মুখ্যমন্ত্রী: বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
পাত্রেরা বদলাল। কিন্তু দলের অন্দরের দ্বন্দ্ব মেটানোর বার্তা দিতে ভুললেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
হাওড়ায় সভা করতে গিয়ে ধুলাগড়ের অশান্তির জন্য পাঁচলার তৃণমূল বিধায়ক গুলশন মল্লিক এবং সাঁকরাইলের বিধায়ক শীতল সর্দারের গণ্ডগোলের দিকে আঙুল তুলেছিলেন। বীরভূমে আঙুল উঠল নানুর লাগোয়া পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজের ভাই কাজল শেখ এবং নানুরের প্রাক্তন বিধায়ক গদাধর হাজরার দিকে।
বোলপুরে সোমবার প্রশাসনিক সভা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সাহানেওয়াজ তোমার ভাইকে, কাজলকে বলে দেবে ও যেন আর গণ্ডগোল (ফারদার প্রবলেম) না করে। আমি গদাধরকেও বলে যাচ্ছি।’’
গত বিধানসভা ভোটের আগে থেকে কাজল এবং গদাধরের গোষ্ঠীর সংঘর্ষ চলছে নানুরে। সাহানেওয়াজকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কাজলের নামে অনেক মামলা আছে। ওকে খুঁজছি। খবর আছে, ও গ্রামে আছে।’’ পরে কাজলের এক অনুগামী বলেন, ‘‘দাদা তৃণমূলেই আছেন, থাকবেন। জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল যেমন বলবেন, তেমনই হবে।’’
আরও পড়ুন:সুজনেরা এলেন কোন পথে, হতবাক পুলিশ
তৃণমূলের একাংশের ব্যাখ্যা, ব্যক্তি-স্বার্থ মেটাতে দলের কিছু নেতা এমন কিছু কাণ্ডে জড়াচ্ছেন, যাতে অস্বস্তিতে পড়ছে সরকার। পঞ্চায়েত ভোটের আগে সংশ্লিষ্টদের সমঝে চলতে বলে ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের কাজটা এগোতে চাইলেন নেত্রী।
নদিয়া এবং হাওড়ার প্রশাসনিক বৈঠকে আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে পুলিশ-প্রশাসনকে এক হাত নিয়েছিলেন। এ দিন পুলিশের প্রতি তাঁর নির্দেশ, ‘‘পাড়ুই বলুন, নানুর বলুন, আমি শুনেছি, দিল্লির শাসক দলের লোকেরা বাইরে থেকে লোক নিয়ে আসছে। পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডিএসপি, আইজি, ডিজি— সকলকেই বলছি চোখ-কান খোলা রাখুন। বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার করুন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘গুন্ডাগিরি চলবে না। গায়ের জোরে তরোয়াল দিয়ে এলাকা দখলও চলবে না।’’ যা নিয়ে সিপিএমের বীরভূম জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদার কটাক্ষ, ‘‘কাজলের খোঁজ যদি মুখ্যমন্ত্রী জেনেই থাকেন, তা হলে গ্রেফতার করছেন না কেন?’’ বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহের টিপ্পনী, ‘‘বাইরে থেকে অস্ত্র নিয়ে লোক এ রাজ্যে আসছে মানে পুলিশমন্ত্রী হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী ব্যর্থ।’’