Bengal Migrant Workers Detained

বাংলা বললেই বাংলাদেশি? ‘কোর্ট নীরব থাকতে পারে না’, পরিযায়ী শ্রমিক মামলায় শাহের মন্ত্রককে ছয় প্রশ্ন আদালতের

পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকের মামলায় অমিত শাহের মন্ত্রকের কাছে মোট ছ’টি প্রশ্নের উত্তর চেয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। রিপোর্টে সেই প্রশ্নগুলির উত্তর জানাতে হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৫ ২০:০২
Share:

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছ থেকে ছ’টি প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

কাজের সূত্রে দিল্লিতে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকেরা। সেখানে শুধুমাত্র বাংলায় কথা বলার ‘অপরাধে’ তাঁদের আটক করা হয়েছে। সন্দেহ করা হয়েছে, তাঁরা বাংলাদেশি। অভিযোগ, বেআইনি ভাবে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় তাঁদের আটকে রাখা হয়েছিল। পরিচয়টুকুও যাচাই করা হয়নি। এতে ওই শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টে এমনটাই জানিয়েছেন মামলাকারীদের আইনজীবী। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে শুক্রবার এই মামলার শুনানি হয়েছে। আদালত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছ থেকে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট চেয়েছে।

Advertisement

অমিত শাহের মন্ত্রকের কাছে মোট ছ’টি প্রশ্নের উত্তর চেয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। রিপোর্টে সেই উত্তর জানাতে হবে। আইনজীবী আদালতে জানান, তাঁর মক্কেলের কন্যা সুনলি খাতুন, জামাই দানিশ শেখ এবং নাবালক নাতি সাবির শেখকে আটক করেছে দিল্লি পুলিশ। কাজের সূত্রে তাঁরা দিল্লির রোহিনী এলাকায় থাকতেন। সেখানে বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য তাঁদের আটক করা হয়। আইনজীবীর বক্তব্য শোনার পর আদালত জানায়, এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ভারতীয় সংবিধানের ২২৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, হিবিয়াস কর্পাসে রুল জারি করার ক্ষমতা আদালতের রয়েছে। এমনকি, তা অন্য রাজ্যের ঘটনা হলেও। এ বিষয়ে তাই আদালত নীরব দর্শক হয়ে থাকতে পারে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত নথি দিয়ে আদালতে জানাতে হবে, কেন আটক করা হয়েছিল।

যে ছ’টি প্রশ্নের জবাব শাহের মন্ত্রকের কাছ থেকে চাওয়া হয়েছে, সেগুলি হল—

Advertisement

১) দানিশ, তাঁর স্ত্রী এবং সন্তানকে আটক করা হয়েছিল? না কি তাঁরা নিখোঁজ?

২) আটক করা হলে বলতে হবে, তা কোনও আদালতের নির্দেশে হয়েছে কি না।

৩) যদি আটক করা হয়ে থাকে, তবে কেন করা হয়েছে?

৪) আটক করার আগে কি দানিশ বা তাঁর স্ত্রীকে আটকের কারণ জানানো হয়েছিল?

৫) দিল্লি পুলিশ বা অন্য কোনও তদন্তকারী সংস্থা কি তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত করছে? সেই কারণে গ্রেফতার?

৬) এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং দিল্লির প্রশাসনের মধ্যে কি কোনও কথাবার্তা হয়েছে?

উল্লেখ্য, বীরভূমের পাইকরের ছ’জন পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলাদেশি সন্দেহে দিল্লিতে আটক করা হয়েছিল। অভিযোগ, তার পর তাঁদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে আদালতে জানান মামলাকারীর আইনজীবী। দুই পরিবার সূত্রে খবর, গত মাসের ১৮ জুন দিল্লির রোহিনী পুলিশ জেলার কে. এন কাটজু থানা এলাকায় ছ’জনকে আটক করা হয়। তার পর তাঁরা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জানান, বাংলাদেশি সন্দেহে তাঁদের আটক করেছে দিল্লি পুলিশ। দ্রুত পরিবারের সদস্যেরা দিল্লিতে পৌঁছোন। থানা থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশি সন্দেহে যাঁদের আটক করা হয়েছিল, তাঁদের বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের ‘পুশ ব্যাক’ করিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের কোথা থেকে তাঁদের ‘পুশ ব্যাক’ করানো হয়েছে, সে বিষয়ে কোনও তথ্য জানানো হয়নি। রাজ্য শ্রম দফতরের সঙ্গেও যোগাযোগ করে শ্রমিকদের পরিবার। মামলাটি হাই কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। আদালত জানিয়েছে, দিল্লির মুখ্যসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে। তাঁর সঙ্গে কথা বলে সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য আদালতে পেশ করবেন মনোজ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement