চণ্ডীদাস বাজারে বিশ্বনাথ মশানের তোলা ছবি।
পুজো আসতে আর মাত্র ক’টা দিন। মণ্ডপ তৈরি থেকে প্রতিমা গড়ার কাজে রীতিমতো ব্যস্ততা, বাড়িতে-বাড়িতেও তেমন ব্যস্ততা পুজোর বাজার নিয়ে। রবিবার বেশ ভিড় হচ্ছে বাজারে। সপ্তাহের বাকি দিনগুলিতে সেই সমস্যা নেই। তাই দেখেশুনে শাড়ি কিনতে অনেক মহিলাই আপাতত দুপুরের দিকে পা বাড়াচ্ছেন বাজারের পথে।
সাবেক দোকান থেকে শপিংমল, শাড়ির সম্ভার নিয়ে তৈরি হয়ে গিয়েছে সকলেই। দুর্গাপুরের স্টেশন বাজারে ঘুরে দেখা গেল ইক্কত, ব্যাঙ্গালোর সিল্ক, কাঞ্জিভরম, সিফন, পিওর-সিল্ক, গাদোয়াল, তসর, বাংলাদেশি তাঁত থেকে কোষা-সিল্ক, চাহিদা রয়েছে সবেরই। সংকীর্ণ ফুটপাথেও পসরা সাজিয়ে বসেছেন ছোট ব্যবসায়ীরা। ফুলিয়ার তাঁত, ধনেখালি, টাঙ্গাইল, তাঁত জামদানি, মহাপাড় তাঁতের শাড়িতে ছেয়ে গিয়েছে বাজার।
একই ছবি বেনাচিতি বাজারেও। সন্ধ্যের পরে এখন সেখানে পা রাখা দায়। তাই অনেকে দুপুরেই সেরে নিচ্ছেন বাজার। বেনাচিতির একটি পুরনো দোকানে বাজার করতে এসেছিলেন ইস্পাতনগরীর এ-জোনের বাসিন্দা বছর চল্লিশের তমসা সিকদার। তাঁর মতে, কয়েক দিন বৃষ্টি হওয়ায় বাজারে বেরোতে পারেননি অনেকেই। তাই এখন তাড়াহুড়ো পড়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, “দুপুরে ভিড় কম হবে। তাই এই সময়ে এসেছি।” বাজার ঘুরে দেখা গেল, জারদৌসি, সিফন, সিল্কের উপর হ্যান্ড প্রিন্ট জাতীয় শাড়িও বিক্রি হচ্ছে প্রচুর।
একই কথা জানান বিভিন্ন বুটিক থেকে দুর্গাপুর স্টেশন বাজার, চণ্ডীদাস বাজার বা মামরা বাজারের ব্যবসায়ীরা। চণ্ডীদাস বাজারের ব্যবসায়ী বুলু পাল জানান, রেশম সিল্কের উপর ঢাকাইয়ের কাজ, পাটলপল্লু, কাঁথা স্টিচের কাজ করা শাড়ি তাঁর দোকানে বেশি বিক্রি হলেও বিশেষ আকর্ষণ কটন ঢাকাই মসলিন, যার ন্যূনতম দাম ৬ হাজার টাকা। কাটোয়ার বীরেন্দ্রনাথ দে ব্যবসার কাজে এসেছিলেন দুর্গাপুরে। তিনি বলেন, “গতানুগতিক শাড়িতে নিত্যনতুন নকশাই বদলে দেয় শাড়ির মান। তবে এ বছর সিল্ক ঢাকাইয়ের তিন রঙের শাড়ি রঙ্গবতী বাজারে বিকোচ্ছে বেশি। এ ছাড়াও তসর, গাডোয়াল, ব্রাসো শাড়ি, তাঁতের উপরে গুজরাতি ও কাঁথা স্টিচের কাজ এবং গঙ্গা-যুমনা শাড়িও বাজার ছেয়েছে।
দুর্গাপুরে বিভিন্ন শপিংমলে কলকাতার বুটিকেরা এই সময় স্টল দেন। এ বার এখনও সে ভাবে স্টল বসেনি। শপিংমলগুলি জানায়, শীঘ্রই তা বসবে। নানা শপিংমল ঘুরে দেখা গিয়েছে, বছরের অন্য সময় শাড়ির তেমন সম্ভার না থাকলেও এখন চিত্রটা অন্য রকম। সাবেক বাজারের মতোই বিভিন্ন দোকানে শাড়ির আলাদা কাউন্টার খোলা হয়েছে। দুর্গাপুর হাটে কলকাতা থেকে আসা এক ব্যবসায়ী জানান, সেখানে খেওয়া, গিচা, কোষা, জাকার্ট বা ভাগলপুরি কটনের শাড়ি বিক্রি হচ্ছে। বারোশো থেকে চার হাজার টাকা মূল্যের শাড়িগুলি কনসেপ্ট, রং এবং হাতের কাজসবেতেই অনন্য।
বুঝেশুনে, ঝেড়েবেছে এ সব কিনতে তাই এখন দুপুর-দুপুর বেরিয়ে পড়াই ভরসা।