Migrant Labor Death in Odisha

‘আধার কার্ড দেখতে চেয়েছিল ওরা’! বাঙালি শ্রমিকের হত্যায় ওড়িশা সরকারের ‘বিড়ি’-তত্ত্ব মানছেন না প্রত্যক্ষদর্শী সহকর্মী

মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা জুয়েল শেখ ওড়িশায় পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন। বুধবার রাতে তাঁকে পিটিয়ে খুন করা হয়। অভিযোগ, বাংলায় কথা বলার কারণে বাংলাদেশি সন্দেহেই এই হত্যাকাণ্ড।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:০০
Share:

মুর্শিদাবাদের জুয়েল শেখ নিহত ওড়িশায়। তাঁর বাড়িতে বৃহস্পতিবার গিয়েছিলেন স্থানীয় বিধায়ক এবং পুলিশকর্তারা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ওড়িশায় মুর্শিদাবাদের পরিযায়ী শ্রমিককে পিটিয়ে খুন করার আগে তাঁর কাছে আধার কার্ড দেখতে চাওয়া হয়েছিল। এমনটাই দাবি করলেন প্রত্যক্ষদর্শী আর এর শ্রমিক। তিনি ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন এবং হামলাকারীদের হাতে মার খেয়েছেন। মুর্শিদাবাদেরই বাসিন্দা মাজার খান। নিহত জুয়েল শেখের সঙ্গে ওড়িশায় কাজ করতে গিয়েছিলেন তিনি। সংবাদসংস্থা পিটিআইকে তিনি ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। দাবি, মারধরের আগে তাঁদের কাছ থেকে আধার কার্ড দেখতে চেয়েছিলেন হামলাকারীরা। চাওয়া হয়েছিল বিড়িও।

Advertisement

ওড়িশায় নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জুয়েলরা। বুধবার রাতে স্থানীয় একদল যুবকের সঙ্গে তাঁদের ঝামেলা হয়। বচসা গড়ায় হাতাহাতিতে। অভিযোগ, জুয়েলকে পিটিয়ে খুন করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল দাবি করেছে, বাংলায় কথা বলার কারণেই বাংলাদেশি সন্দেহে এই হত্যাকাণ্ড। এর জন্য বিজেপির ‘বাংলাবিরোধী প্রচার’কে দুষেছে তারা। তবে ওড়িশার পুলিশ বৃহস্পতিবার জানিয়ে দেয়, বাংলা বা বাংলাদেশের সঙ্গে এই খুনের কোনও সম্পর্ক নেই। বিড়ি নিয়ে ঝামেলার কারণে জুয়েলকে খুন করা হয়েছে। ঘটনায় অভিযুক্ত ছ’জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

জুয়েলের সহকর্মী মাজার ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘ওরা প্রথমে আমাদের কাছে বিড়ি চাইল। তার পর আধার কার্ড দেখাতে বলল। পরে জুয়েলের মাথায় ওরা ভারী জিনিস দিয়ে জোরে আঘাত করে।’’ সম্বলপুরের হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় জুয়েলের।

Advertisement

অপর এক প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিক নিজ়ামুদ্দিন খান দাবি করেছেন, তাঁদের বার বার ‘বাংলাদেশি’ বলে সম্বোধন করা হচ্ছিল। বাংলায় কথা বলার কারণেই তাঁদের ‘বাংলাদেশি’ ধরে নেওয়া হয়। জুয়েল ছাড়াও অন্য পরিযায়ী শ্রমিকেরা সম্বলপুরে মার খেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দু’জন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

যদিও ওড়িশা পুলিশের দাবি, ঘটনার সঙ্গে বাংলায় কথা বলার কোনও যোগ নেই। আইজিপি হিমাংশু কুমার লাল বলেন, ‘‘নিহত বাঙালি বা বাংলাদেশি ছিলেন কি না, তার সঙ্গে এই খুনের কোনও সম্পর্ক নেই। বিড়ি নিয়ে গোলমালের কারণে তাঁকে খুন করা হয়েছে।’’ ওড়িশার পুলিশের আর এক কর্তা জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরে মুর্শিদাবাদের ওই শ্রমিকেরা ওড়িশায় কাজ করছেন। আগে থেকেই হামলাকারীদের সঙ্গে তাঁদের পরিচয় ছিল। তাঁদের মধ্যে আগে কোনও ঝামেলা হয়েছিল কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে ধৃত ছ’জন ছাড়া আর কেউ জড়িত ছিলেন কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement