প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
এসআইআর খতিয়ে দেখতে আগামী বুধবার দিল্লি থেকে রাজ্যে আসছে নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলে থাকবেন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতী, ডেপুটি সেক্রেটারি অভিনব আগরওয়াল এবং প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এসবি জোশী। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও)-এর দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, বুধবার আসবে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। শুক্রবার পর্যন্ত তারা রাজ্যে থাকবে। উত্তরবঙ্গের তিন জেলা— কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়িতে পর্যালোচনা করবে কমিশনের ওই প্রতিনিধিদল। বুথ লেভেল অফিসারদের কাজ খতিয়ে দেখবে তারা।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফে ৪১৮০০ বুথ লেভেল এজেন্ট (বিএলএ-২)-এর নাম নথিভুক্ত হয়েছে। তবে কোন রাজনৈতিক দল কত এজেন্ট দিয়েছে, এখনই বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে সিইও দফতর। প্রসঙ্গত, রাজ্যে বুথের সংখ্যা ৯৪ হাজারের বেশি। প্রধান যুযুধান দুই দল তৃণমূল এবং বিজেপি সব বুথে বিএলএ-দের নাম নথিভুক্ত করলে তা ১ লক্ষ ৮০ হাজার ছাপিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু মাত্র ৪১৮০০ বিএলএ-র নাম নথিভুক্তি নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা তৈরি হয়েছে। এর আগে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, ৩০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত বিএলএ নিয়োগে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। ২৯৪ জন বিএলএ-১ এবং ৭৯১২ জন বিএলএ-২ নিযুক্ত করেছে তারা।
কমিশনের ওই তথ্য অনুযায়ী দ্বিতীয় স্থানে ছিল সিপিএম। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তারা ১৪৩ জন বিএলএ-১ এবং ৬১৭৫ জন বিএলএ-২ নিয়োগ করেছে। অন্য দিকে, দুই দলের থেকেই বেশ পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। মাত্র ৩৬ জন বিএলএ-১ এবং ২৩৪৯ জন বিএলএ-২ নিযুক্ত করেছে তারা। আগামী ৪ নভেম্বর থেকে কমিশনের নিযুক্ত বিএলওরা এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাওয়া শুরু করবেন। প্রতিটা বুথ বা ভোটকেন্দ্রে বিএলও-দের সঙ্গে থাকবেন বিএলএ-২-রাও, যাতে গোটা প্রক্রিয়ার উপর সমস্ত রাজনৈতিক দল নজর রাখতে পারে। বিএলও যখনই কারও বাড়িতে যাবেন, তখন সঙ্গে থাকবেন দলের নিযুক্ত বিএলএ-২। কোনও ভুলভ্রান্তি দেখলেই তা ধরিয়ে দেবেন তাঁরা।
অথচ, সব বুথে এখনও বিএলএ নেই। তবে যত বেশি সংখ্যক বিএলএ থাকবেন, কাজের সুবিধাও তত বেশি হবে। সে জন্য গত মঙ্গলবার সর্বদল বৈঠকেও কমিশনের তরফে বলা হয়েছিল, আরও বুথভিত্তিক এজেন্টের নাম দেওয়া হোক। কমিশন এও জানিয়েছিল, বিএলএ-রা ৫০টা করে ফর্ম জমা দিতে পারবেন। কিন্তু তাতেও বঙ্গের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে বিএলএ নিয়োগ নিয়ে ‘অনীহা’ কাটেনি।
গত ২৮ অক্টোবর থেকে পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের ১২টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে শুরু হয়ে গিয়েছে এনুমেরেশন ফর্ম ছাপানোর কাজ। একই দিনে শুরু হয়েছে বিএলওদের প্রশিক্ষণও। আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত তা চলবে। ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমেরেশন ফর্ম দেওয়া হবে। কেউ রাজ্যের বাইরে গেলে বা প্রবাসীরা অনলাইনেও ফর্ম ভরতে পারবেন। অন্য দিকে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে ৯ ডিসেম্বর। এই তালিকা নিয়ে অভিযোগ থাকলে ৯ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারির মধ্যে জানাতে হবে। পরবর্তী পর্যায়ে ৯ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে অভিযোগ শোনা এবং খতিয়ে দেখার কাজ। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে ৭ ফেব্রুয়ারি।