উপনির্বাচনে কংগ্রেস লড়বে দুই, সিপিএম একটিতে

কংগ্রেস বিধায়ক প্রমথনাথ রায়ের মৃত্যুতে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা আসন এখন শূন্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৯ ০২:০৫
Share:

—প্রতীকী ছবি।

আনুষ্ঠানিক ভাবে দু’দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠক এখনও হয়নি। কিন্তু লোকসভা ভোটের সময়কার ‘ভুল’ থেকে শিক্ষা নিয়ে সমঝোতার কৌশল প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলল সিপিএম ও কংগ্রেস। বিধানসভার তিনটি কেন্দ্রের উপনির্বাচনেই জোট বেঁধে ময়দানে নামতে চলেছে তারা। রফায় ঠিক হয়েছে, তিনটির মধ্যে দু’টি আসনে লড়বে কংগ্রেস, অন্যটিতে সিপিএম। নির্বাচন কমিশন উপনির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার আগেই প্রার্থী বাছাইয়ের প্রাথমিক প্রক্রিয়াও এগিয়ে রাখা হচ্ছে।

Advertisement

কংগ্রেস বিধায়ক প্রমথনাথ রায়ের মৃত্যুতে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা আসন এখন শূন্য। বিজেপির দিলীপ ঘোষ এবং তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র লোকসভা ভোটে জিতে সাংসদ হয়ে যাওয়ায় তাঁদের ছেড়ে যাওয়া বিধানসভা কেন্দ্র খড়গপুর সদর ও করিমপুরে উপনির্বাচন করতে হবে। সূত্রের খবর, কালিয়াগঞ্জ ও খড়গপুর সদর কংগ্রেসকে ছেড়ে করিমপুরে সিপিএম প্রার্থী দেবে— এমন রফাসূত্র তৈরি হয়েছে। কালিয়াগঞ্জ ছিল কংগ্রেসেরই দখলে, আর খড়গপুর সদরে দীর্ঘ দিনের বিধায়ক ছিলেন কংগ্রেসের প্রয়াত নেতা জ্ঞানসিংহ সোহনপাল (চাচা)। তাঁকে ২০১৬ সালে হারিয়ে বিধায়ক হয়েছিলেন বিজেপির দিলীপবাবু। প্রদেশ কংগ্রেস ও রাজ্য সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব দফায় দফায় কথা বলে এই সূত্রই তৈরি করেছেন। তবে উপনির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারির আগে দু’দলের নেতারা এই নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও ঘোষণায় যাচ্ছেন না।

পশ্চিম মেদিনীপুর ও উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস দুই জেলার দুই আসনের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামও প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। সিপিএম করিমপুরের প্রার্থী ঠিক করার জন্য নদিয়া জেলা কমিটির প্রস্তাবের অপেক্ষায়। করিমপুরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সমরেন্দ্রনাথ ঘোষকে নদিয়া জেলা নেতৃত্ব বহিষ্কার করার পরে তিনি সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এ বার তাই আরও মেপে পা ফেলতে চাইছে সিপিএম।

Advertisement

সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে কালিয়াগঞ্জ ও খড়গপুর সদর বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। আবার করিমপুরে এগিয়ে তৃণমূল। তাই ‘জোট’ করে এগোলেও লড়াই যে খুব কঠিন, তা বুঝতে পারছেন কংগ্রেস ও সিপিএম নেতৃত্ব। তাঁদের মত, আসন সমঝোতায় রাতারাতি ‘ম্যাজিক’ পাওয়া যাবে না। কিন্তু ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের জন্য এই রাস্তা ধরেই এগোতে হবে। তা ছাড়া, লোকসভা ভোটে রাজ্যে যে তীব্র মেরুকরণের বাতাবরণ ছিল, তা এখনও কতটা প্রবল, তারও একটা আভাস মিলতে পারে উপনির্বাচনে।

প্রদেশ কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, ‘‘লোকসভা ভোটে দু’পক্ষের জেদাজেদির জেরে ভুল হয়েছিল। তার ফায়দা বিজেপি পেয়েছে। এখন রাস্তায় নেমে যৌথ আন্দোলনের মঞ্চ তৈরি করে মানুষের সামনে বিকল্প দিতে হবে। সেই বিকল্পের তরফেই ভোটে লড়তে হবে।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘বিজেপি এবং তৃণমূলের মোকাবিলার পথ গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ বিকল্পই। এই নিয়ে আর কোনও বিতর্কের অবকাশ নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন