BJP

BJP: আমাকে ভালবাসলে বসে যান চুপচাপ, ফেসবুকে কর্মীদের বললেন বিজেপির দুর্দিনের নেতা দুধকুমার

দলের রাজ্য নেতারাও মানেন যে, বিজেপির দুর্দিনের নেতা দুধকুমার। বাংলায় গেরুয়া শিবিরের যখন সংগঠনই ছিল না, তখন পঞ্চায়েতে জেতেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২২ ১৪:১৪
Share:

এখন রাজ্য বিজেপির কার্যকারিণী সমিতির সদস্য দুধকুমার মণ্ডল। ফাইল চিত্র

রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে দলের কর্মীদের বসে যাওয়ার আহ্বান জানালেন বিজেপির বীরভূমের নেতা দুধকুমার মণ্ডল। এখন দলের রাজ্য কর্মসমিতির সদস্যও আদি নেতা দুধকুমার। এই রাজ্যে বিজেপির সংগঠন যখন প্রায় ছিলই না তখন পঞ্চায়েতে জিতেছেন তিনি। সেই দুধকুমারের অভিযোগ, দলে তিনি যোগ্য সম্মান পাচ্ছেন না। একই সঙ্গে জানিয়েছেন, তাঁকে না জানিয়েই জেলা থেকে ব্লক কমিটি তৈরি করা হয়েছে। সেই ক্ষোভের কথা জানিয়ে দুধকুমার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘জেলা থেকে ব্লক কমিটি আমার সঙ্গে আলোচনা না করে কমিটি গঠন করেছে। তাই ভারতীয় জনতা পার্টির সমর্থক এবং কার্যকর্তাগণ আমাকে যাঁরা ভালবাসেন তাঁরা চুপচাপ বসে যান।’ তাঁর সমর্থনে রবিবার ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। দুই মিলিয়েই অস্বস্তিতে বিজেপি।

Advertisement

বিধানসভা নির্বাচনের পরে বার বার বিজেপির অন্দরের কলহ বাইরে এসেছে। দলের বিরুদ্ধে একের পর এক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকে দলত্যাগও করেছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন রাজ্যের দুই সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় এবং অর্জুন সিংহ। কিন্তু তাঁদের তুলনায় বিজেপিতে দুধকুমারের গুরুত্ব অন্যরকমের। এই রাজ্যে যখন বিজেপির কোনও সংগঠনই ছিল না তখন ১৯৮৮ সালে প্রথম বার বীরভূমের ময়ূরেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য হন। ২০১৮ সালেও তিনি পঞ্চায়েতে জিতেছেন। ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ময়ূরেশ্বর আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন দুধকুমার। ২০১৬-এ দাঁড়ান রামপুরহাট থেকে। তবে কোনও বারই জিততে পারেননি। চার বার গ্রাম পঞ্চায়েত এবং এক বার পঞ্চায়েত সমিতিতে জয়ী দুধকুমার বেশ কিছু দিন ধরেই ক্ষুব্ধ ছিলেন। এ বার সেই ক্ষোভই প্রকাশ্যে এসে গেল।

সম্প্রতি কলকাতায় রাজ্য কার্যকারিণী সমিতির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। সেখানে আমন্ত্রণ পেয়েও গরহাজির ছিলেন দুধকুমার। রবিবার ফেসবুকে পোস্টের পরে আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘যখন কেউ ছিল না, তখন আমি ছিলাম। ২০১৮ সালেও যখন সবাই লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে তখন আমি জিতেছি। কিন্তু এখন দলে আমার কোনও গুরুত্বই নেই। নাম কা ওয়াস্তে রাজ্য কার্যকারিণীর সদস্য করে রাখা হয়েছে। কোনও রাজ্য নেতাই আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না।’’ আপনার ক্ষোভের কথা কি রাজ্য নেতাদের জানিয়েছিলেন? জবাবে দুধকুমার বলেন, ‘‘কাকে বলব? এখানে আমাকে দেখেই কর্মীরা পথে নামে। সেই আমারই দলে গুরুত্ব কমছে। পুরনোরা কেউই সম্মান পাচ্ছেন না। এর ফলে দিন দিন দল ক্ষয়িষ্ণু হচ্ছে।’’

Advertisement

দুধকুমারের মতো পুরনো দিনের নেতার এমন বিস্ফোরক পোস্টের পরে রাজ্য বিজেপি অনেকটাই অস্বস্তিতে। তবে রাজ্যের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, এই সমস্যার খুব তাড়াতাড়ি সমাধান হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘‘বীরভূমের একটা বড় এলাকায় দুধকুমারদা এবং দল সমার্থক। উনি শুধু প্রবীণ তাই নয়, এক জন অনুভবী কার্যকর্তা। খুব তাড়াতাড়ি তাঁর ক্ষোভের কথা শোনা হবে। তবে উনি ক্ষোভ থেকে কিছু লিখে থাকলেও, দলের ক্ষতি হবে এমন কোনও কাজ কখনওই করবেন না বলে আমি বিশ্বাস করি।’’ শমীক এই ভাবে বললেও অন্য একটি সূত্রের খবর, দুধকুমারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিতে পারে রাজ্য বিজেপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন