university

University: বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম করে টাকা চাওয়ার নালিশ

বেসরকারি ওই কলেজগুলির কাছে টাকা চাওয়ার অভিযোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত ও শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২২ ০৭:৩১
Share:

প্রতীকী ছবি

রাজ্যের বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের (দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অব টিচার্স ট্রেনিং এডুকেশন প্ল্যানিং এন্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) অধীনস্থ বিএড কলেজগুলিকে তাদের অ্যাফিলিয়েশন (অধিভুক্তি) বছর বছর পুনর্নবীকরণ করতে হয়। সেই জন্য ফোন করে কলেজগুলির কাছে বাড়তি দু’লক্ষ টাকা চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিএড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি তৈরি করলেন।

Advertisement

বেসরকারি ওই কলেজগুলির কাছে টাকা চাওয়ার অভিযোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি। নিয়ম মতো অ্যাফিলিয়েশন পুনর্নবীকরণ এর জন্য এক লক্ষ টাকা দিতে হয়। অভিযোগ, এর সঙ্গে অতিরিক্ত দু'লক্ষ টাকা নাকি নগদে চাওয়া হচ্ছে। একটি অডিয়ো ক্লিপে (যার সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি) শোনা যাচ্ছে, এই বিষয়ের জন্য যাদবপুরের একটি ঠিকানায় যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই ধরনের অভিযোগের চিঠি তাঁর কাছেও এসেছে। উত্তর কলকাতার যে ঠিকানা থেকে ওই চিঠি এসেছিল, সেই ঠিকানায় রেজিস্টার্ড ডাকযোগে চিঠি পাঠিয়ে তিনি সব কিছু খুঁটিয়ে জানতে চেয়েছেন। কিন্তু ডাকঘর থেকে জানানো হয়েছে, উত্তর কলকাতায় ওই ঠিকানা আদৌ নেই। প্রেরক ব্যক্তিকেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। উপাচার্য বলেন, "অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনা করে ইতিমধ্যেই একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইটে এই ধরনের প্রচার থেকে সতর্ক থাকতে বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে।"

Advertisement

যে টাকা কলেজগুলি বিশ্ববিদ্যালয়কে দেয়, তা একটি নির্দিষ্ট লিঙ্কের মাধ্যমে অনলাইনে দিতে হয়। এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যে লিঙ্ক বিশ্ববিদ্যালয় পাঠিয়েছে তা ছাড়া অন্য কোথাও যেন কলেজগুলি একটি টাকাও না দেয়।

রাজ্য জুড়ে ৬২৪টি বিএড কলেজ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। বছর পাঁচেক আগেও বহু বেসরকারি বিএড কলেজের বিরুদ্ধে পরিকাঠামো, পরিচালন পদ্ধতি নিয়ে অভিযোগ উঠত। এ বার পুনর্নবীকরণ এর বিষয় নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। উপাচার্য জানান, পুরো বিষয়টাই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে তিনি জানিয়েছেন।

তবে অভিযোগকারীদের তরফে বীরভূমের ময়ূরেশ্বরের একটি বিএড কলেজের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বলেন, "সরকারি বরাদ্দ অর্থ জমা দেওয়ার পরেও হোয়াটসঅ্যাপ কলে ফোন করে অতিরিক্ত টাকা দিতে বলা হচ্ছে। যাঁরা অতিরিক্ত টাকা দিচ্ছেন, তাঁদের পুনর্নবীকরণ হচ্ছে। যাঁরা দিতে পারছেন না, তাঁদের হচ্ছে না।“ তাঁর অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে যাদবপুরে একটি অফিসে গিয়ে দেখা করার জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ফোন করেও বলা হচ্ছে। তা ছাড়া এই ধরনের সাধারণ ফোনের একাধিক ভয়েস রেকর্ডিং বিভিন্ন অভিযোগকারীর কাছে রয়েছে।

এই পরিস্থিতির ভুক্তভোগী প্রাক্তন শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী তথা মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের বিধায়ক জাকির হোসেন। তিনি একাধিক বেসরকারি বিএড কলেজের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, "এ বছর থেকে একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। গত দু'বছরে করোনা জনিত কারণে বিএড কলেজগুলি লোকসানে চলছে। এমন অবস্থায় এ রকম ঘটনায় পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হচ্ছে। আমি সংশ্লিষ্ট দফতরে সব জানিয়েছি। কিন্তু কী প্রতিকার হবে, তা বুঝতে পারছি না।"

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন