Congress

প্রতারিতদের টাকা ফেরত কবে, পথে প্রশ্ন কংগ্রেসের

বিধান ভবন থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত এ দিনের মিছিলে কেলেঙ্কারির নায়ক এবং দুই সরকারের প্রতীক হিসেবে দু’টি ঢাউস কুশপুতুল নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৫২
Share:

বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা কাণ্ডে সুবিচারের দাবিতে মিছিল কংগ্রেসের। নিজস্ব চিত্র।

ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থায় প্রতারিতদের টাকা ফেরত ও অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে পথে নেমে বিজেপি ও তৃণমূল, দুই শাসক দলকেই হুঁশিয়ারি দিল বিরোধী কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, কেলেঙ্কারির তদন্ত শেষ করতে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও তৎপরতা নেই। বরং, অভিযুক্ত নেতাদের কেউ কেউ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখাচ্ছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তৃণমূলও কোনও পদক্ষেপ করেনি, জনতার আদালতেই তাদের বিচার হবে বলে কংগ্রেসের দাবি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে শুক্রবারের মিছিলে ভিড় হয়েছিল চোখে পড়ার মতো।

Advertisement

বিধান ভবন থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত এ দিনের মিছিলে কেলেঙ্কারির নায়ক এবং দুই সরকারের প্রতীক হিসেবে দু’টি ঢাউস কুশপুতুল নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যা পোড়ানো হয় ধর্মতলার মোড়ে। সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, প্রাক্তন বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়, শুভঙ্কর সরকার, অমিতাভ চক্রবর্তী, সন্তোষ পাঠক, কৃষ্ণা দেবনাথ, প্রদীপ প্রসাদ, সুব্রতা দত্ত-সহ প্রদেশ ও জেলা স্তরের বহু কংগ্রেস নেতা-নেত্রীই ছিলেন মিছিলে। বেশ কিছু লোকজন নিয়ে এসেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি মহম্মদ মোক্তার। মিছিল শেষে বেশ কিছু ক্ষণ ধর্মতলার মোড় অবরুদ্ধ করে রাখেন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা। রাস্তায় ম্যাটাডোর-মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করেন অধীরবাবু। পরে রাজভবনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে দাবি জানাতে যান অধীরবাবু, প্রদীপবাবুরা।

অধীরবাবু বলেন, কারা ‘চোর’ আর কারা ‘বিশ্বাসঘাতক’— এই নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের তরজা চলছে। মানুষের সমস্যার কথা আলোচনায় আসছে না। কেন্দ্রীয় সরকারকে বিঁধে তাঁর বক্তব্য, ‘‘নরেন্দ্র মোদী কর্পোরেটকে কর ছাড় দেন, শিল্পপতিদের ঋণ মকুব করেন। চিট ফান্ডের জন্য যাঁরা সর্বস্বান্ত হলেন, তাঁদের জন্য ক্ষতিপূরণের প্যাকেজ কবে হবে? কেলেঙ্কারির তদন্ত কবে শেষ হবে, বাংলার মানুষ জানতে চান।’’ একই ভাবে রাজ্য সরকারের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘ভোটের আগে প্রায় রোজ সকালে উঠে দিদি নতুন নতুন প্রকল্প ঘোষণা করছেন। চিট ফান্ড শিল্প আপনার আমলে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। যাঁরা প্রতারিত, তাঁরাও তো নাগরিক! তাঁরা কবে টাকা ফেরত পাবেন? শ্যামল সেন কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ করা হল না কেন?’’

Advertisement

সম্প্রতি জেল থেকে লেখা সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেনের চিঠির কথা প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে অধীরবাবুকে তিনি ৬ কোটি টাকা দিয়েছেন। সেই চিঠিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে ভরা সভায় এ দিন অধীরবাবু বলেছেন, ‘‘৬ কোটি কেন, অন্যায় ভাবে ৬ পয়সা নিয়েছি বলেও যদি কেউ প্রমাণ করতে পারেন, শহিদ মিনার থেকে ঝাঁপ দেব!’’ কলঙ্কিত তৃণমূল ও বিজেপিকে ঠেকিয়ে বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট নবান্নে সরকার গড়বে বলেও দাবি করেছেন অধীরবাবু।

পরে রাজ্যপালের কাছে গিয়ে প্রদীপবাবু বলেন, আব্দুল মান্নান ও বিকাশ ভট্টাচার্যের আইনি লড়াইয়ের ফলেই সিবিআই তদন্তে নেমেছিল। কিন্তু সেই তদন্ত এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। তাঁর দাবি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলবেন বলে রাজ্যপাল আশ্বাস দিয়েছেন। বাংলায় সুষ্ঠু ও অবাধ ভোটের জন্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার দাবিও করেছেন প্রদীপবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন