নীল তিমি থেকে রক্ষা গোয়েন্দার শুশ্রূষায়

ছাত্রটির সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ জমিয়ে খোশগল্প করছিলেন এডিজি (সিআইডি) রাজেশ কুমার। কথায় কথায় ওঠে ‘ব্লু হোয়েল’-এর কথা। ‘সাইবার-বন্ধু’ রাজেশকে হাত কেটে আঁকা নীল তিমি দেখান ছাত্রটি! বলেন, গেমের নেশাটা পেয়ে বসেছে। নাওয়া-খাওয়া ভুলেছেন তিনি!

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৭ ০৩:২৫
Share:

রক্তস্বাক্ষর: খেলার ছলে এ ভাবেই গ্রাস করে ‘নীল তিমি’।

পড়ছেন ইঞ্জিনিয়ারিং। কিন্তু পড়ে গিয়েছিলেন মারণ খেলা ‘ব্লু হোয়েল’ বা নীল তিমির ফাঁদে। খেলাটির অমোঘ আকর্ষণে তিনি যে ভয়াবহ পরিণতির দিকে শনৈ শনৈ এগিয়ে যাচ্ছিলেন, কবুল করেছেন নিজেই। শেষরক্ষা হয়েছে এক সিআইডি-কর্তার তৎপর মানসিক শুশ্রূষায়। সেই শুশ্রূষা এসেছে ভায়া ফেসবুক।

Advertisement

কী ভাবে দুঃসাধ্যসাধন করলেন গোয়েন্দা-কর্তা?

ছাত্রটির সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ জমিয়ে খোশগল্প করছিলেন এডিজি (সিআইডি) রাজেশ কুমার। কথায় কথায় ওঠে ‘ব্লু হোয়েল’-এর কথা। ‘সাইবার-বন্ধু’ রাজেশকে হাত কেটে আঁকা নীল তিমি দেখান ছাত্রটি! বলেন, গেমের নেশাটা পেয়ে বসেছে। নাওয়া-খাওয়া ভুলেছেন তিনি!

Advertisement

পরিস্থিতি যে ঘোরালো, বুঝতে দেরি হয়নি রাজেশের। গল্পের ছলেই শুরু করেন ওই ছাত্রের কাউন্সেলিং, মানসিক শুশ্রূষা। তিনি জানাচ্ছেন, সেই দাওয়াইয়েই মতি ফিরেছে ছাত্রটির। ‘নীল তিমি’ যে আদতে মৃত্যুর হাতছানি, তা বুঝেছেন তিনি।

আরও পড়ুন:বৈঠকের আগে ফের ফতোয়া জারি গুরুঙ্গের

‘ব্লু হোয়েল’ নিয়ে নিজের ফেসবুক দেওয়ালে সতর্কতা প্রচার করছেন রাজেশ। তা দেখেই একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের রেজিস্ট্রার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বলেন, একটি ছাত্রের আচরণ সন্দেহজনক। হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে, নীল তিমির খপ্পরে পড়েছেন ওই পড়ুয়া। তার পরেই সাইবার-বন্ধু সেজে ওই পড়ুয়ার সঙ্গে ভাব জমান এ়ডিজি। সিআইডি সূত্রের খবর, ওই পড়ুয়া খেলার ‘এইটথ লেভেলে’ পৌঁছে গিয়েছিলেন। ভিডিও চ্যাটে ছাত্রটি জানান, সবে এক বার হাত কেটেছেন তিনি। পরের ধাপে আরও হাত কাটতে হবে। ঠোঁট কাটতে হবে। ওই পড়ুয়া স্বীকার করেন, সব ফেলে নীল তিমিতেই মজে থাকতেন তিনি।

সাইবার দুনিয়ায় ত্রাস হয়ে উঠেছে ব্লু হোয়েল। তার খপ্পরে পড়ে মারা গিয়েছে অনেকেই। মেদিনীপুরে এক স্কুলপড়ুয়া তো ভয় দেখাতেই নীল তিমির গল্প ফেঁদেছিল। এ-সব দেখেই বিশেষ সতর্ক হয়ে উঠেছেন সাইবার বিশেষজ্ঞেরা। সাক্ষাৎ-মৃত্যুর হাত থেকে ছেলেকে ফিরে পেয়ে পড়ুয়ার পরিবার, কলেজ কর্তৃপক্ষও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন গোয়েন্দা বিভাগকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন