ফাইল চিত্র
করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় এ বার জেলা স্বাস্থ্য দফতর এবং জেলা প্রশাসনের কাছে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে পঞ্জাব থেকে আসা
এক যুবক।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১ এপ্রিল গম কাটার যন্ত্র চালানোর জন্য পঞ্জাবের দুই যুবক মুরারই থানার রতনপুর গ্রামে যান। তাঁদের মধ্যে এক যুবক কাজ করতে গিয়ে মাঠে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওই যুবককে মুরারই ১ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার পরে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আছে সন্দেহে রাখা রোগীদের জন্য খোলা
আইসোলোশেন বিভাগে বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে রাখা হয়। শুক্রবার ওই যুবকের লালারস পরীক্ষা করার জন্য কলকাতার বেলেঘাটায় নাইসেডে পাঠানো হয়। নাইসেড থেকে এখনও রিপোর্ট এসে পৌঁছয়নি বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক সমীরকুমার সিংহ বলেন, ‘‘ওই যুবক মুরারইয়ে আসার আগে শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতায় বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ
হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখান থেকে ছাড়া পেয়েই মুরারইয়ে কাজ করতে চলে আসেন এবং ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। জ্বর, সর্দি, কাশি নানা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। নাইসেডের রিপোর্ট এলেই বোঝা যাবে কী হয়েছে।’’
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবকের সঙ্গে থাকা পঞ্জাবের আর এক যুবককে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সাধারণ বিভাগে ভর্তি করানো হয়েছে। মুরারই ১ ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক বলাই রায় বলেন, ‘‘যুবকটি যে বাড়িতে উঠেছিল সেই বাড়ির সদস্যদের সকলকে হোম কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে।’’ যেহেতু পঞ্জাব থেকে দু’জন মুর্শিদাবাদ হয়ে বীরভূমে এসেছেন তাই তাঁদের আসার পথে কবে কোথায় থেকেছেন সেই বিষয়েও প্রশাসন খোঁজ খবর শুরু করেছে।
এর আগে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ সন্দেহে সৌদি আরব থেকে আসা ময়ূরেশ্বর থানার এক যুবকের লালারস পরীক্ষা করার জন্য পাঠানো হয়। নাইসেডে ওই যুবকের দু’টি রিপোর্টে করোনা সংক্রমণ নেগেটিভ পাওয়া যায়। চারদিন পর্যবেক্ষনে রাখার পরে ওই যুবককে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ দিকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অন্যান্য রোগীর চাপ থাকায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে এমন সন্দেহভাজন রোগীদের পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা এবং লালারস পরীক্ষা করার জন্য তারাপীঠ যাওয়ার পথে একটি লজে আইসোলোশন ওয়ার্ড তৈরি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। সেখানে পুরুষদের জন্য ৩৭টি শয্যা এবং মহিলাদের জন্য ১১টি শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের ভেন্টিলেশন পরিষেবার জন্য টেকনিশিয়ানদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শনি এবং রবিবার দু’দিনের কর্মশালায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।