অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) স্টেশনে টানা দশ দিন ধরে অভিযান চালাল সিবিআই।
অভিযানের শুরু হয় আচমকা হানা দিয়ে। তারপর প্রতিদিন নানা সময়ে এনজেপি স্টেশনে এসে নানা নথি সংগ্রহ করেন সিবিআই অফিসাররা। বিহারের কিসানগঞ্জ স্টেশনেও সিবিআই তল্লাশি হয়েছে।
যাত্রী হোক অথবা পণ্য, মোটা টাকা দিলে ভিড়ে ঠাসা ট্রেনেও সহজেই ‘বুকিং’ মিলে যাওয়ার অভিযোগ এনজেপি স্টেশনে নতুন নয়। সেই অভিযোগের গোড়ায় পৌঁছতেই সিবিআই-এর দল অর্তকিতে এনজেপি স্টেশনের বুকিং অফিসে পৌঁছে যায় বলে মনে করা হচ্ছে। সিবিআই-এর তরফে রেলকে একটি রিপোর্টও দেওয়া হয়েছে। অভিযানের পরে টানা দশদিন এনজেপিতেই ছিলেন সিবিআইয়ের তদন্তকারী দল। টিকিট পরীক্ষকদের অফিস থেকে সংগ্রহ করেছে বেশ কয়েকজন কর্মী-আধিকারিকদের জীবনপঞ্জি তথা বায়োডেটাও সংগ্রহ করেছে দলটি।।
সিবিআই সূত্রের খবর, বুকিং অফিস থেকে এক বান্ডিল নোট মিলেছে। জেরায় জানা গিয়েছে, সেই টাকা রেলেরই কাউকে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। সেই দাবিও আপাতত যাচাই করছে রেল। বুকিং অফিসে হানার সময়ে কাগজে কলমে যত টাকা সরকারি সিন্দুকে নগদে জমা থাকার কথা ছিল, তার থেকে অনেক কম টাকা জমা হয়েছিল।
অভিযানের সময় কয়েকজন কর্মী-অফিসারের জীবনপঞ্জি নিয়েছে সিবিআই। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের তরফে সিবিআই হানার কথা স্বীকার করলেও হিসেব বর্হিভূত টাকা উদ্ধার অথবা কোনও অসঙ্গতির কথা মানতে চায়নি রেল। কাটিহার বিভাগের বুকিং সহ বাণিজ্যিক বিষয় দেখভালের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র ডিভিশনাল কর্মাশিয়াল ম্যানেজার বীরেন্দ্র মিশ্র দাবি করেন, ‘‘সিবিআই তল্লাশি রুটিন ঘটনা। যে অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে তা ঠিক নয়।’’
রেল সূত্রের খবর, সিবিআই জানিয়েছে কী ধরনের অভিযোগ তারা পেয়েছে। প্রথমত, টিকিট বুকিঙের ক্ষেত্রে একাধিক অনিয়ম। প্রবল চাহিদার সময়ে মোটা টাকা নিয়ে এনজেপি এবং কিষানগঞ্জ দুই স্টেশনেই পণ্য বুকিং করা হয় বলে অভিযোগ। দ্বিতীয়ত, কোনও বুকিং বাতিল হলে যত টাকা ফেরত দেওয়ার কথা তার থেকে অনেক কম টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তৃতীয়ত, বুকিং অফিসে বসেই অনিয়ম চলে বলে অভিযোগ ছিল। এমনই অভিযোগের ভিত্তিতেই স্টেশনে হানা দেয় সিবিআই।