Coronavirus in West Bengal

করোনা-আবহে এ বার জাঁকজমকহীন বারাসত-নৈহাটির কালীপুজো

বারাসত এবং নৈহাটিতে প্রতি বছরই কালীপুজোর সময় বিপুল ভিড় হয়। স্থানীয়রা ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উৎসাহীদের জমায়েত হয়। তবে এ বার সে ছবিটায় বদল ঘটতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বারাসত শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২০ ১৯:৫৫
Share:

আড়ম্বরহীন হলেও কালী পুজোর প্রস্তুতি শুরু উত্তর ২৪ পরগনায়। —নিজস্ব চিত্র।

করোনা থাবা বসিয়েছিল দুর্গাপুজোয়। এ বার অতিমারির কোপে ভাটা পড়েছে কালীপুজো উদ্‌যাপনেও। উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত এবং নৈহাটিতে বহু পুজোই এ বার জাঁকজমকহীন ভাবে হবে। আলোর রোশনাই হয়তো থাকবে, কিন্তু আগের বছরগুলির মতো নয়। বহু পুজোর বাজেটও কমিয়ে ফেলেছেন উদ্যোক্তারা। আসন্ন কালীপুজোয় উৎসবের আবহ থাকলেও তার দখল নিয়েছে করোনা নিয়ে সচেতনতা প্রচার।

Advertisement

বারাসত এবং নৈহাটিতে প্রতি বছরই কালীপুজোর সময় বিপুল ভিড় হয়। স্থানীয়রা ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উৎসাহীদের জমায়েত হয়। তবে এ বার সে ছবিটায় বদল ঘটতে পারে। করোনা সচেতনতার জন্য সমস্ত পুজো কমিটিকে নিয়ে আলাদা বৈঠক করে ভিড় এড়ানোর সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বারসাত পুলিশ জেলার সুপার অভিজিৎ বন্দোপাধ্যায়। পুজো কমিটিগুলিও সে নির্দেশ মেনে চলার প্রচেষ্টা শুরু করে দিয়েছে।

বারাসতের বড়সড় পুজোর মধ্যে কেএনসি রেজিমেন্ট। তবে এ বার সেখানে তেমন জাঁকজমক নেই। বড় বাজেট ছেঁটে পড়ুয়াদের বইপত্র দান বা অতিমারিতে যাঁরা সামনের সারিতে থেকে লড়ছেন, তাঁদের সংবর্ধনা দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন কেএনসি-র উদ্যোক্তারা। কালীপুজোও করা হবে সাধারণ নাটমন্দির তৈরি করে। তবে প্রতি বারের মতো এ বারও দক্ষিণেশ্বরের পুরোহিত পুজোর ভার সামলাবেন। ক্লাবের সম্পাদক অশনি মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বড় মণ্ডপের কারুকার্য, আলোর রোশনাই অথবা কৃষ্ণনগর থেকে প্রতিমা আনা— এ সব কিছুই করা হবে না এ বার।

Advertisement

জাঁকজমকহীন হলেও চলছে কালী পুজোর মণ্ডপ তৈরির কাজ। —নিজস্ব চিত্র।

কেএনসি-র মতোই পুজোর বাজেট কমিয়েছে বারাসতের পায়োনিয়র অ্যাথলেটিক ক্লাব। সম্প্রতি জেলায় প্রশাসনিক নির্দেশের পর ক্লাব কর্তারাও জমায়েত এড়িয়ে জাঁকজমকহীন পুজো আয়োজনে মন দিয়েছেন। ফলে বড়সড় মণ্ডপের বদলে পুরোপুরি বাড়ির পরিবেশে পুজো করা হবে বলে স্থির করেছেন এই ক্লাব কর্তারা। পুজো ঘিরে প্রতি বার যে মেলা বসে, তা-ও এ বার বাতিল করা হয়েছে। ক্লাবের সম্পাদক শম্ভু দাস বলেন, “রাজ্যে করোনা-সংক্রমণের গোড়ার থেকেই আমাদের ক্লাব বিভিন্ন ভাবে কাজ করছে। পুজোর মধ্যেও করোনা সচেতনতার প্রসারে কাজ করা হবে।” তিনি আরও বলেন, “কালীপুজো হলেও, তা ঘিরে কোন রকম ভাবেই ভিড় হতে দেব না।”

আরও পড়ুন: বুধবার থেকে ট্রেন বাড়াচ্ছে মেট্রোও, অফিস টাইমে ৭ মিনিট অন্তর চলবে

আরও পড়ুন: চিন্তা ভিড় নিয়েই, ৪৫ শতাংশ লোকাল ট্রেন চালানোর প্রস্তুতি রেলের

শহরের নামকরা বড় পুজোর ‘সন্ধানী’র মণ্ডপের উচ্চতা প্রতি বারই প্রায় ৮০ ফুট ছাড়িয়ে যায়। তবে এ বার তা ৪০ ফুট করা হয়েছে। সেই সঙ্গে অন্য পুজো কমিটিগুলোর পথে হেঁটে বাজেটও ৯০ শতাংশ কমিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে চমক রয়েছে পুজোর উদ্বোধনে। ‘সন্ধানী’র সম্পাদক প্রেমা রায় জানিয়েছেন, চলতি বছরে করোনার থেকে সুস্থ হয়ে উঠা মানুষেরাই পুজো উদ্বোধন করবেন।

বারাসতের সঙ্গে কালীপুজো নিয়ে জোর টক্কর চলে জেলার আরও এক শহর নৈহাটিতে। তবে অতিমারির পরিস্থিতিতে শহরের বহু পুজো বন্ধ থাকবে। নৈহাটির নিউ স্টার ক্লাবের কর্মকর্তা সনৎ দে বলেন, “কালীপুজো বন্ধ করে সামজিক কাজ করা হবে। অনেক ক্লাবই এমনটা করছে।”

বাজেটে কাটছাঁট হলেও বড় কালীপুজো সমিতির পুজোর প্রতিমা প্রতি বারের মতো এ বারেও ২১ ফুট ১৪ হাত করা হচ্ছে। যদিও ৪ হাজার কেজি ভোগের পরিমাণ কমিয়ে ৫০০ কেজি করা হবে বলে জানিয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা। সেই সঙ্গে আরও একটি উদ্যোগ নিয়েছেন এই পুজোর কর্তারা। করোনা-পরিস্থিতিতে অঞ্জলির সময় যাতে ভিড় না হয়, সে দিকে খেয়াল রেখেছেন তাঁরা। প্রতি বছরের মতো ১০ দফা অঞ্জলির বদলে এ বার তা হবে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বন্ধ রাখা হয়েছে দণ্ডিকাটাও। বড় কালীপুজো সমিতির সম্পাদক তাপস ভট্টাচার্য বলেন, “এ বারের পুজো শুধু মানুষের পাশে দাঁড়ানো।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন