West Bengal News

বীরভূমের বাইরেও ‘কেষ্ট দাওয়াই’-এর ভাবনা? আরও বড় দায়িত্ব পাচ্ছেন অনুব্রত

তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব নদিয়ার পরিস্থিতি আর একটুও জটিল হতে দিতে চাইছে না বলে খবর। তাই নতুন ‘দাওয়াই’ হিসেবে অনুব্রত মণ্ডলকে বেছে নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৯ ১৭:৩৬
Share:

‘নকুলদানা’ নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে বলে মনে করেন অনুব্রত মণ্ডল।

লোকসভা নির্বাচনের আগে আরও বড় দায়িত্ব পাওয়ার পথে অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূম জেলা তৃণমূলের দাপুটে সভাপতির দায়দায়িত্ব আগেই ছাড়িয়ে গিয়েছিল তাঁর নিজের জেলার সীমানা। বীরভূম লাগোয়া পূর্ব বর্ধমানের বেশ কয়েকটা বিধানসভা কেন্দ্রের সাংগঠনিক পর্যবেক্ষক আগেই করা হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলকে। এ বার রাঢ়বঙ্গের একেবারে উল্টো দিকের জেলা নদিয়াতেও বিশেষ দায়িত্ব পেতে চলেছেন তিনি। খবর তৃণমূল সূত্রের।

Advertisement

৯ জানুয়ারি অর্থাৎ বুধবার নদিয়ায় একাধিক কর্মসূচিতে যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনিক কর্মসূচি তো রয়েছেই। রয়েছে দলীয় বৈঠকও। ওই দিন অনুব্রত মণ্ডলকেও নদিয়ায় ডেকে পাঠিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় বৈঠক থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে কোনও বিশেষ দায়িত্ব দেওয়ার কথা ঘোষিত হতে পারে বলে জল্পনা শুরু হয়েছে।

পর্যবেক্ষক হিসেবে নদিয়া জেলা তৃণমূল দেখভাল করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু জেলায় দলের পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব খুশি নন বলেই খবর। গত বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেসের জোটকে উড়িয়ে দিয়ে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছিল তৃণমূল। কিন্তু নদিয়া জেলায় বেশ কয়েকটা আসনে অপ্রত্যাশিত হারের মুখ দেখতে হয় দলকে। পরবর্তী আড়াই বছরে পরিস্থিতি আগের চেয়েও অস্বস্তিকর হয়েছে তৃণমূলের পক্ষে। দলের অভ্যন্তরীণ জটিলতা তো বেড়েইছে। জনভিত্তি নিয়েও নেতৃত্ব সন্দিহান। কারণ ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি যে জেলাগুলোয় উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে, তার মধ্যে নদিয়া অন্যতম। বর্তমানে পরিস্থিতি যে রকম, তাতে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র নিয়ে তৃণমূলের উদ্বেগ বাড়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। রানাঘাট নিয়েও খুব নিশ্চিন্ত থাকার উপায় নেই।

Advertisement

আরও পড়ুন: স্ত্রীকে ফেসবুকে ‘অশালীন’ মন্তব্য, থানায় ঢুকে পুলিশের সামনেই যুবককে মার জেলাশাসকের

তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব নদিয়ার পরিস্থিতি আর একটুও জটিল হতে দিতে চাইছে না বলে খবর। তাই নতুন ‘দাওয়াই’ হিসেবে অনুব্রত মণ্ডলকে বেছে নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। নিজের জেলা বীরভূমে যে অনুব্রত মণ্ডল ধারাবাহিক ভাবে নির্বাচনী সাফল্য দেখাতে পেরেছেন, তা নিয়ে কারও কোনও সংশয় নেই। পার্শ্ববর্তী জেলার যে অংশের দায়িত্ব তাঁর হাতে, সেখানেও তৃণমূল এখন একচ্ছত্র। সেই কারণেই সম্ভবত নদিয়াতেও অনুব্রত ‘ফর্মুলা’ প্রয়োগ করার কথা ভাবা হচ্ছে।

অনুব্রত কী দায়িত্ব পেতে চলেছেন তা নিয়ে জোর জল্পনা চলছে। ফাইল চিত্র।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে অনুব্রতকে দায়িত্ব দেওয়া হবে— এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা কমই। জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তকে সঙ্গে নিয়ে পার্থ যে ভাবে জেলা সামলাচ্ছিলেন, সে ভাবেই সামলাবেন। অনুব্রত মণ্ডলকে কোনও বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে তাঁদের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হবে। জল্পনা এই রকমই। সেই চর্চিত ‘বিশেষ দায়িত্ব’ কী হতে চলেছে, এখনও স্পষ্ট নয়। গোটা জেলাতেই অনুব্রত মণ্ডল কাজ করবেন, নাকি শুধু কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র তাঁকে দেখতে বলা হবে, তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই নানা জল্পনা চলছে। তবে ৯ জানুয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে কিছু ঘোষণা না করা পর্যন্ত কোনও কিছুই স্পষ্ট হওয়ার নয়।

আরও পড়ুন: উচ্চবর্ণের আর্থিক দুর্বলদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ! ভোটের মুখে কল্পতরু মোদী সরকার

নদিয়া জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর সফরে অনুব্রত মণ্ডলের ডাক কেন পড়ল, তা নিয়ে অবশ্য তৃণমূলের কোনও নেতাই আপাতত মন্তব্যে নারাজ। অনুব্রত মণ্ডলকে যে ডাকা হয়েছে, তা জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত মানলেন। কিন্তু বিশদ জবাব এড়িয়ে গেলেন। শুধু বললেন, ‘‘কোনও প্রশাসনিক সভায় বা দলীয় সভায় মুখ্যমন্ত্রী যদি কাউকে আসতে বলেন বা যদি সঙ্গে নিয়ে আসেন, তা হলে সে বিষয়ে মন্তব্য করার কোনও এক্তিয়ার আমার নেই।’’

আর অনুব্রত মণ্ডল নিজে কী বললেন? তিনিও জানালেন যে, ৯ জানুয়ারি তিনি নদিয়ায় ডাক পেয়েছেন। কিন্তু কেন ডাক পেয়েছেন, নতুন কোনও দায়িত্ব পাচ্ছেন কি না, তা নিয়ে বিশদ মন্তব্য করতে চাইলেন না। বললেন, ‘‘আমাকে মুখ্যমন্ত্রী ডেকেছেন, আমি যাব। যদি কোনও দায়িত্ব দেন, তা হলে পালন করব।’’

(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেবাংলায় খবরজানতে পড়ুন আমাদেররাজ্যবিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন