West Bengal News

বিজেপির ইট, পুলিশের লাঠি, আইন অমান্য ঘিরে রণক্ষেত্র বসিরহাট

বসিরহাটে সভা করার অনুমতি চেয়ে আগেই আবেদন জানিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু অনুমতি মেলেনি। তাই বিজেপি বসিরহাটে আইন অমান্য করার ডাক দেয়। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ নিজে যান কর্মসূচির নেতৃত্ব দিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৬:৫৮
Share:

পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ার পরে লাঠিচার্জ শুরু হয়।

তুলকালাম বসিরহাট। দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে বিজেপির আইন অমান্য ঘিরে কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে উঠল সেখানকার ইটিন্ডা রোড। পুলিশের সঙ্গে তুমুল ধস্তাধস্তি হয় বিজেপি কর্মীদের। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। পুলিশও পাল্টা বেধড়ক লাঠিচার্জ করে। বিজেপির দাবি, এই ঘটনায় তাদের অনেক কর্মী জখম হয়েছেন।

Advertisement

বসিরহাটে সভা করার অনুমতি চেয়ে আগেই আবেদন জানিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু অনুমতি মেলেনি। তাই বিজেপি বসিরহাটে আইন অমান্য করার ডাক দেয়। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ নিজে যান কর্মসূচির নেতৃত্ব দিতে।

দিলীপ এ দিন দুপুরে বসিরহাটে পৌঁছনোর পরে পুলিশের অনুমতি ছাড়াই টাউন হল ময়দানে জড়ো হন বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। একটি মিনি-ট্রাকের উপরে দাঁড়িয়ে দিলীপ ঘোষ ভাষণ দেন জমায়াতের উদ্দেশে। তার পরে ইটিন্ডা রোড ধরে দিলীপের নেতৃত্বে মিছিল এগোতে থাকে টাউন হল থেকে মহকুমা শাসকের অফিসের দিকে।

Advertisement

মহকুমাশাসকের অফিসের বেশ কিছুটা দূরেই অবশ্য বিজেপি-র মিছিলকে আটকে দেওয়ার বন্দোবস্ত করে রেখেছিল পুলিশ। রাস্তার উপরে ব্যারিকেড করা ছিল। বিজেপির মিছিল সেই ব্যারিকেড ভেঙে এগনোর চেষ্টা করতেই দু’পক্ষে ধস্তাধস্তি শুরু হয়।

বসিরহাটে বিজেপির আইন অমান্য। মিনি-ট্রাকের উপরে দাঁড়িয়ে দিলীপ ঘোষের ভাষণ দিচ্ছেন জমায়াতের উদ্দেশে।

আরও পড়ুন: রাজ্যের প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন প্রয়াত

পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পুলিশকে লক্ষ্য করে কয়েক জন ইট ছোড়ার পরে। ইট ছোড়া হতেই লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। মিছিলের সামনের দিকে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের অনেকেই জখম হন। অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছিল যে দিলীপ ঘোষকে ঘিরে ব্যারিকেড তৈরি করেন তাঁর দেহরক্ষীরা।

পুলিশের দিকে যে ইট ছোড়া হয়েছিল, তা বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও স্বীকার করেছেন। কিন্তু তিনি ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিতও দিয়েছেন। দিলীপ বলেছেন, ‘‘আমরা মিছিল শুরু আগেই আমাদের সমর্থকদের বলে দিয়েছিলাম যে, কেউ অশান্তি করব না, আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে আইন অমান্য করব। কিন্তু মিছিল কিছুটা এগোতেই আমরা দেখতে পাই, একটা জায়গায় ইট-পাথর আগে থেকেই জড়ো করা রয়েছে। কয়েক জন আচমকা সেই ইট নিয়ে পুলিশের দিকে ছুড়তে শুরু করেন।’’ যাঁরা ইট ছুড়েছেন, তাঁরা আদৌ বিজেপির কর্মী কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে— ইঙ্গিত দিলীপের। তিনি বলেন, ‘‘কারা ইট ছুড়ল, সেটা দেখা দরকার। গায়ে তো আর নাম লেখা থাকে না।’’

আরও পড়ুন: রথযাত্রা চেয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টে মামলা বিজেপির

বিজেপির আইন অমান্য ঘিরে যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে, তা অবশ্য অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন। যে রাস্তা দিয়ে বিজেপির মিছিল এ দিন মহকুমা শাসকের অফিসের দিকে এগোচ্ছিল, সেই রাস্তার দু’ধারের দোকানপাট আগে থেকেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পুলিশ-বিজেপি সংঘর্ষের পরে বিধ্বস্ত চেহারা নিয়েছে ঘটনাস্থল। এই ঘটনায় ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বসিরহাটের সাংগঠনিক জেলা সভাপতিও রয়েছেন। প্রত্যেককে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে বলে বিজেপির দাবি।

এ বিষয়ে বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার শবরী রাজকুমারকে ফোন করা হলে তিনি তা ধরেননি। জবাব দেননি এসএমএসেরও। যদিও ওই পুলিশ জেলার এক কর্তা বলেন, “বিজেপি কর্মীদের বাধা দেওয়া মাত্রই তাঁরা এলোপাথারি ইট ছুড়তে শুরু করেন। তখন পাল্টা তাঁদের তাড়া করে ছত্রভঙ্গ করতে হয়।”

(দুই চব্বিশ পরগনা, হাওড়া ও হুগলি, নদিয়া-মুর্শিদাবাদ, সহ দক্ষিণবঙ্গের খবর, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা খবর, বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের খবর পেয়ে জান আমাদের রাজ্য বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন