সোমবার ছটপুজোর অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
ছটপুজোর শুভ উপলক্ষে সোমবার তক্তাঘাটে অনুষ্ঠিত ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার ঐক্যের সংস্কৃতি অটুট রাখার অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেন, “আমি সবাইকে অনুরোধ করছি — নিরাপদে আসুন, নিরাপদে বাড়ি ফিরুন। যতক্ষণ না সবাই নিরাপদে ফিরে যাচ্ছেন, আমি সতর্ক ও চিন্তিত থাকব। সকলের মঙ্গল কামনা করি। সবাই সুখে ও সুস্থ থাকুন। আমাদের সব উৎসব একসঙ্গে পালন করা হয় — আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, এই ঐক্যের সংস্কৃতি আমি ধরে রাখব।”
প্রতি বছরের মতো এ বারও মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা বন্দর বিধানসভার দহিঘাট ও তক্তাঘাটের ছটপুজোর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। উৎসবের আবহে তিনি রাজ্যের সর্বস্তরের মানুষের প্রতি শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা দেন। পাশাপাশি তিনি সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, “সবাই গঙ্গার ধারে এসে তাঁদের পূজার্চনা করেন। জীবন অমূল্য — তাই নিশ্চিত করতে হবে যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে।” মমতা আরও বলেন, ভিড় নিয়ন্ত্রণই এই উৎসবের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। “সবচেয়ে কঠিন বিষয় হলো ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা এবং সবাই যেন নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন, তা নিশ্চিত করা। হোল্ডিং এরিয়াগুলিতে সব সময় নজরদারি রাখতে হবে। একদল পুজো করতে গেলে অন্য দল অপেক্ষা করবে, তারপর একে একে সবাই নিয়ম মেনে যাবে।”
মমতা বলেন, ‘‘গঙ্গাপুজো ও ছটপুজোর মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় এই পুজো হয়। অনেক জায়গায় পুজো করা সম্ভব হয় না, তাই আমরা অনেক নতুন ঘাট তৈরি করেছি। কোথাও কোথাও আইনশৃঙ্খলার সমস্যা দেখা দেয়, কিন্তু আমরা সবসময় চেষ্টা করি যাতে সবকিছু শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন হয়।’’ তিনি আরও বলেন, "মানুষ তাঁদের পরিবার নিয়ে এখানে আসেন — ঠেকুয়া, কলা ও অন্যান্য নৈবেদ্য নিয়ে। আমাদের সরকার ছটপুজোর জন্য দু’দিন ছুটি ঘোষণা করেছে — আজ ও কাল — যাতে সবাই শান্তিপূর্ণ ভাবে উৎসব পালন করতে পারেন। আপনারা আপনাদের পূজার্চনা চালিয়ে যান। আমি নিজেও নানা রকম পুজো করি। গত ২৫-৩০ বছর ধরে আমি এই ছটপুজো অনুষ্ঠানে এসে থাকি। দইঘাটে এই অনুষ্ঠানে আমাকে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।"
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘স্বেচ্ছাসেবকদের সব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কোনও সমস্যার খবর পেলে তা সঙ্গে সঙ্গে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে এবং প্রয়োজনে জনসাধারণকে জানাতে হবে। যেমন গঙ্গাসাগর মেলায় প্রচুর মানুষ আসেন, তেমনি ছটপুজোতেও অনেক মানুষ পরিবার নিয়ে আসেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘স্বেচ্ছাসেবক, পুলিশ, স্বাস্থ্য দফতর, পুরসভা ও দমকল — সবাই একযোগে কাজ করছে যাতে উৎসব নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়।’’ তক্তাঘাটের বক্তৃতা শেষে ছটপুজো নিয়ে তাঁর লেখা একটি হিন্দি গানের কথারও উল্লেখ করেছেন মমতা।