ফাইল চিত্র।
ঘটনাচক্রে দু’জনেই পরিবহণমন্ত্রী। এক জন প্রাক্তন এবং অন্য জন বর্তমান। নারদ স্টিং অপারেশনে টাকা নেওয়ার অভিযোগের তদন্তে এ বার রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র ও বর্তমান পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে তলব করল সিবিআই।
তৃণমূল নেতা মদনবাবু সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে দীর্ঘদিন জেল খেটেছেন। তবে নারদ-কাণ্ডে এই প্রথম ডাক প়ড়ল তাঁর। আগামী শুক্রবারের মধ্যে তাঁকে নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের দফতরে হাজির হতে বলা হয়েছে। ওই দিনের মধ্যে শুভেন্দুবাবুকেও হাজির হতে বলে নোটিস দিয়েছে সিবিআই। আজ, বুধবারেই তিনি হাজিরা দেবেন বলে মঙ্গলবার জানান মদনবাবু।
নারদ-কর্তা ম্যাথু স্যামুয়েলের স্টিং অপারেশনে তৃণমূলের যে-তেরো জন নেতা-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, সেই তালিকায় প্রাক্তন-বর্তমান দুই পরিবহণমন্ত্রীরই নাম আছে। স্টিং অপারেশনের ভিডিও ফুটেজে ম্যাথুর কাছ থেকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে মদনবাবু এবং শুভেন্দুবাবুকে। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি এর আগে শুভেন্দুবাবুকে ডেকে এক বার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিন্তু ইডি বা সিবিআই কেউই এত দিন মদনবাবুকে ডাকেনি। এই প্রথম তাঁর তলব পড়ল। মঙ্গলবার মদনবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি বুধবারেই সিবিআই দফতরে যাবো।’’
পরিবহণমন্ত্রী থাকাকালীন সারদা কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছিলেন মদনবাবু। পরে তাঁর মন্ত্রিত্ব চলে যায়। শুভেন্দুবাবু পরিবহণমন্ত্রী হন তাঁর জায়গাতেই। জেলে থাকাকালীনই ২০১৬ সালে কামারহাটি থেকে বিধানসভা নির্বাচনে লড়েন মদনবাবু। কিন্তু হেরে যান। পরে জামিনে ছাড়া পান। তবে সেই নির্বাচনের আগেই প্রকাশ্যে আসে নারদ-কাণ্ড। ২০১৪ সালে কলকাতায় এসে পরিচয় আত্মগোপন করে স্টিং অপারেশন চালিয়েছিলেন ম্যাথু। তাঁর সেই অভিযানের ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে আসে ২০১৬ সালের মার্চে। সারদা মামলায় মদনবাবু তখন জেলে।
নারদের তদন্তে নেমে একে একে অভিযুক্ত ১৩ জন নেতানেত্রীকেই ডেকে পাঠাচ্ছে ইডি এবং সিবিআই। তাঁদের মধ্যে তৃণমূল সাংসদ সুলতান আহমেদ সম্প্রতি মারা গিয়েছেন। মৃত্যুর আগে ইডি এবং সিবিআই দুই তদন্তকারী সংস্থাই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। অভিযুক্তদের মধ্যে সাত জনকে ইডি জেরা করলেও মদনবাবু এবং মুকুল রায়-সহ আরও ছ’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। যে-সাত জনকে জেরা করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আছেন শুভেন্দুবাবুও। তিন বার তলবের পরে সোমবার ইডি দফতরে হাজিরা দেন তিনি। ম্যাথুর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে শুভেন্দুবাবু জানান, সেই টাকা তিনি ভোটে খরচ করেছিলেন। সেই সংক্রান্ত নথি ইডি-তে জমা দিয়েছেন তিনি। এ বার সিবিআইয়ের পালা। তবে তাদের তলবি নোটিসের ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি শুভেন্দুবাবু।