গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বহাল রইল স্থগিতাদেশ। আজও ফয়সলা হল না পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত মামলার। নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ বুধবার পর্যন্ত স্থগিত। জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ।
দু’পক্ষের বক্তব্যই শুনেছেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার। তৃণমূলের তরফ থেকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দীর্ঘক্ষণ ধরে সওয়াল করেন। এ দিনের সওয়াল-জবাব শেষে বিচারপতি জানিয়ে দেন, বুধবারও এই মামলার শুনানি হবে।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে শুনানি শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে। ফলে নির্বাচন প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ আরও এক দিনের জন্য বেড়ে গেল। নির্বাচনের তারিখ ঘিরে অনিশ্চয়তা থেকেই গেল।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই গোটা রাজ্যের রাজনৈতিক শিবিরের নজর ছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের বেঞ্চের দিকে। গত ১২ এপ্রিল বিচারপতি তালুকদারের বেঞ্চই পঞ্চায়েত ভোট প্রক্রিয়ার উপরে অন্তর্বর্তিকালীন স্থগিতাদেশ জারি করে। সোমবার সেই মামলার শুনানি ছিল। ওই দিন তিনি জানিয়ে দেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভোট-প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ বজায় থাকবে। আজ বেলা দুটোয় ফের শুনানি শুরু হয়। বেশ কয়েক ঘণ্টা শুনানির পরে বিচারপতি জানিয়ে দেন, ১৮ এপ্রিল ফের শুনানি হবে।
সিঙ্গল বেঞ্চ ভোট-প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি করার পরেই তৃণমূল এবং রাজ্য সরকার ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলা দায়ের করেছিল। ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় সোমবার তাঁদের নির্দেশে বলেন, তাঁরা এই নির্বাচন নিয়ে দায়ের হওয়া মামলায় হস্তক্ষেপ করবেন না। চলতি ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের মেয়াদ আগামী অগস্ট পর্যন্ত। সে কথা মাথায় রেখে সিঙ্গল বেঞ্চ প্রয়োজনে প্রতি দিন শুনানি করে দ্রুত ওই মামলার নিষ্পত্তি করবে।
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত: হস্তক্ষেপে নারাজ ডিভিশন বেঞ্চ, নির্বাচন প্রক্রিয়া স্থগিতই
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত জটে উন্নয়ন থমকে গিয়েছে,উষ্মা প্রকাশ করলেন মমতা
যত পিছিয়ে যাচ্ছে মামলার নিষ্পত্তি, ঘোষিত নির্ঘণ্ট অনুযায়ী ভোটগ্রহণ ততই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ১, ৩ ও ৫ মে ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিরোধীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ১২ এপ্রিল নির্বাচনী প্রক্রিয়ার উপরে হাইকোর্ট চার দিনের স্থগিতাদেশ জারি করে। তাতেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ভোটগ্রহণ।
ভোটগ্রহণ নির্ধারিত সূচি অনুযায়ীই যাতে হয়, তা নিশ্চিত করতে তৎপর ছিল রাজ্য সরকার এবং তৃণমূল। স্থগিতাদেশ বাতিল করার আর্জি নিয়ে তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ডিভিশন বেঞ্চ আর্জি গ্রহণ করেছিল। কিন্তু ১৬ এপ্রিলের আগে শুনানি গ্রহণ করতে রাজি হয়নি। ফলে সিঙ্গল বেঞ্চের জারি করা স্থগিতাদেশ খারিজ হয়নি।
গত কাল অর্থাৎ সোমবার ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, সিঙ্গল বেঞ্চে ফয়সলা না হওয়া পর্যন্ত এই মামলায় হস্তক্ষেপ করা হবে না। ডিভিশন বেঞ্চের সেই সিদ্ধান্তের পরে দু’দফায় শুনানি হল সিঙ্গল বেঞ্চে। আরও দু’দিন পিছিয়ে গেল মামলার নিষ্পত্তি।