দুগ্ধসেবা: পথচলতিদের পাশে বিজেপির গো-উন্নয়ন সেল। শনিবার চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে। —নিজস্ব চিত্র।
গোমাংস নয়, গোদুগ্ধ খান। কেরলের বিফ ফেস্টিভ্যালের জবাবে এ বার কলকাতায় এই কর্মসূচি নিয়ে পথে নামল বিজেপি। দলের দাবি, শনিবার ওই কর্মসূচিতে অনেক মুসলিমও ইফতার সেরে ফেরার পথে গরুর দুধ খেয়ে গিয়েছেন। চলতি রমজান মাসের শেষ দিন আরএসএসের রাষ্ট্রবাদী মুসলিম মঞ্চ রাজ্যের সর্বত্র মুসলিমদের ইফতারে গরুর দুধ খাওয়াবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিজেপির রাজ্য দফতর লাগোয়া চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে দলের গো উন্নয়ন সেল এ দিন প্রায় ১৮০০ মানুষকে গরুর দুধ খাওয়ায়। গো উন্নয়ন সেলের আহ্বায়ক সুব্রত গুপ্ত জানান, রাস্তায় সিগন্যালে দাঁড়ানো বাস এবং গাড়ি থেকে নেমে বহু মানুষ, এমনকী পুলিশকর্মীরাও গাড়ি থামিয়ে গরুর দুধ খেয়েছেন। ওই এলাকার আশপাশেই মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রচুর মানুষের বাস। তাঁরাও গরুর দুধ খান।
আরও পড়ুন: রথের রশি ছুঁতে ঝাঁপাচ্ছে গেরুয়া শিবির
এর আগে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়েই যোগাযোগ ভবনের কাছে আরও এক বার গরুর দুধ খাইয়েছিলেন সুব্রতবাবুরা। ধর্মতলায় সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ বিদ্বজ্জন সুবোধ সরকারের প্রকাশ্যে গরুর মাংস খাওয়ার প্রতিবাদে সে বার তাঁদের ওই কর্মসূচি ছিল। এ বার কেরলে বিফ ফেস্টিভ্যালের প্রতিবাদে তাঁদের একই পদক্ষেপ। সুব্রতবাবুর কথায়, ‘‘গো হত্যার মোকাবিলায় গোরক্ষার বার্তা দিতেই আমাদের এই আয়োজন।’’ রমজানের শেষ দিন রাষ্ট্রবাদী মুসলিম মঞ্চ যে গরুর দুধ খাইয়ে ইফতার করাবে, তাতেও সাহায্য করবে গো উন্নয়ন সেলই। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কে কী ভাবে তাঁর ধর্মীয় প্রথা পালন করবেন, সে ব্যাপারে কোনও উগ্র সাম্প্রদায়িক সংগঠন নাক গলালে তা দুর্ভাগ্যের। মানুষ এ সব ক্ষমা করবে না।’’
গেরুয়া শিবিরের এই কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন সিপিএমের বিকাশবাবুও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘গরুর দুধ, ছাগলের দুধ সকলেই খায়। গরুর মাংস খেলে মানুষের স্বাস্থ্যহানি হয়, এমন কোনও প্রমাণ নেই। যাঁরা ধর্মীয় বিশ্বাসের উপরে নির্ভর করে মানুষের খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন, তাঁরা ধর্ম বা বিজ্ঞান কোনওটাই জানেন না।’’