বড়মা হাসপাতালে হু-র প্রতিনিধি। ফাইল চিত্র।
তিন জেলা— পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ ছিল পাঁশকুড়ার বড়মা হাসপাতাল। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল একাধিক করোনা আক্রান্তের। তাঁরা সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরছিলেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুসারে ওই হাসপাতালে আর কোনও করোনা আক্রান্ত নেই। পাশাপাশি, করোনা সংক্রমণের লেভেল ৪-এর চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে এই মুহূর্তে 'হোমওয়ার্কে' ব্যস্ত জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা। দ্রুত গতিতে চলছে অন্য সন্দেহভাজনদের নমুনা সংগ্রহের কাজ।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মেচগ্রামে করোনা হাসপাতাল চালুর আগে পূর্ব মেদিনীপুরের বেশ কয়েকজনকে কলকাতায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছিল। বড়মা মাল্টি স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে জেলার ১৪ জন আক্রান্তকে ভর্তি করানো হয়েছিল বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। আগেই করোনা মুক্ত হওয়ায় ১০ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয় বড়মা হাসপাতাল থেকে। বাকি চারজনের দু'বারের করোনা পরীক্ষা রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় এ দিন তাঁদেরও হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে বড়মা হাসপাতালে আর কোনও করোনা আক্রান্ত ভর্তি নেই।’’
সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-র এক প্রতিনিধি বড়মা হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন। প্রতিনিধির পরামর্শ মতো এই মুহূর্তে বড়মা হাসপাতালে করোনা সংক্রমণের লেভেল ৪-এর চিকিৎসা পরিষেবার উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ চলছে।
ঠিক কী ধরনের প্রস্তুতি চলছে এই মুহূর্তে? জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, লেভেল-৪ এর সক্রমিত রোগীর জন্য বড়মা হাসপাতালে বসানো হয়েছে দু'টি ডায়লিসিস ইউনিট। বড়মায় ছ’টি ভেন্টিলেটর রয়েছে। অদূরে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে রয়েছে আরও ছ’টি ভেন্টিলেটর। প্রয়োজনে সেগুলি আনা হবে। বড়মায় পোর্টেবল এক্স-রে মেশিন আনা হয়েছে। এখানে রয়েছে ২২টি আইসিইউ। শয্যা রয়েছে ২২০টি।
যেহেতু এই মুহূর্তে বড়মায় কোনও করোনা আক্রান্ত নেই, তাই স্বাস্থ্য কর্মীদের নিয়ে লেভেল ৪-এর করোনা চিকিৎসার খুঁটিনাটি পরীক্ষা করে দেখে নেওয়ার কাজ চলছে। পাশাপাশি, সন্দেহভাজনদের লালারসের নমুনা সংগ্রহের কাজও হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, জেলায় মোট ৩৩৯ টি করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ২২টি পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও এসে পৌঁছয়নি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘যুদ্ধের আগে যেমন প্রস্তুতি চলে, সেরকম আমরা এই সময় লেভেল-৪ এর চিকিৎসার সমস্ত আয়োজন সেরে রাখছি। এই মুহূর্তে জেলায় নতুন করে করোনা সংক্রমণের খবর নেই।’’