জিন্দাবাদ কেষ্টদা
তাঁকে দেখেই ভিড়ের মধ্যে কেষ্টদা জিন্দাবাদ! ঘামতে ঘামতে মঞ্চের সামনের দিকে এগোচ্ছেন বীরভূমের অনুব্রত মণ্ডল। পাশ দিয়ে যাচ্ছেন আসছেন তৃণমূলের কত নেতা। কিন্তু তাঁর মতো আর কারও জন্য তেমন উল্লাস জিন্দাবাদ কই! মুখ্যমন্ত্রীর শপথ হতেই ঘামভেজা চেহারাটা নিয়ে চেয়ার ছেড়ে তিনি উঠতেই আবার ভিড় তাঁকে ঘিরে। চড়াম চড়াম ঢাক বাজল না ঠিকই। কিন্তু তাঁর নামে জিন্দাবাদ হল আবার। চলল তাঁর সঙ্গে সেলফি তোলার ধুমও!
নেই অভিষেক
পিসির শপথ। কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কোথায়? শহর জুড়ে তাঁর নামে হোর্ডিং পড়েছে ‘ম্যাচ উইনার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়’। অথচ রেড রোডেই তিনি গরহাজির! অভিষেকের ঘনিষ্ঠ মহল বলছে, হোর্ডিং কে লাগিয়েছে, সে সম্পর্কে তাঁর কোনও ধারণাই নেই। বস্তুত, এই ঘটনায় তিনি বেশ অসন্তুষ্টই। কারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, সে ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে দলীয় স্তরে। আর অভিষেকের অনুপস্থিতি নিয়েও জল্পনার কোনও অবকাশ নেই। অসুস্থ হয়ে পড়েই শপথ ‘মিস’ করেছেন তিনি।
হাত দিয়ে ভাত
শপথের পরে লালু-নীতীশ-কেজরী-সহ ভিভিআইপিদের আপ্যায়ন করে ভেটকি পাতুরি এবং চিংড়ি খাওয়ালেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। হাত দিয়ে ভাত মেখে খেলেন লালু এবং নীতীশ। শপথ-মঞ্চের পিছনের তাঁবুতে এ দিন পুরোদস্তুর বাঙালি খানায় মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের বিশেষ পদ হিসাবে সেখানে ছিল ভেটকি পাতুরি এবং চিংড়ি। ফারুক আবদুল্লা মঞ্চে জাতীয় সঙ্গীত চলাকালীন ফোনে কথা বলছিলেন। তার জন্য ওই মধ্যাহ্নভোজের ফাঁকেই তাঁকে অন্য অতিথিদের কাছে কথাও শুনতে হল। তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষও করেছেন তিনি।
শপথে দেবপ্রসাদ
এখনও তিনি কংগ্রেসেই। দল দিল্লি বা রাজ্যের কাউকেই শপথে পাঠায়নি। তবু তিনি এলেন। বসলেন রেড রোডের ধারে একটু ছায়ায়। আলিপুরদুয়ারের বর্তমান বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তীকে পাশে নিয়ে বললেন, ‘‘জোট হওয়ার পর থেকেই তো আমি কংগ্রেসের সঙ্গে পথ হাঁটছি না। ওরা আসেনি তো কী হয়েছে! নিজেই এসেছি শপথে।’’ শপথ শেষে দিল্লি গেলেন আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়।
শ্রী-ধাক্কা
চলচ্চিত্র প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতা দিদির ঘনিষ্ঠ, সকলেই জানেন। কিন্তু শপথের দিন তাঁকেও ছেড়ে কথা বলল না ভিআইপি চেয়ারে আসীন উচ্ছ্বসিত জনতা। শ্রীকান্ত মঞ্চের কাছে যেতেই এমন ধাক্কা খেলেন, যে ছিটকে পড়লেন। বলতে শোনা গেল, ‘‘না! এখানে থাকা যাবে না। কেউ চিনছেই না!’’
দাদার কীর্তি
অধিকাংশ মন্ত্রীই শপথে এসেছিলেন ধুতি পরে। মন্ত্রী না হলেও ধুতি পরেছিলেন সাংসদ তাপস পালও। চড়া রোদে বসেও ছিলেন দীর্ঘ ক্ষণ। তবুও তাঁকে দেখে পাবলিক তালি দেয়নি। গুরুও বলেনি। তাই শপথের পরে ফাঁকা মঞ্চে উঠে তৃণমূল কর্মীদের দিকে হাত নাড়লেন তাপস। ছবির পোজও দিলেন। তখন হাততালি পড়ল। দাদার সঙ্গে সেলফিও তুলল কয়েক জন।
শেষে সোনালি
ভিআইপি-বিধায়কদের আসনের একেবারে শেষ সারিতে বসেছিলেন গত বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার সাতগাছিয়ার বিধায়ক সোনালি গুহ। শপথ শেষে অধিকাংশ চেয়ার ফাঁকা হয়ে গেলেও দিদির ঘনিষ্ঠ সোনালি কিন্তু চড়া রোদেও ঠায় বসে রইলেন। উঠলেন সকলের শেষে।