Sujan Chakraborty

Sujan Chakraborty: ‘এত দিন কি ঘুমোচ্ছিল?’ সম্পদ-বৃদ্ধি-বিতর্কে সিপিএম নেতাদের নাম উঠতেই উত্তেজিত সুজন

তৃণমূল দাবি করেছে, মামলার নথিতে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী থেকে শুরু করে সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়েরও নাম রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২২ ২০:১৬
Share:

সুজন চক্রবর্তী

মামলার নথিতে শুধু তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের নাম নেই। সিপিএম ও কংগ্রেস নেতাদেরও নাম রয়েছে। ১৯ জন নেতা-মন্ত্রীর সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে মামলা সংক্রান্ত বিতর্কে সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের এমন দাবির পরেই আক্রমণ শানালেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে উত্তেজিত দেখায় সুজনকে। তৃণমূল দাবি করেছে, মামলার নথিতে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী থেকে শুরু করে সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়েরও নাম রয়েছে। তার প্রেক্ষিতে সুজন বললেন, ‘‘এত দিন অভিযোগ করেনি কেন?’’ ‘আক্রমণাত্মক’ সুরে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘ঘুমোচ্ছিল? ঘুমোচ্ছিল?’’

Advertisement

বুধবার বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুজন বলেন, ‘‘এত দিন অভিযোগ করেনি কেন? ২০১১ সালে ২০১৬ সাল, পাঁচ বছর! তার পর ২০১৭ সালে মামলা দায়ের হল। তার পর আরও পাঁচ বছর কেটে আজ ২০২২ সাল। এত দিন কি ঘুমোচ্ছিল? লুটেরা বাহিনী যেন বোঝে তারা লুটেরা বাহিনী। তারা যেন চোখ না রাঙায়।’’

২০১৭ সালে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। গত সোমবার মামলাকারীদের আইনজীবী শামিম আহমেদ হাই কোর্টে বাংলার ১৯ জন নেতা-মন্ত্রীর একটি তালিকা-সহ তাঁদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব দিয়েছিলেন। সেখানে দেখান, ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত এই ১৯ জনের সম্পত্তি ‘বিপুল ভাবে’ বেড়েছে। বুধবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট মামলার রায়ের কপি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন ওই তালিকায় থাকা ছ’জন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী— ফিরহাদ হাকিম, ব্রাত্য বসু, অরূপ রায়, শিউলি সাহা, মলয় ঘটক এবং জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বৈঠকে ফিরহাদ বলেন, ‘‘মানুষের কাজ করার জন্য আমরা ব্যক্তিগত সুখ বিসর্জন দিয়েছি। মানুষের স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে লড়েছি। কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে আমাদের অপমান করা হচ্ছে।’’

Advertisement

এসএসসি নিয়োগ মামলায় দুর্নীতির গ্রেফতার হওয়া পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ টেনেও ফিরহাদ বলেন, ‘‘পার্থ যা করেছেন, তাতে আমরা সবাই লজ্জিত। এই পার্থকে আমি চিনতাম না। তার মানে এই নয় যে, তৃণমূলের সবাই চোর।’’ ঘটনাচক্রে, সুজনকে আক্রমণ করে ফিরহাদ। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি সুজন চক্রবর্তীকে বলতে চাই, আপনাদের ছেলেদের বলতে বলুন, চেতলা এলাকায় কোনও দিন কোনও অন্যায় ফিরহাদকে করতে দেখেছেন কি না।’’ তাঁর দাবি, তৃণমূলের সবাই স্বচ্ছ ভাবে রাজনীতি করছেন। তাঁরা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ছেন। মানুষের কাজ করছেন। কিন্তু বাম এবং কংগ্রেস উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই আক্রমণ করছে। এর প্রেক্ষিতেই সুর চড়িয়ে সুজন বলেন, ‘‘অনেকে বলছেন, ওয়ান-দু-থ্রি-ফোর, তৃণমূলের সবাই চোর। আমি বলছি, ওয়ান-টু-থ্রি-ফোর, তৃণমূলের নেতারা চোর। যত বড় নেতা, তত বড় চোর।’’

সাংবাদিক বৈঠকে একটি তালিকা তুলে ধরতে দেখা যায় ব্রাত্যকে। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতার নাম যেমন আছে, অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের নামও রয়েছে। মামলার নথিতে রয়েছে অধীররঞ্জন চৌধুরীর (প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি) নাম। তাঁর সম্পত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। তার পর রয়েছে সূর্যকান্ত মিশ্র (সিপিএমের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক এবং প্রাক্তন মন্ত্রী), অশোক ভট্টাচার্য (বামফ্রন্ট আমলের মন্ত্রী তথা শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র), কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় (প্রাক্তন মন্ত্রী, সিপিএম নেতা), আবু হেনা (রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং কংগ্রেস নেতা), সিপিএম নেতা ধীরেন বাগদি, চন্দন সাহা, নেপাল মাহাতোর মতো অজস্র নাম।’’

এর প্রেক্ষিতে সুজন আগেই বলেন, ‘‘বিধানসভায় এক বার তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি নিয়ে কথা বলেছিলাম। সেখানে খোদ স্পিকারই বলেছিলেন, তিনিও চিন্তিত যে কী ভাবে বড় বড় গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়ান কিছু নেতা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন