ছোট ছোট বিমানবন্দর সামলাবে ভ্রাম্যমাণ এটিসি-ই

বার্নপুরের মতো বহু ছোট বিমানবন্দরে এটিসি টাওয়ার নেই। সেখানে উড়ান নিয়ন্ত্রণ করবে কে?

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৪
Share:

নজরদার: এ ভাবেই ছোট লরির উপর ঘুরে বেড়াবে মোবাইল বা ভ্রাম্যমাণ এটিসি টাওয়ার। নিজস্ব চিত্র

তারা থাকে মাটিতে। তবে সেই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এর হাতেই থাকে আকাশপথের যাবতীয় নিয়ন্ত্রণ। অথচ বার্নপুরের মতো বহু ছোট বিমানবন্দরে এটিসি টাওয়ার নেই। সেখানে উড়ান নিয়ন্ত্রণ করবে কে?

Advertisement

ওই সব বিমানবন্দরের জন্য মোবাইল বা ভ্রাম্যমাণ এটিসি টাওয়ার কিনছে কেন্দ্র। ‘উড়ে দেশ কা আম নাগরিক’। অর্থাৎ সাধারণ মানুষও যাতে আকাশপথে যাতায়াত করার সুযোগ পান, সেই জন্য ‘উড়ান’ প্রকল্প হাতে নিয়েছে তারা। সেই প্রকল্পে প্রত্যন্ত ছোট ছোট শহরেও তৈরি হচ্ছে বিমানবন্দর। কলকাতা ও বার্নপুরের মধ্যে ছোট বিমান পরিষেবা শুরু হচ্ছে ওই প্রকল্পের অধীনেই। এই সব ক্ষেত্রে উড়ানের নিয়ন্ত্রণী ভূমিকা নেবে ভ্রাম্যমাণ এটিসি টাওয়ার।

স্থায়ী এটিসি টাওয়ারের বন্দোবস্ত না-করে ভ্রাম্যমাণ টাওয়ার কেন?

Advertisement

মূলত দু’টি কারণের কথা বলেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তারা। ‘‘ছোট ছোট বিমানবন্দর থেকে সপ্তাহে হয়তো মাত্র দু’তিন দিন উড়ান চলবে। তার জন্য সেখানে কোটি টাকারও বেশি খরচ করে পাকাপাকি এটিসি টাওয়ার তৈরি করার যুক্তি নেই,’’ বলছেন বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান গুরুপ্রসাদ মহাপাত্র। তিনি জানান, ইতিমধ্যেই ১০টি ভ্রাম্যমাণ এটিসি টাওয়ার এসেছে তাঁদের হাতে।

বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের অনেক কর্তার বক্তব্য, উড়ান প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে যে-সব প্রত্যন্ত শহরে উড়ান শুরু হচ্ছে, আগামী দিনে যাত্রীর অভাবে তার কোথাও কোথাও সেই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই প্রকল্পে প্রথম তিন বছর ভর্তুকি পাবে বিমান সংস্থা। ভর্তুকি বন্ধের পরে উড়ান বন্ধ হয়ে গেলে বিমানবন্দর অকেজো হয়ে যাবে। তাই সরকার প্রচুর খরচ করে ওই সব জায়গায় স্থায়ী এটিসি টাওয়ার চাইছে না।

গুরুপ্রসাদ জানান, ছোট শহর থেকে হয়তো সপ্তাহে সোম ও বুধবার একটি করে উড়ান চলবে। সেখানে ওই দু’দিন বিমান ওঠানামার আগে পৌঁছে যাবে ভ্রাম্যমাণ টাওয়ার। ছোট লরির উপরে তৈরি এই টাওয়ারে এটিসি-র কাজ সামলানোর জন্য সব ধরনের যন্ত্রপাতি থাকবে। থাকবে ‘ভেরি হাই ফ্রিকোয়েন্সি’ বা ভিএইচএফ ব্যবস্থাও। তার সাহায্যে সেই এটিসি-র অফিসার ওই বিমানবন্দরে নামা বা সেখান থেকে ওড়া বিমানের পাইলটের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করতে পারবেন।

সব ছোট বিমানবন্দরে ওঠা-নামার জন্য আধুনিক ইনস্ট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম (আইএলএস)-ও বসানো হবে না। সে-ক্ষেত্রে টাওয়ারে থাকা এটিসি অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করে রানওয়ে পরিষ্কার দেখতে পেলে তবেই নামতে পারবে বিমান। এক কর্তার কথায়, ‘‘ভ্রাম্যমাণ টাওয়ারে যে-অফিসার থাকবেন, তিনি একটি মোবাইল ফোন পাবেন। যাতে তিনি নিকটবর্তী বড় বিমানবন্দরের এটিসি-র সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করতে পারেন। ছোট বিমানবন্দরে কখন কোন বিমান নামবে, নিকটবর্তী বড় বিমানবন্দরের এটিসি থেকে এটিসি অফিসার সেটা আগেভাগেই জেনে নিতে পারবেন।’’

‘‘উড়ান প্রকল্পে অনেক ক্ষেত্রেই ছোট দু’টি বিমানবন্দরের মধ্যে দূরত্ব খুব বেশি নয়। যদি দেখা যায়, একটি বিমানবন্দর থেকে সপ্তাহে সোম ও বুধ এবং কাছাকাছি অন্য বিমানবন্দর থেকে মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার উড়ান পরিষেবা চালু হচ্ছে, তা হলে একটি ভ্রাম্যমাণ এটিসি টাওয়ার দিয়েই দু’জায়গায় কাজ চালিয়ে নেওয়া যাবে,’’ বলছেন গুরুপ্রসাদ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন