এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। — প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
গভীর রাতে মশারি কেটে ঘুমন্ত শিশুকন্যাকে তুলে নিয়ে গিয়ে অত্যাচারের অভিযোগ উঠল হুগলির তারকেশ্বরে। শনিবার রাতে খবরটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে প্রথমে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতাল এবং পরে থানার সামনে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিজেপি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার ভোরে তারকেশ্বর স্টেশন চত্বরে আশ্রয় নেওয়া চার বছরের এক শিশুকন্যাকে ঘুমন্ত অবস্থাতেই মশারি কেটে তুলে নিয়ে যান অভিযুক্ত। এর পর শিশুটির উপর যৌন নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ। ‘নির্যাতিতা’ শিশুটির পরিবারের দাবি, শনিবার ভোর থেকে মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সারা সকাল বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন তাঁরা। শেষমেশ দুপুরে স্টেশন সংলগ্ন একটি নর্দমা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে। তার যৌনাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। গালে কামড়ের ক্ষত ছিল। শরীরের একাধিক অংশে ছিল আঘাতের চিহ্ন। কিন্তু অভিযোগ, প্রথমে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর শিশুটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এর পর দুপুরেই শিশুটিকে নিয়ে পুলিশের কাছে যায় শিশুটির পরিবার। কিন্তু থানা থেকেও তাঁদের চলে যেতে বলা হয় বলে অভিযোগ। শেষমেশ সন্ধ্যার দিকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। এই টালবাহানা নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালের ভিতরেই বিক্ষোভ দেখান বিজেপির নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি, শুরুতেই কেন হাসপাতাল থেকে পুলিশে খবর দেওয়া হল না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, চার বছরের শিশুটির উপর অত্যাচার চালানোর অভিযোগ পেয়েও শুরুতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করেনি পুলিশ। যে বা যারা এটি ঘটিয়েছে, তাদের খুঁজে বের করে কড়া শাস্তি দিতে হবে। যদিও তারকেশ্বর থানার পুলিশের দাবি, শিশুটির পরিবারের তরফে মৌখিক অভিযোগ পেয়েই তদন্ত শুরু হয়। শিশুটির শারীরিক পরীক্ষারও ব্যবস্থা করা হয়। শীঘ্রই দোষীদের শনাক্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
এ বিষয়ে তারকেশ্বরের বিধায়ক রামেন্দু সিংহ রায় বলেন, ‘‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। যে জায়গায় ঘটনাটি ঘটেছে সেটি রেল পুলিশের অন্তর্গত। আমার মনে হয় রেল পুলিশের দেওয়া নিরাপত্তার যথেষ্ট অভাব রয়েছে।’’ বিজেপি আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক পর্ণা আদক বলেন, ‘‘আজ পশ্চিমবঙ্গে নারীদের সুরক্ষা নেই। একটা চার বছরের শিশুরও নিরাপত্তা নেই। আমরা চাই এর সঠিক বিচার হোক।’’ আপাতত ‘নির্যাতিতা’ ওই শিশুকন্যাকে চন্দননগর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। দোষীদের খোঁজে শুরু হয়েছে তদন্ত।