অনুমতি জট নেই, মঞ্চে কি চমক

বিজেপি-র পদ্মে কাঁটা হবে না তো ভারতী স্মৃতি!

বছর চারেক আগের ঘটনা। বেআইনি অস্ত্র নিয়ে দলের মিছিল করার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত মাহাতো

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

 ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০০
Share:

সঞ্জিত মাহাতো। নিজস্ব চিত্র

বছর চারেক আগের ঘটনা। বেআইনি অস্ত্র নিয়ে দলের মিছিল করার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত মাহাতো। এক মহিলা তৃণমূল কর্মীর শ্লীলতাহানির অভিযোগও ছিল সঞ্জিতের বিরুদ্ধে। পরদিন গ্রেফতার হতে হয়েছিল সঞ্জিতকে। তখন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। গেরুয়া শিবিরের যাবতীয় নিশানাও তখন ছিলেন ভারতী।

Advertisement

সেই ভারতী এখন বিজেপিতে। জঙ্গলমহলের জেলায় যে কোনও সময় আসতেও পারেন। ভারতীর যোগদান বিজেপির পক্ষে লাভজনক হবে না পদ্মে কাঁটা হয়ে বিঁধবে তা নিয়ে জোর জল্পনার মধ্যেই মঙ্গলবার সঞ্জিত বলেন, ‘‘ভারতীদিকে জঙ্গলমহলে আসার আমন্ত্রণ জানাতে চাই। পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন ভারতীর নির্দেশে আমাকে ওঁর মেদিনীপুরের বাংলোয় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রাত দশটা থেকে রাত তিনটে পর্যন্ত দফায় দফায় জেরা করেছিলেন ভারতী। বার দু’শো বার আমাকে উনি বিজেপি ছাড়ার কথা বলেছিলেন। এখন উনি এখানে এসে দু’শো বার ‘জয় শ্রীরাম’ বললে আমার ভাল লাগবে।’’

বেলিয়াবেড়ায় যে মিছিলের পরে সঞ্জিত গ্রেফতার হয়েছিলেন, তার প্রেক্ষিতে বিজেপি-র রাজ্য নেতা তাপস চট্টোপাধ্যায়, শ্যামাপদ মণ্ডল, আরেক জেলা সাধারণ সম্পাদক অবনী ঘোষের নামেও জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছিল। পরে শর্তাধীন জামিনে জেল হেফাজত থেকে ছাড়া পান সঞ্জিত। বাকি নেতারা আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়ে গ্রেফতারি এড়িয়েছিলেন।

Advertisement

যে ভারতীকে নিয়ে এক সময় বিস্তর বিঁধেছেন বিজেপি নেতারা, সেই প্রাক্তন আইপিএস ঘরের লোক হয়ে যাওয়ায় বিজেপি-র আগামী দিনে রণকৌশল কী হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে। বিজেপি-র নেতৃত্ব অবশ্য এখন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, পুলিশ সুপার পদে থাকাকালীন ভারতী যা করেছেন, সেটা পুরোপুরি তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে। বিজেপির তরফে এ রাজ্যের দশটি জেলার জোনাল পর্যবেক্ষক তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভারতী ঘোষকে দিয়ে তৃণমূল তো পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলায় অনেক দুর্নীতি করিয়েছিল। এ বার উনি আমাদের দলে এসেছেন। দেখব এই দুর্নীতি উনি কার কথায় করেছিলেন।’’ ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপি-র সভাপতি সুখময় শতপথীর আবার মন্তব্য, ‘‘পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে ভারতী বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। উনি ঝাড়গ্রামে এলে আমরা স্বাগত জানাব।’’

কিন্তু সঞ্জিতের মতো যাঁরা এক সময় ভারতীর নিশানা হয়েছিলেন, তাঁদের জন্য পরিস্থিতি কতটা সহজ হবে, সে প্রশ্ন থাকছেই। সঞ্জিত নিজেও বলছেন, ‘‘ ‘বিজেপি ছাড়ব না’ বলায় ভারতীর কথায় পুলিশ আমাকে বেধড়ক মেরেছিল। অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম। কিছুই ভু‌লিনি। ভারতীদির সঙ্গে মোলাকাত হলে অনেক কথাই জানার ও বলার ইচ্ছে রয়েছে।’’ তবে একই সঙ্গে সঞ্জিতের বক্তব্য, ‘‘পুরনো তিক্ততা ভুলে উনি দলকে শক্ত করুন, এটাই চাইব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন