Siddiqullah Chowdhury

মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লার ভোটে লড়ায় সংশয়ের মেঘ

সামাজিক সংগঠন জমিয়তে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে না। তাদের কোনও পদাধিকারী রাজনীতির ময়দানে নামলে বা সাংসদ-বিধায়ক হতে গেলে সংগঠনের ওয়ার্কিং কমিটির সম্মতি লাগে।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:৩০
Share:

—ফাইল চিত্র।

বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে নানা অঙ্ক কষা শুরু হয়েছে সব শিবিরেই। তার মধ্যেই রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর ফের প্রার্থী হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে শাসক শিবিরে। সিদ্দিকুল্লা আদৌ আবার ভোটে দাঁড়াবেন কি না বা দাঁড়ালেও তৃণমূলের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কি না, এই সব প্রশ্নই মাথাচাড়া দিয়েছে। তৃণমূল এখনও এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না নিলেও সংশয় তৈরি করেছে সিদ্দিকুল্লার মূল সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। তৃণমূলের বিধায়ক হওয়ার পরে তাঁর সঙ্গে এলাকায় শাসক দলের ‘অসহযোগিতা’ই সিদ্দিকুল্লাদের মূল অভিযোগ এবং তা নিয়েই সমস্যা।

Advertisement

সামাজিক সংগঠন জমিয়তে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে না। তাদের কোনও পদাধিকারী রাজনীতির ময়দানে নামলে বা সাংসদ-বিধায়ক হতে গেলে সংগঠনের ওয়ার্কিং কমিটির সম্মতি লাগে। তৃণমূলের বিধায়ক এবং রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি সিদ্দিকুল্লা এখন জমিয়তের রাজ্য সভাপতি। সেই জমিয়তের রাজ্য ওয়ার্কিং কমিটি আলোচনা করে এ বার ৭ সদস্যের বিশেষ কমিটি গড়েছে সিদ্দিকুল্লার ‘ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক গতিপথ’ নির্ধারণের জন্য। কমিটির আহ্বায়ক জমিয়তের রাজ্য সম্পাদক আব্দুস সালাম। ওয়ার্কিং কমিটির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘রাজ্য পর্যায়ে সভাপতি শীর্ষ পদ হলেও সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সর্বোচ্চ মঞ্চ ওয়ার্কিং কমিটিই। তাই জমিয়তের এই সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ’।

সিদ্দিকুল্লা তৃণমূলের ‘আদি নেতা’ নন, শাসক দলে তাঁর সাংগঠনিক প্রভাবও উল্লেখযোগ্য নয়। তবে জমিয়তের প্রভাব যে হেতু রাজ্যের নানা জায়গায় সংখ্যালঘু মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে আছে, তাই বিজেপি-বিরোধিতার ময়দানে তাঁর উপস্থিতি তৃণমূলের পক্ষে লাভজনক। সিদ্দিকুল্লা সরে দাঁড়ালে সেই অঙ্কেই তৃণমূলের অস্বস্তির কারণ হতে পারে। শাসক দলের এক শীর্ষ নেতা অবশ্য বলছেন, ‘‘কারা প্রার্থী হবেন, গত বারের বিজয়ীদের মধ্যে কোথাও কাউকে বাদ দেওয়া হবে কি না, এই সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। দলনেত্রী যথাসময়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। সিদ্দিকুল্লার এলাকায় কিছু সমস্যা আছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে দেখতে হবে।’’

Advertisement

সমস্যা কোথায়? সিদ্দিকুল্লা ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের অভিযোগ, তৃণমূলের টিকিটে ২০১৬ সালে মঙ্গলকোট থেকে বিধায়ক হলেও সেখানে শাসক দলের স্থানীয় নেতৃত্ব তার পরে তাঁর সঙ্গে কোনও সহযোগিতাই করেননি। বরং, পদে পদে সমস্যা তৈরি করেছেন। ওই কেন্দ্রের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক শাজাহান চৌধুরীরও দাবি, গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাকে এলাকার একটি লাইব্রেরি ছাড়া অন্য কোথাও কোনও কর্মসূচিতেই দেখা যায় না। করোনা এবং আমপান-পরবর্তী পরিস্থিতিতে সিদ্দিকুল্লারা রাজ্যের নানা জায়গায় প্রায় তিন কোটি টাকার ত্রাণসামগ্রী বিলি করেছেন জমিয়তের তরফেই। এমতাবস্থায় সিদ্দিকুল্লার বক্তব্য, ‘‘যে পরিস্থিতির মুখোমুখি আমাকে হতে হয়েছে, তার সুরাহা চেয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে বারবার আর্জি জানিয়েছি। এখন জমিয়তের কমিটি গোটা বিষয়টি বিবেচনা করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন