—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প রাজ্যের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। রাজ্য চাইলে তা গ্রহণ করতে পারে। তারা না চাইলে করবে না। কেন্দ্রের সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষকদের বেতন সংশোধনের কর্মসূচি সম্পর্কে মঙ্গলবার মন্তব্য কলকাতা হাই কোর্টের। বিচারপতি শুভেন্দু সামন্ত এই মামলায় তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, কেন্দ্রীয় প্রকল্প রাজ্যের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। রাজ্য তা গ্রহণ না করলে আদালত জোর করতে পারে না। বেতন নিয়ে কলেজ শিক্ষকদের মামলাটি খারিজ করে হাই কোর্ট জানায়, বেতন কাঠামো ও বাস্তবায়ন রাজ্যের নীতিগত সিদ্ধান্তে। সেখানে আদালত হস্তক্ষেপ করবে না।
২০১৭ সালের ২ নভেম্বর কেন্দ্র সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষকদের বেতন সংশোধনের একটি কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। ওই প্রকল্প অনুযায়ী ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হওয়ার কথা। রাজ্য ওই প্রকল্প গ্রহণ করলেও নির্দিষ্ট সময়ে কার্যকর করেনি অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে মামলা করেন কলেজ শিক্ষক সুরন্ত গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর আইনজীবী কল্লোল বসুর সওয়াল, রাজ্য সরকার সেই নতুন বেতন কাঠামো গ্রহণ করেছে। কিন্তু তা ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। অর্থাৎ, চার বছর ধরে আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
রাজ্য সরকারের আইনজীবী সোমনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের যুক্তি, কেন্দ্রের ওই প্রকল্প আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রহণ করা হয়নি। কেন্দ্র কোনও সাহায্য না দেওয়ায় পুরো খরচ রাজ্যকে বহন করতে হচ্ছে। তাই কবে থেকে কার্যকর হবে, তা রাজ্যের নীতিগত সিদ্ধান্ত। দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত জানায়, রাজ্য চাইলে শিক্ষকদের জন্য কেন্দ্রের নতুন বেতন কাঠামো নিতে পারে। তবে সেটা বাধ্যতামূলক নয়। কারণ, ২০১৬–২০১৯ সাল পর্যন্ত ৫০ শতাংশ খরচ দেবে কেন্দ্র, তার পরে। পুরোটা রাজ্যকে বহন করতে হবে। ফলে রাজ্যের আর্থিক দায় একান্তই তাদের। রাজ্যের সিদ্ধান্ত বেআইনি নয়। আদালত মনে করছে ওই শিক্ষকদের দাবি গ্রহণযোগ্য নয়। তাই এই মামলাটি খারিজ করা হল। প্রসঙ্গত এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হবে সপ্তম বেতন কমিশনের মেয়াদ। গত জানুয়ারিতে অষ্টম বেতন কমিশনের ঘোষণা করেছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার।