গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রোজই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে রাজ্যে। শুক্রবারও সেই ছবির কোনও ব্যতিক্রম হল না। তবে বৃহস্পতিবারের তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কম এ দিন। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২ হাজার ৯১২ জন। যেখানে বৃহস্পতিবার এই সংখ্যাটা ছিল ২ হাজার ৯৫৪ জন। রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এই মুহূর্তে ৮৯ হাজার ৬৬৬।
আক্রান্তের পাশাপাশি মৃতের সংখ্যাও কিছুটা কমেছে। বৃহস্পতিবার ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এ দিন সেই সংখ্যা কিছুটা কমে হয়েছে ৫২। ফলে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৯৫৪। মৃতের সংখ্যার দিক থেকে রাজ্যে প্রথম স্থানেই রয়েছে কলকাতা, তার পর উত্তর ২৪ পরগনা।
প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড-টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যক রোগীর কোভিড-রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই বলা হয় পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ২৫ হাজার ২৫৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
এ দিনের রিপোর্ট অনুযায়ী করোনা সংক্রমণের হারও কিছুটা স্বস্তিদায়ক। এ দিন সংক্রমণের হার ১১.৫৩ শতাংশ। বৃহস্পতিবারে যা ছিল ১১.৭১ শতাংশ। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত কোভিড পরীক্ষা হয়েছে ১০ লক্ষ ৫৪ হাজার ৫০৯টি। তবে রাজ্যে করোনার উদ্বেগজনক পরিস্থিতির মধ্যেও আশার আলো দেখাচ্ছে সুস্থতার হার। প্রায় ৯০ হাজার করোনা রোগীর মধ্যে ইতিমধ্যেই ৬৩ হাজার ৬০ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। রাজ্যে সুস্থতার হার ৭০.৩৩ শতাংশ।
সংক্রমণ এবং মৃত্যু— দুটি ক্ষেত্রেই প্রথম থেকেই ঊর্ধ্বমুখী কলকাতার গ্রাফ। শুক্রবার কলকাতায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬৭৫ জন। রাজ্যে ৫২ জন মৃতের মধ্যে ২০ জনই কলকাতার বাসিন্দা। এই নিয়ে কলকাতায় মোট ৯০৭ জনের মৃত্যু হল।
নতুন সংক্রমণের নিরিখে পিছিয়ে নেই উত্তর ২৪ পরগনাও। এ দিন সেখানে ৫৭৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। এই নিয়ে ওই জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪৪। অন্য দিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এ দিন নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ২০২। মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। তবে হাওড়া ও হুগলিতে বৃহস্পতিবারের তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। ওই দুই জেলায় এ দিন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন যথাক্রমে ২১৩ ও ২৩৯ জন। বৃহস্পতিবার যা ছিল ১৯৫ ও ১২৫।
পশ্চিম বর্ধমানে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৫৯। পূর্ব মেদিনীপুরে ১০৯, পূর্ব বর্ধমানে ৮১, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৬৪ জন নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। এ ছাড়া দক্ষিণ দিনাজপুরে ৩৭, দার্জিলিঙে ৮৩, কোচবিহারে ৯৮, জলপাইগুড়িতে ১৭, উত্তর দিনাজপুরে ৩৮ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। এর মধ্যে দার্জিলিঙে এক জনের মৃত্যু হয়েছে।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)