কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ফের সরব মমতা। বৃহস্পতিবার।— ছবি: পিটিআই।
নানা ক্ষেত্রে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাজ্যকে বঞ্চনার অভিযোগ করে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিক্ষায় বরাদ্দ নিয়েও সেই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এ বার জাতীয় পুরস্কারেও পশ্চিমবঙ্গ বঞ্চনার শিকার বলে অভিযোগ তুলল শিক্ষক শিবির। তাদের অভিযোগ, এটা বৈষম্য। এটা বঞ্চনা। সর্বোপরি এটা ‘আমরা-ওরা’ রাজনৈতিক বিভাজনের প্রমাণ।
পুরস্কার ঘোষণা এখনও অনেক দূরের ব্যাপার। ওই অভিযোগ উঠছে নাম পাঠানোর পর্বেই। শিক্ষকদের জাতীয় পুরস্কারের জন্য কোন রাজ্য থেকে ক’জন মনোনয়ন পাবেন, তার নতুন নির্দেশ প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কেরল, পঞ্জাব, রাজস্থানের মতো রাজ্য এই পুরস্কারের জন্য ছ’জন শিক্ষকের নাম পাঠাতে পারবে। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা মাত্র তিন!
বাংলার শিক্ষকজগতের একাংশের অভিযোগ, এটা বৈষম্য এবং এই বৈষম্য তৈরি করে রাজ্যকে বঞ্চনা করছে কেন্দ্র। ২০১০ সালে এই রাজ্য থেকে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন সারদাপ্রসাদ ইনস্টিটিউশনের সেই সময়কার প্রধান শিক্ষক নবকুমার কর্মকার। তিনি পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির নেতাও। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি খুবই অপমানজনক। এই নিয়ে রাজ্যের তরফে প্রতিবাদ করা উচিত।’’ তিনি জানান, রাজ্য থেকে এই পুরস্কার পেতেন ২৩ জন। সেখানে এ বার মাত্র তিন জনের নাম পাঠাতে বলা হচ্ছে! হতবাক হয়ে গিয়েছেন ২০১৬ সালের জাতীয় পুরস্কারজয়ী, হিন্দু স্কুলের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক তুষারকান্তি সামন্ত। তিনি বলেন, ‘‘এমন সিদ্ধান্তের পিছনে কী কারণ থাকতে পারে, সেটা খুঁজে বার করা দরকার।’’ বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডলের বক্তব্য, শিক্ষকদের সম্মান জানানোর ক্ষেত্রে কেন্দ্রের ‘আমরা-ওরা’ নীতি সমর্থনযোগ্য নয়। এটি অত্যন্ত নেতিবাচক সিদ্ধান্ত।
মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, গোটা দেশে ৫০ জন শিক্ষককে জাতীয় পুরস্কারের জন্য বেছে নেওয়া হবে। নতুন নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা যদি অবসরের আগে, ২০১৭-’১৮ সালের শেষ চার মাস ক্লাস করে থাকেন, তা হলে তাঁরাও এই পুরস্কারের জন্য আবেদন করতে পারবেন। সরকারি স্কুলের শিক্ষকেরা সরাসরি নিজেরাই অনলাইনে আবেদন করতে পারেন। মনোনীত শিক্ষকদের চূড়ান্ত পর্যায়ে জুরি বোর্ডের সামনে ‘প্রেজেন্টেশন’ দিতে হবে।
আরও পড়ুন: কেউ বাড়ি করলে তোমাকে টাকা দেবে কেন? ভরা সভায় এক নেতাকে ধমক মমতার