লোকসভা ভোটের আগে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া সাধারণ শ্রেণির জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণে সায় দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। —ফাইল চিত্র
লোকসভা ভোটের মুখে ফের কল্পতরু মোদী সরকার। এ বার উচ্চবর্ণের আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়াদের জন্য চাকরি ও শিক্ষায় ১০ শতাংশ সংরক্ষণের প্রস্তাবে সায় দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। এই অনুযায়ী সংবিধান সংশোধন করবে সরকার। কাল মঙ্গলবারই সংসদে সেই বিল পেশ হবে বলে সূত্রের খবর। ভোটের দিকে তাকিয়ে শেষ বেলায় বিজেপির ‘গিমিক’, কড়া সমালোচনা কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের। পতিদার আন্দোলনের নেতা হার্দিক পটেলের মন্তব্য, ‘‘মোদীর কফিনে শেষ পেরেক।’’বিল পেশ হলেও এই সরকার তা পাশ করতে পারবে কিনা, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।
জাতি বা শ্রেণি নয়, আর্থিক অবস্থার প্রেক্ষিতে সংরক্ষণের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই জানিয়ে আসছিল এনডিএ-র শরিক শিবসেনা। কিন্তু মোদী জমানার সাড়ে চার বছরে তাতে কার্যত কর্ণপাত করেনিবিজেপি। এবার পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষের আগে উচ্চ বর্ণের জন্য সংরক্ষণে সবুজ সঙ্কেত দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। তাতে বলা হয়েছে, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া উচ্চবর্ণের নাগরিকদের জন্য চাকরি ও শিক্ষাক্ষেত্রে ভর্তিতে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ করা হবে। তার জন্য প্রয়োজনীয় আইন সংশোধন করতে বিল পেশ হবে সংসদে।
কিন্তু আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া কী ভাবে বিচার করা হবে? সরকারের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বার্ষিক আয় আট লক্ষের কম, পাঁচ হেক্টরের কম জমি এবং ফ্ল্যাটের আয়তন ১০০০ স্কোয়ার ফুটের কম হতে হবে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
গত মাসেই মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং ছত্তীসগঢ়ের বিধানসভা ভোটে কার্যত ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। এত দিন পর্যন্ত তফশিলি জাতি, উপজাতি-সহ বিভিন্ন শ্রেণির জন্য সংরক্ষণ থাকলেও সাধারণ শ্রেণির জন্য কোনও সংরক্ষণ ছিল না। ফলে সাধারণ মধ্যবিত্তদের মধ্যে ক্ষোভ দীর্ঘদিন ধরেই ছিল, এবং সংরক্ষিত শ্রেণির চেয়েও এই সংখ্যা অনেক বেশি। রাজনৈতিক শিবিরের ব্যাখ্যা, এই সংরক্ষণে সায় দিয়ে ভোটের মুখে মধ্যবিত্তদের মন জয়ের চেষ্টা করল মোদী সরকার।
আরও পডু়ন: লোকসভা ভোটে ত্রিশঙ্কু ফলের অপেক্ষায় নিতিন গডকড়ী! দাবি শিবসেনার
কিন্তু সাড়ে চার বছর কাটিয়ে মেয়াদ শেষের মুখে এবং লোকসভা ভোট যখন দরজায় কড়া নাড়ছে, সেই সময় এরকম জনদরদী ঘোষণা কেন? তার উপর সুপ্রিম কোর্টের রায় রয়েছে, সব মিলিয়ে ৫০ শতাংশের বেশি সংরক্ষণ করা যাবে না। এই সব প্রশ্ন তুলেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় সরব হয়েছে কংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলি। কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির প্রতিক্রিয়া, এটা বিজেপির ‘ভোট গিমিক’ ছাড়া আর কিছুই নয়। সুপ্রিম কোর্টের বেঁধে দেওয়া সর্বাধিক ৫০ শতাংশ সংরক্ষণই বা কীভাবে মেলাবে সরকার? এই ঘোষণার জন্য সরকার কেন সাড়ে চার বছর অপেক্ষা করল, সেই প্রশ্নও তুলেছেন সিঙ্ঘভি।
See last two tweets re reservation 4forwards? Qs—did u nt think of this for 4 yrs 8 mths? so obviously thought of as election gimmick 3mths b4 model code! (3) u know u cannot exceed 50% maxima so it is done only to posture tht u tried unctal thing (4) do u hv majority 4ctal am?
— Abhishek Singhvi (@DrAMSinghvi) January 7, 2019
আরও পড়ুন: খোলামেলা পোশাকে নাচতে বাধ্য করা হত, তারপর ধর্ষণ! বিহার হোম কাণ্ডে চার্জশিট সিবিআই-এর
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী তথা প্রাক্তন বিজেপি নেতা যশোবন্ত সিনহার মন্তব্য, এটা ‘জুমলা’ ছাড়া আর কিছু নয়। শেষ মুহূর্তে তড়িঘড়ি করে বিল পেশ করলেও সংসদের উভয় কক্ষে পাশ করানোর সময়ই পাবে না সরকার। বিজেপি সরকারের মুখোশ খুলে গিয়েছে। পতিদার সম্প্রদায়ের সংরক্ষণের জন্য দীর্ঘ আন্দোলন করেছেন গুজরাতের হার্দিক পটেল। এদিনের সিদ্ধান্তের পর তাঁর প্রতিক্রিয়া, মোদীর কফিনে এটাই শেষ পেরেক।
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy