ার্কারস অ্যান্ড এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের বর্ধমান জেলার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল সাত্তারের দাবি, “পিএফ, বকেয়া ১৬০০০ টাকা ও বোনাসের দাবিতে বাধ্য হয়েই শ্রমিকেরা ধর্মঘট করেছেন। মালিক সাবির আলি প্রতি বার ১৪ ভাগ বোনাস দেন। কিন্তু তিনি এ বার জানিয়ে দিয়েছেন বোনাস দেওয়া সম্ভব নয়।”
দুপুরে ওই হিমঘরে গিয়ে দেখা যায়, মালিক সাবির আলি ওপরের একটি ঘরে কর্মীদের একাংশের সঙ্গে বৈঠক করছেন। আর নিচে বাকি কর্মীরা গেটে তালা দিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তবে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি সাবির আলি। পরে ওই হিমঘরের ম্যানেজার উত্তম রায় বলেন, “মালিকের সঙ্গে কর্মীদের বৈঠক হয়েছে। তবে কি নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিনা।” শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক নির্মল ঘোষ বলেন, “মাথাপিছু আমাদের ৫০ হাজার টাকা করে পাওনা। মালিক আশ্বাস দিয়েছেন আগামী চারদিনের মধ্যে আমাদের ২৫ হাজার টাকা করে আপাতত দিয়ে দেওয়া হবে। তিনি যদি প্রতিশ্রুতি রাখেন তাহলে হিমঘর চালু থাকবে। নাহলে ফের আন্দোলনে নামতে হবে।” পরে সাবির আলিও বলেন, “কিছু দাবিদাওয়া নিয়ে কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। তবে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা মেটানো হয়েছে। আশা করি আর হিমঘরে কর্মবিরতি হবে না।”