Calcutta High Court

শহরের স্কুলে ভিড়, শিক্ষকের অভাব গ্রামের স্কুলে! সরকারকে বদলি-নীতি তৈরি করতে বলল আদালত

হাই কোর্টের শুনানিতে উঠে এসেছে কলকাতা বা তার আশপাশে ১১৫টি স্কুলে আছে যেখানে ৫০০ জনের বেশি শিক্ষক রয়েছেন। অথচ ওই স্কুলগুলিতে পড়ুয়ার সংখ্যা খুবই কম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ ২১:২২
Share:

বিচারপতি বিশ্বজিত বসু। ফাইল চিত্র।

কলকাতা বা তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় শিক্ষকদের বদলি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করল কলকাতা হাই কোর্ট। অনেক স্কুলে শিক্ষকের ঘাটতি নিয়েও বুধবার রাজ্যের সমালোচনা করেছে উচ্চ আদালত। শিক্ষক বদলি নিয়ে কোনও নীতি তৈরি করা যায় কি না, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়কে ডেকে তা জানতে চান বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। পাশাপাশি, নতুন শিক্ষক নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। পরে এজি এসে জানান, ছাত্র ও শিক্ষকের আদর্শ অনুপাত কত হওয়া উচিত, তা নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা চলছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। সেখান থেকে তথ্য সামনে আসবে।

Advertisement

বাড়ির কাছের স্কুলে বদলি চেয়ে হাই কোর্টে মামলা করেন এক শিক্ষক। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, সম্প্রতি এমন অনেক মামলার বিচার চলছে। নানা অজুহাতে সবাই বাড়ির কাছের কোনও স্কুলে বদলি চাইছেন। কেউ কেউ আবার নির্দিষ্ট করে স্কুলের নামও বলে দিচ্ছেন। রাজ্য অনেক ক্ষেত্রে বদলি করে দিচ্ছে। আবার অনেকে বদলির আবেদন নিয়ে আদালতে আসছেন। পরে দেখা যাচ্ছে অনেক মামলায় বদলি নেওয়ার পিছনে কোনও কারণ নেই। শুধুমাত্র বাড়ির কাছে থাকতেই বদলির আবেদন করছেন ওই শিক্ষকরা। এই পুরো বিষয়টি নজরে আসতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি বসু। তাঁর মন্তব্য, “শিক্ষকরা যদি এমন করেন পড়ুয়াদের কী হবে? এটা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।” তিনি আরও বলেন, “সকালে এমন এক জন শিক্ষককে বলতে শুনলাম, যিনি স্কুলের নাম বলে দিচ্ছেন কোথায় বদলি হতে চান। সেখানে গিয়ে তিনি নাকি ছাত্র পড়াবেন। এটা কিন্তু চিন্তার বিষয়!”

হাই কোর্টের শুনানিতে উঠে এসেছে কলকাতা বা তার আশেপাশে ১১৫টি স্কুলে আছে যেখানে ৫০০ জনের বেশি শিক্ষক রয়েছেন। অথচ ওই স্কুলগুলিতে পড়ুয়ার সংখ্যা খুবই কম। কোথাও কোথাও এক জন পড়ুয়াও নেই। এর প্রেক্ষিতে এজির উদ্দেশে বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘আপনাদের যদি মনে হয় শিক্ষক বেশি হয়ে গিয়েছে। তা হলে নতুন নিয়োগ করছেন কেন?’’ এর পরই রাজ্যকে এমন ধরনের বদলির বিষয়ে নীতি তৈরির পরামর্শ দিয়েছে হাই কোর্ট। অন্য দিকে, গ্রামের অনেক স্কুলে শিক্ষক না থাকার কারণে পড়ুয়ারা সঠিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও আদালতের নজরে উঠে আসে। বিচারপতি বসুর মতে, ছাত্র আছে, শিক্ষক নেই! এমন হলে বাড়তি শিক্ষকদের পড়ুয়াদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হোক। এই প্রসঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, “প্রয়োজনে এর জন্য নীতি তৈরি করতে সরকারের বাধা কোথায়?”

Advertisement

আদালতের এই যুক্তির পর এজি জানান, রাজ্য সব সময় চায় ভাল শিক্ষক নিয়োগ করতে। এই ধরনের বদলির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। পাল্টা বিচারপতি বলেন, “হ্যাঁ, একটা কিছু করুন। এত বদলি হলে গ্রামের স্কুল খালি হয়ে যাবে। সবাই শহরে আসতে চায়। আপনারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভেবে দেখুন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন